কে এই বাবু মাস্টার?
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাবু মাস্টারের পুরো নাম ফিরোজ কামাল বাবু মাস্টার। বয়স ৫০। ডাক নাম বাবু। দ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির জার্সি গায়ে তোলেন ১৯ ডিসেম্বর।
হাসনাবাদ মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তিনি। বাম জামানায় দোর্দণ্ডপ্রতাপ এক নেতার ডানহাত ছিলেন।
তাঁকে ভোটে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকত বাবু মাস্টারের। হাসনাবাদের ভবানীপুর এলাকায়প্রবল প্রতাপ ছিল তাঁর।
বাম জমানায় ভেড়ি দখলসহ তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে। এলাকার ইটভাঁটাগুলোয় ছিল তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্য। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কো-অর্ডিনেটর কমিটিক সদস্যও ছিলেন।
২০১১-য় পালাবদলের পর তৃণমূলে নাম লেখান। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূলে বাবুর জমানা শুরু।
একসময় উত্তর ২৪ পরগনার জেলা ক্রীড়া কর্মাদক্ষ ছিলেন। হাসনাবাদ ব্লকের পর্যবেক্ষকও ছিলেন। বসিরহাট লোকসভার আহ্বায়কও ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলার কো-অর্ডিনেটর কমিটির সদস্যও ছিলেন
সরকারি বা লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কিন্তু কেন বাবু মাস্টারকে হত্যা করার চেষ্টা করা হবে? জানা যাচ্ছে, কয়েকমাস আগে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় ইটভাঁটা। তখন সেখানকার শ্রমিকদের তাঁদের রুজিরোজগারও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর যখন খোলা হয় ইটভাঁটা তখন মালিকের থেকে ৫০ হাজার টাকা ও তিনহাজার করে ইট চাইতেন বলে অভিযোগ উঠেছে বাবু মাস্টারের বিরুদ্ধে। ওই এলাকার তৃণমূলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ লোক, যার বাড়িতে কিছুদিন আগে সিবিআই গরুপাচার মামালায় তল্লাশি চালায়।
তারও সেখানে ইট ভাঁটার ব্যবসা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, তিনি প্রতিবাদ করেন গোটা ঘটনার। সেই নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত হয়। দলের মধ্যে গোষ্ঠি দন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। তারপর কার্যত কোনঠাসা হয়ে যান বাবু মাস্টার। ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যোগ দেন বাবু মাস্টার। কিন্তু বিজেপি সমর্থকরা পাল্টা কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য কাজ করতে দেওয়া হয়নি বাবু মাস্টারকে। তিনিই তোলাবাজিতে বাধা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, বসিরহাটে একটি সভা সেরে কলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন বাবু। ফেরার পথে বাসন্তী হাইওয়ের উপর লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে তাঁর উপর হামলা চলে বলে অভিযোগ। বিজেপির দাবি, অন্তত ১০-১২ জন বাবু মাস্টারের কালো রঙের গাড়ি গাড়ি ঘিরে ধরে। লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে একটি স্পিড ব্রেকারের আগে গাড়ি আস্তে হয়ে গেলে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। প্রথমে বোমা ছোড়া হয়, তার পরে বাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।