শিক্ষায় ফিরলেন ব্রাত্য, শিল্পে Partha, পরিবহণে ফিরহাদ, রথীনের হাতে জ্যোতিপ্রিয়র খাদ্য
নিজস্ব প্রতিবেদন: মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামলাবেন স্বাস্থ্য, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, শরণার্থী, পুনর্বাসন, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন। এর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব গৌতম দেব ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথ এবার পরাজিত হয়েছেন।
শিল্প ও উদ্যোগ, তথ্য-প্রযুক্তি, পরিষদীয়মন্ত্রী হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১১ সালে শিল্প দফতর দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরে পার্থকে সরিয়ে ওই দফতর দেওয়া হয় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে। শিক্ষামন্ত্রী হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
২০১১ সাল থেকে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর দফতরের কাজ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আবারও ওই পঞ্চায়েতমন্ত্রী হলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক।
অসুস্থ থাকায় ভোটে প্রার্থী হননি অমিত মিত্র। বিগত সরকারের ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলাদের মাসিক সাহায্য, বিনামূল্যে রাজ্যবাসীকে ভ্যাকসিন, দুয়ারে রেশন ইত্যাদি জনমুখী প্রকল্পে বাস্তবায়নে দরকার অর্থ। তার সংস্থানে অর্থ দফতরের অমিত মিত্রের মতো দক্ষ অর্থনীতিবিদকে চাইছেন মমতা। অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা ও সংখ্যাতত্ত্বের দায়িত্ব দেওয়া হল অমিত মিত্রকে।
পরিবহণ দফতর ছিল শুভেন্দু অধিকারীর হাতে। তিনি ইস্তফা দেওয়ার পর ফাঁকাই ছিল। কোভিড পরিস্থিতি ও পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় ধুঁকছে পরিবহণ শিল্প। আগামী দিনে আরও কঠিন অবস্থা হতে চলেছে। তা আঁচ করেই বিশ্বস্ত ফিরহাদ হাকিমকে পরিবহণ দফতর দিলেন মমতা। একইসঙ্গে আবাসনের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শুরুর দিকে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য বসু। সেই দায়িত্বে ফিরলেন তিনি।
বাড়ির মহিলাদের মাসে ৫০০ ও ১০০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো প্রকল্প জনমানসে তৃণমূল সরকারের প্রতি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছে। তার সুফল ভোটে পেয়েছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, এটা নারীশক্তির জয়। নারী ও শিশুকল্যাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর ফের পেলেন শশী পাঁজা।
প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
গতবার বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী ছিলেন জাভেদ খান। এবারও তাঁর দফতর একই থাকল।
সেচ ও জলপথ পরিবহণ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
আগেরবার ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। এবার কৃষি দফতরের দায়িত্বে বর্ষীয়ান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
এবার পূর্ণমন্ত্রী হলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। গণশিক্ষা বিস্তার ও পাঠাগার দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
দীর্ঘদিনের বিধায়ক সাধন পাণ্ডে। মাঝে মধ্যে দলের বিরুদ্ধে বেসুরোও বেজেছেন। তবে সে সব আজ। উপভোক্তা বিষয়ক দফতেরই ফিরলেন সাধন।
দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। খাদ্য দফতর হাতছাড়া হল জ্যোতিপ্রিয়র। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন রথীন ঘোষ।
প্রথমবার মন্ত্রিসভায় এলেন পুলক রায়। তাঁকে দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর।
রাজ্যের সংখ্যালঘুমন্ত্রী হলেন মহম্মদ গোলাম রব্বানি। ভোট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের অধিকাংশ সংখ্যালঘুই ভরসা রেখেছেন মমতার নেতৃত্বে। সে কারণে উত্তরবঙ্গের অভিজ্ঞ নেতা গোলাম রব্বানিকে সংখ্যালঘুর মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হল।
২০১১ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন মানস ভুঁইয়া। কংগ্রেস সমর্থন প্রত্যাহারের পর ইস্তফা দেন তিনি। এর মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। মন্ত্রিসভায় প্রত্যাবর্তন করলেন মানস। জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী করা হয়েছে তাঁকে।
আসানসোলে মতো প্রতিকূল জায়গায় থেকে এবারও জিতেছেন। আইন ও বিচারমন্ত্রী হলেন মলয় ঘটক।
বিগত সরকারে বনমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই দায়িত্ব পেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
ছোট ও মাঝারি শিল্পে ভারতের অন্যতম সেরা রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। সেই ধারা বজায় রাখতে চাইছেন মমতা। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী হলেন চন্দ্রনাথ সিনহা।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী করা হল বিপ্লব মিত্রকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি আসনের মধ্যে ৩০টি পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সুন্দরবন অঞ্চলেও দাপট শাসক দলের। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী করা হল বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাকে।
হাওড়ায় ভোটের ঠিক আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সক্রিয় রাজনীতি ছাড়েন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। সেই পরিস্থিতিতে হাওড়ায় তৃণমূলের মুখ বলতে ছিলেন অরূপ রায়। আরও একবার তাঁকে মন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি হলেন সমবায়মন্ত্রী।
বিদ্যুৎমন্ত্রী হলেন অরূপ বিশ্বাস। বিগত সরকারে আবাসন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।