ZEE-VMR বিশ্লেষণ: ভোট বিপর্যয় হলেও ২০১৯ সালে মোদীর প্রত্যাবর্তনের আভাস
মনে হচ্ছিল, অনায়াসেই ২০১৯ সালে প্রত্যাবর্তন করবেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফল বাস্তবের জমিতে এনে ফেলেছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী অপরাজেয় নন, তা দেখিয়ে দিল মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থান। ২০১৯ সালে কী হতে চলেছে, তা বিধানসভার পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষণ করতে VMR-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে জি নিউজ। বলাই বাহুল্য, ভবিষ্যত নির্ণয় সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। জি ভিএমআরের বিশ্লেষণে পাল্লাভারী বর্তমান শাসক দলের। তবে গতবারের চেয়ে কমছে আসন।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির ভোটের হার- ২০১৩- ৪৫%, ২০১৮- ৫৪%, ২০১৮- ৪১%। ২০১৯ সালে এই রাজ্যে বিজেপি ৫০ শতাংশ ভোট পেতে পারে। (২০১৩ সালে প্রাপ্তভোটে ভিত্তিতে ২০১৮-র নিরিখে ৪% ভোট কমবে)। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ২৫টি আসন জিততে পারে। ২০১৪ সালের চেয়ে ২টি কম।
রাজস্থানে ভোটের হার- ২০১৩-৪৫%, ২০১৪-৫৫%, ২০১৮-৩৯%। ২০১৯- ৪৯% (২০১৩ সালের প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় ২০১৮-র মতো ১০ শতাংশ ভোটের এদিক-ওদিক)। রাজস্থানে ২০টি আসন জিততে পারে বিজেপি। ২০১৪ সালে তারা জিতেছিল ২৫টি।
ছত্তীসগঢ়ে ভোটের হার- ২০১৩-৪১%, ২০১৪-৪৯%, ২০১৮-৩৩%, ২০১৮-৪১% (এক্ষেত্রেও ২০১৩ সালের প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় ২০১৮-র মতো ৮% হেরফের)।
তেলেঙ্গানায় টিআরএসের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৭ শতাংশ। তারা ৮৮টি আসন জিতেছে। রাজ্যের ১১টি লোকসভা আসনই কেসিআরের দল পেতে চলেছে।
মিজোরামে এনডিএ-র শরিক এমএনএফ রাজ্যের একটি মাত্র লোকসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চলেছে।
উত্তর ভারতে মোট আসন ১৭২টি। ২০১৪ সালে ১৩৭টি জিতেছিল বিজেপি। মাত্র ৯টি গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে। রাজ্যগুলির বিধানসভার ভোটের উপর ভিত্তি করলে এবার বিজেপির আসন কমে দাঁড়াতে পারে ৮৭টি। কংগ্রেসের আসন বেড়ে দাঁড়াবে ৩০টি। শরিকদের সঙ্গে নিয়ে এনডিএ-র আসন সংখ্যা থাকবে ৯১। অন্যদিকে কংগ্রেসের নেতৃ্ত্বে মহাজোট (সপা-বসপা) হলে আসন প্রাপ্তি হতে পারে ৯১টি। এনডিএ- ৯১, ইউপিএ ৭৬, অন্যান্য-৫।
দক্ষিণ ভারতে বিজেপির শক্তি একেবারেই ক্ষীণ। দেশের এই প্রান্তে ২০১৪ সালে ২২টি আসন জিতেছিল বিজেপি। এবার তা কমে দাঁড়াবে ২০টি আসনে। কংগ্রেসের আসন বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২৬টি।
দক্ষিণ ভারতে টিআরএস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও এআইডিএমকে-র সঙ্গে বিজেপির জোটের সম্ভাবনা। তেমনটা হলে এনডিএ-র আসন দাঁড়াবে ৬৭টি। বামপন্থী দল, টিডিপি ও ডিএমকে-র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হলে ইউপিএ পেতে পারে ৬২টি। এটা অবশ্য সম্ভাব্যতার উপরে বিশ্লেষণ। এনডিএ- ৬৭, ইউপিএ-৬২ ও অন্যান্য- ২।
পূর্ব ভারতে রয়েছে ১২টি রাজ্য। মোট আসন সংখ্যা ১৩৭। ২০১৪ সালে বিজেপি পেয়েছিল ৪৫টি ও কংগ্রেস ১৪টি। ২০১৯ সালে বিজেপির আসন কমে দাঁড়াতে পারে ৪০টিতে। কংগ্রেসের আসন বেড়ে পৌঁছতে পারে ২২টি আসনে। জেডিইউ, এলজেপি-র মতো শরিকদের নিয়ে এনডিএ পেতে পারে ৫৪টি আসন। আরজেডি ও সম্ভাব্য সঙ্গী তৃণমূলকে নিলে ইউপিএ-র আসন হতে পারে ৭৩টি। এনডিএ-৫৪, ইউপিএ-৭৩ ও অন্যান্য-১০।
পশ্চিম ভারতে রয়েছে ৬টি রাজ্য। আসন সংখ্যা ১০৩। গত লোকসভা ভোটে বিজেপি পেয়েছিল ৭৮টি আসন। কংগ্রেস ২টি। তবে এবার বিজেপির আসন কমে দাঁড়াতে পারে ৬৫তে। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা হতে পারে ১৮। এমজিপি ও শিবসেনাকে নিয়ে ধরলে এনডিএ-র আসন হতে পারে ৮১টি। সেখানে ইউপিএ ২২টি। এনডিএ-৮১ ও ইউপিএ-২২।
২০১৪ সালের তুলনায় কমছে বিজেপির আসন। বিজেপি পেতে পারে ২১২টি আসন। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৯৬। ২০১৪ সালের তুলনায় ৫২টি বেশি পেতে পারে রাহুল গান্ধীর দল। বিজেপি- ২১২ এবং কংগ্রেস-৯৬।
সবমিলিয়ে এনডিএ-২৯৩, ইউপিএ-২৩৩ এবং অন্যান্য-১৭। ফলে ম্যাজিক অঙ্ক পার করে সরকার প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এবারের মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার স্বস্তি পাচ্ছেন না তিনি। জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ হতে হবে মোদী-শাহকে। বলে রাখি, পরিসংখ্যানের উপরে ভিত্তি করে একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। আসল ফল জানা যাবে ২০১৯ সালে।