সুখেন্দু সরকার


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হুগলির বৈদ্যবাটি থেকে গোল্ড কোস্টের পোডিয়াম। এক সপ্তদশীর সাফল্যের রুপোলী কাহিনি। কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টের ফাইনালে শুট অফে একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রুপো জিতেছেন বাংলার মেহুলি ঘোষ। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের এই সাফল্য ১৭ বছর বয়সী মেহুলির।  


মেহলির ফ্রেন্ড-গাইড-ফিলোজফার অলিম্পিয়ান শুটার জয়দীপ কর্মকার বলছিলেন, "সময়টা ২০১৫ সাল হবে, বৈদ্যবাটিতে যেখানে ও(মেহুলি)অনুশীলন করত সেখানে ওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রায় শুটিংই ছেড়ে দিচ্ছিল। একরাশ মানসিক অবসাদ তো ছিলই। তখন ওর(মেহুলি)বাবা-মা আমার কাছে নিয়ে আসে। অনেকেই না কি সে সময় বলেছিল মেহুলির শুটিং হবে না। সেই জায়গায় আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই ওকে নিয়েছিলাম।" বন্দুক-গুলি নিয়ে কাজ করার আগে মেহুলির মনের চিকিত্সা শুরু করেছিলেন জয়দীপ কর্মকার। তখন বিশ্বাস ফেরানো আর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোটাই ছিল জয়দীপের প্রথম এবং প্রধান কাজ। মেহুলির আত্মবিশ্বাস ফেরানোয় কোনও প্রফেশনাল মনোবিদ নিয়োগ করা হয়নি। জয়দীপ কর্মকারই নিজেই তখন হয়ে উঠেছিলেন মেহুলির মনোবিদ। অন্যদিকে তিনিই ছিলেন মেহলির মেন্টরও।


আরও পড়ুন- শুটিংয়ে সোনা জয় জিতুর, রুপো পেলেন বাংলার মেহুলি, ব্রোঞ্জ ওম-অপূর্বি'র


জয়দীপ কর্মকারের তত্ত্বাবধানে সেই শুরু মেহুলির অধ্যাবসায়। জাতীয় স্তরে সাফল্য পাওয়ার পরই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে থাকেন মেহুলি। সম্প্রতি মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জোড়া পদক কমনওয়েলথ গেমসের দরজা খুলে দিয়েছিল মেহুলির। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রুপো জেতায় যত না আনন্দ হচ্ছে, তার চেয়েও বেশি সোনার পদক হাতছাড়া হওয়ায় আফশোস হচ্ছে জয়দীপ কর্মকারের। জি ২৪ ঘন্টা ডট কমকে বললেন, "প্রথম কমনওয়েলথে অংশ নিয়ে ফাইনালে ওঠা এবং রুপো জেতা। না তবে যেভাবে সোনা হাতছাড়া হল শুট অফে। নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। যেহেতু ওর ১৭ বছর বয়স, এখনও অনেক পথ চলা বাকি আছে। এখান থেকে অনেক কিছু শেখা যাবে।এখনও উন্নতির জায়গা রয়েছে। আশা করছি আগামী দিনে আরও ভাল ফল করবে।"   



সোমবার গোল্ড কোস্টে শুট অফের আগে ঠিক কী হয়েছিল সেই গল্পও বললেন জয়দীপ, " ফাইনালে শেষ শুটে ১০.৯ স্কোর করার পর মেহুলি দেখেছিল সবার ওপরে ওর নাম রয়েছে। যেহেতু ওর নামটা এক নম্বরে ছিল তাই ও ভেবেছে জিতে গেছে। স্কোরবোর্ডে দ্বিতীয় নম্বরে যে নামটা ছিল, সেটা দ্বিতীয় নয় ওটাও আসলে এক নম্বরই কারণ টাই হয়েছিল। দু'জনেরই স্কোর ছিল ২৪৭.২। সেই জায়গায় ও ভুলবশত বন্দুক রেখে পজিশন ছেড়ে বাইরে চলে আসে। তখন একজন অফিসিয়াল গিয়ে ওকে বলেন যে, তোমার শুট অফ আছে। তুমি ফিরে যাও। তখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল, পজিশন ছেড়ে চলে আসে। মাইন্ডটা ডাইভার্ট হয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য সোনাটা হাতছাড়া হয়ে গেল।"



সোমবার ফাইনালে শুট অফে, বয়স এবং অভিজ্ঞতাই বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল বলে মনে করছেন জয়দীপ কর্মকার। এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই হয়তো সোনালী দিনে এগিয়ে যাবে আজকের রুপোলী মেহুলি।