Abdul Ghani Baradar: বছর ২০ পর আফগানিস্তানে ফেরত, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের নেপথ্য নায়ক, কে এই বেরাদর?
'কাবুলিওয়ালার দেশ' এখন তালিবানের দখলে। সরকার গঠনের তোড়জোড় চলছে জোরকদমে। কে হবেন নয়া প্রেসিডেন্ট? দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন মোল্লা আবদুল গনি বেরাদর। কিন্তু কে এই বেরাদর?
পুরো নাম মোল্লা আবদুল গনি বেরাদর (Mullah Abdul Ghani Baradar)। তবে তালিবানের কাছে তিনি 'মোল্লা বেরাদর'। এহেন বেরাদরের জন্ম ১৯৬৮ সালে কন্দহরে। জন্মসূত্রে তিনি একজন দুররানি পাশতুন। বলা হয়, দুররানিরা আফগানিস্তানের আদি গোষ্ঠী। এঁদেরই পূর্বপুরুষ হলেন আহমেদ শাহ দুররানি যিনি আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
কাতার থেকে ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে চলে এসেছেন তিনি। শোনা যায়, ২০০৪ ও ২০০৯ সালে শান্তি আলোচনার নেপথ্যে ছিলেন মোল্লা আবদুল গনি বেরাদর। ২০১০ সালে পাকিস্তানে গ্রেফতার হন তিনি। ৮ বছর পর, ২০১৮ সালে মুক্তি পান ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধেই!
তাঁর এই দেশের স্বপ্ন সেই ১৯৯২ সাল থেকেই। আফগানিস্তানকে আমিরশাহি বানানোর লক্ষ্যে সেই সময়েই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাদ্রাসা। যার উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানের ধর্মীয় শুদ্ধিকরণ ঘটিয়ে তাকে এক আমিরশাহি দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
বেরাদর কোনই দিনই তালিবানের সর্বময় কর্তা ছিলেন না। সেই পদে আপাতত রয়েছেন হায়াতুল্লা আখুন্দজাদা। বেরাদরের ভূমিকা বরাবরই ছিল কৌশল তৈরির। আড়ালে থেকে মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা। তবে প্রধান না হয়েও তালিবানের রাজনৈতিক অবস্থানের অভিমুখ বরাবার তিনিই ঠিক করে এসেছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তাঁর অবস্থানই ছিল তালিবানের তরফে শেষ কথা।
কাতারে বসেই প্রথমে আমেরিকা এবং পরে আফগান মধ্যস্ততাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান বেরাদর। ফল? আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত।
ধর্মীয় নেতা মহম্মদ ওমর বেরাদরের ভায়রাভাই। ওমর এবং বেরাদরের উদ্যোগেই তৈরি হয় এক মাদ্রাসা। নাম দেওয়া হয় 'তালিবান'। সেই শুরু তালিবানের যাত্রা। সময়টা ১৯৯১ সাল। এর ঠিক পাঁচ বছরের মাথাতেই সাফল্য। ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবান। রবিবার রাতে যে ভাবে তারা কাবুল দখল করল, ঠিক সে ভাবেই আফগানিস্তানে শুরু হয়েছিল তালিবানি শাসন। সেই রাষ্ট্রে প্রধান ছিলেন ওমর। বেরাদর ছিলেন আফগান সেনার দায়িত্বে। ২০০১ সালে মার্কিন সেনারা যখন আফগানিস্তান থেকে তালিবানকে উৎখাত করে, তখন বেরাদর ছিলেন আফগানিস্তানের উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহরের বিমানবন্দরে মোল্লা আবদুল গনি বেরাদরের চারপাশে রীতিমতো উৎসবে মেতে উঠেছেন অগণিত মানুষ। এই কান্দাহার শহরকেই কিন্তু আফগানিস্তানে তালিবানের আতুঁড়ঘর হিসেবে ধরা হয়। শেষ হাসি হাসলেন বেরাদরই। তবে এ বার তালিবানকে আসল পরীক্ষা দিতে হবে। দেশের মানুষকে প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে।