CAB Annual Award Cermony: `পুরস্কারের টাকা মালিদের`... জীবনকৃতী রাজুকে প্রথম বলেই বোল্ড করেছিলেন শর্মিলা!
CAB Gives Lifetime Achievement Awards To Raju Mukherjee and Sharmila Chakraborty: সিএবি-র বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান মাতিয়ে দিলেন রাজু মুখোপাধ্যায়, মহানুভবতা ও গল্পে জিতে নিলেন হৃদয়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের (Cricket Association Of Bengal, CAB) পরপর দু'টো দিন বেজায় ব্য়স্ততায় কাটল। ৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ছিল ইডেন গার্ডেন্সের লনে ছিল বিশ্বকাপ ট্রফি উন্মোচন ঘিরে অনুষ্ঠান (ICC World Cup 2023 Trophy Tour)। শনিবার অর্থাৎ আজ ছিল বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান (CAB Annual Award Cermony 2022-2023)। এদিন নবনির্মিত ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে দুপুর থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়া অনুষ্ঠানে দেওয়া হল কৃতীদের পুরস্কার।
'কার্তিক বোস জীবনকৃতী সম্মান'-এ ভূষিত হলেন বাংলা ক্রিকেটের দুই রত্ন রাজু মুখোপাধ্যায় ও শর্মিলা চক্রবর্তী (Raju Mukherjee and Sharmila Chakraborty)। সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্য়ায় রাজু-শর্মিলার হাতে তুলে দেন পুরস্কার। উৎকর্ষের বিচারে 'এক্সসেল ইন ক্রিকেট' ক্য়াটেগরিতে বছরের শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার সুদীপ কুমার ঘরামি (Sudip Kumar Gharami)। 'জেন্টলম্য়ান ক্রিকেটার অফ দ্য় ইয়ার' হলেন অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar)। রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া আকাশ দীপকে (Akash Deep) বেছে নেওয়া হল বছরের সেরা জোরে বোলার হিসেবে। চলতি বছর জানুয়ারিতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। দলে ছিলেন তিন বঙ্গকন্যা- রিচা ঘোষ (Richa Ghosh), তিতাস সাধু (Titas Sadhu) এবং হৃষিতা বসু (Hrishita Basu)। বিশ্বজয়ী তিন মেয়েকেও বিশেষ পুরস্কার দিল সিএবি।
বাংলা ক্রিকেটের ‘জ্যাক হবস’ বলা হয় রাজু মুখোপাধ্য়ায়কে। আসল নাম সত্য়ব্রত মুখোপাধ্য়ায়। যদিও বাংলার ও ভারতের বাইশ গজ তাঁকে রাজু নামেই চেনে। ক্রিকেটার, কোচ, নির্বাচক, ম্য়াচ রেফারি ও লেখক। একাধিক পরিচয় তাঁর। ৫০টি প্রথম শ্রেণির ম্য়াচে ২০৬০ রান রয়েছে তাঁর। সাত-আটের দশক মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বাংলার অধিনায়কও ছিলেন রাজু। আদ্যন্ত শ্রদ্ধেয় ও বরেণ্য ক্রিকেটার এদিন ধনধান্য স্টেডিয়াম মাতিয়ে দিলেন তাঁর হৃদয় ছুঁয়ে নেওয়া দুই প্রস্তাবে। রাজু বলেন ইডেনের মালিদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই তাঁর পুরস্কার মূল্যের দুই লক্ষ টাকা যেন মালিদের ভাগ করে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। রাজু বলেছেন এবার মরণোত্তর জীবনকৃতী দেওয়ার কথাও ভাবুক বঙ্গজ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। আর সেই পুরস্কার দেওয়া হোক পঙ্কজ রায়কে। রাজুর মতে পঙ্কজ বাংলা ক্রিকেটের মুখ। তাঁকে সম্মান না দেওয়া হলে, রাজুদের কাছে এই সম্মানের দাম থাকে না।
মেয়েদের ক্রিকেটে জীবনকৃতি সম্মান পেয়েছেন শর্মিলা। ডান হাতি ব্য়াটার ও বাঁ-হাতি স্পিনার শর্মিলা। ১৯৭৬ সালে মেয়েদের প্রথম টেস্ট তিনি খেলেছিলেন ওয়েস্টল ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ১১টি টেস্ট (সেরা পরিসংখ্য়ান ৫/২৫) ও ১৪টি ওয়ানডে (সেরা পরিসংখ্য়ান ৪/১১) আন্তর্জাতিক ম্য়াচ খেলেছেন শর্মিলা। এদিন সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন বাংলার মীর আফসার আলি ও মুম্বইয়ের কাব্য়। কিন্তু শর্মিলাকে যখন পুরস্কার নেওয়ার জন্য় ডাকা হয়, তখন সঞ্চালক হয়ে গিয়েছিলেন রাজু। এক মজার গল্পও শোনালেন তিনি।
রাজু বলেন একবার নেটে শর্মিলা বল করছিলেন, গোপাল বসুর ব্য়াট করতে যাওয়ার কথা থাকলেও রাজুই গিয়েছিলেন। গোপালের যুক্তি ছিল যদি শর্মিলার বলে তিনি আউট হয়ে যান, তাহলে আজীবন শুনতে হবে যে, মেয়েদের বলে আউট হয়েছেন। ফলে সেই ঝুঁকি গোপাল নেননি। তবে এই নিয়ে কোনও আপত্তি ছিল না রাজুর। শর্মিলা প্রথম বলেই রাজুর স্টাম্প ছিটকে দিয়েছিলেন। রাজু বলেন যে, তিনি জীবনে ওরকম বাঁ-হাতি বুদ্ধিমতী স্পিনার খুবই কম দেখেছেন। এদিন টানা পুরস্কার দেওয়ার একঘেয়েমি কাটাতে সিএবি বিনোদনের ব্য়বস্থাও করেছিল। পুরস্কার দেওয়ার ফাঁকে নচিকেতা চক্রবর্তীর গান মন ভালো করে দিয়েছিল ধনধান্য়র।