Sikkim landslide: উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি! বিপর্যস্ত সিকিমে আটকে যোগাযোগ ব্যবস্থা
উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছে বর্ষা। প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে সিকিমে। যার জেরে ভয়ানক অবস্থা। প্রবল বৃষ্টিতে ভেসেছে পাহাড়ি রাস্তা। এমনকি রাস্তাগুলিতেও পাহাড়ি ঝর্ণা বেয়ে যেভাবে জল পড়ছে তাতে যাতায়াত করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। সূত্রের খবর, ঘুরতে গিয়ে সেখানে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক।
বৃহস্পতিবার রাতে সিকিমের চুংথাংয়ের কাছে পেগংয়ে বিশাল ধস নামে। ধসের মাঝে আটকে পড়েছে গাড়ি। লাচুং, লাচেন ও ইয়ুমথাংয়ের সঙ্গে সিকিমের অন্যান্য এলাকার যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক থেকে ধস সরিয়ে যাতায়াত স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চলছে। শুক্রবার নর্থ সিকিমে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের পারমিট দেওয়া হয়নি।
বিশেষ করে উত্তর সিকিমের মংগন থেকে লাচুন, ইয়াংথাং যাওয়ার রাস্তায় টুং-য়ে ব্যাপক ধস পড়ে। পাহাড়ের ধস রাস্তায় নেমে আটকে পড়ে বহু গাড়ি৷ ফলে গ্যাংটক থেকে নর্থ সিকিমের যোগাযোগ ব্যাবস্থা প্রায় বন্ধ। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বহু পর্যটককে উত্তর সিকিম যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়৷ কাজেই আশঙ্কা রয়েছে বহু পর্যটক ধসের জেরে আটকে রয়েছে উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকায়।
হিমালয়ান হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্টের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, "উত্তর সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ। বিভিন্ন এলাকা ধসের কবলে। আমরা খোঁজ নিচ্ছি পর্যটকদের কী পরিস্থিতি বা কোথায় কতজন পর্যটক আটকে।"
অন্যদিকে সিকিম আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর ডক্টর গোপীনাথ রাহা জানান , "উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকা ধসে বিপর্যস্ত৷ ছোট বড় ধসের খবর রয়েছে। আগামী পাঁচ দিন পরিস্থিতি খুব একটা স্বাভাবিক হবে না। এমনভাবেই বৃষ্টিপাত চলছে৷ বিশেষ করে উত্তর সিকিমে অতিভারি বৃষ্টিপাত হবে। উত্তরবঙ্গেও ভারি থেকে অতিভারী বর্ষা রয়েছে৷ বর্ষা প্রবেশ করেছে উত্তরবঙ্গ সহ সিকিমে।
উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন সিকিম জুড়ে বাতাসের উপরিভাগে একটা নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে, যা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত রয়েছে৷ তারই প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে এই অঞ্চলে জলীয় বাষ্প ঢুকছে৷ উত্তর সিকিমে কমলা সতর্কতা ও উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় কমলা ও হলুদ সতর্কতা জারি করা রয়েছে৷ বিশেষ করে জলপাইগুড়ি , আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত রয়েছে৷"
অন্যদিকে সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর সিকিমে ধস সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। তবে পর্যটকরা আটকে রয়েছে কি না তার তেমন কোন তথ্য নেই। এদিকে কালিম্পংয়ে রাতভর টানা বৃষ্টির হওয়ায় তিস্তা ও রংফু নদীর জলস্তর আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই নদীগুলিতে লাল সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। রাতভরের টানা বৃষ্টির জেরে পাহাড়ের নদীর জলস্তর আকস্মিক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে একাধিক জায়গায় ফের ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার ফলে একদিকে যেমন উদ্বেগে জেলা প্রশাসন, পাশাপাশি আতঙ্কে দিন কাটছে পাহাড়ের একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের।
কালিম্পংয়ের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, "তিস্তা সহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ের নদীর জলস্তর কাল রাত থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কাজনক এলাকা থেকে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।" তিস্তায় কর্মরত এক শ্রমিক রাজু সাহা বলেন, "ভোর বেলা থেকে আচমকা জলের স্তর বেড়েছে। সব কাজ বন্ধ রয়েছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।" স্থানীয় ব্যবসায়ী সমরেশ দাস বলেন, "জল যেভাবে বাড়ছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।"