Parimal Dey Death: পরিমল দে-র মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মঙ্গলবার রাতে ফেরার না দেশে পাড়ি দিলেন এক সময়ের কলকাতা ময়দানের `গ্ল্যামার বয়`। চিরতরে চোখ বন্ধ করার আগে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। গত কয়েক বছর ধরে অ্যালজাইমারে ভুগছিলেন।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার পরিমল দে-র (Parimal Dey) মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister of West Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শোকবার্তায় তিনি বলেন, "বিশিষ্ট ফুটবলার পরিমল দের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রাক্তন অধিনায়ক কিংবদন্তি ফুটবলার পরিমল দে ময়দানে ‘জংলাদা’ ও ‘গ্ল্যামার বয়’ নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭০ সালে আইএফএ শিল্ড ফাইনালে তিনি নায়কের ভূমিকা পালন করেছিলেন।"
তাঁকে রাজ্য সরকার সম্মানিত করেছিল, সে কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১৮-১৯ সালে ‘বাংলার গৌরব’ সম্মান প্রদান করে। এছাড়া তিনি ‘জীবনকৃতী’-সহ অজস্র সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি পরিমল দের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"
মঙ্গলবার রাতে ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন এক সময়ের কলকাতা ময়দানের 'গ্ল্যামার বয়'। চিরতরে চোখ বন্ধ করার আগে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। গত কয়েক বছর ধরে অ্যালজাইমারে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। রুবির বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের (East Bengal) তরফ থেকেও তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে।
১৯৭০ সালে আইএফএ শিল্ড ফাইনালে (IFA Shield Final) ইরানের পাস ক্লাবের বিপক্ষে গোল ছিল পরিমল দে-র। স্বাধীনতার পর সেই প্রথম কোনও ভারতীয় ক্লাব বিদেশি ক্লাবকে পরাজিত করে শিল্ড জিতেছিল। ইস্টবেঙ্গলের সেই গৌরবময় ইতিহাসের নায়ক ছিলেন পরিমল দে। ফাইনালে তাঁর অনবদ্য গোল ময়দানের প্রবীণ ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে আজও অক্ষত।
আরও পড়ুন: Parimal Dey Death: ৮২-তে থেমে গেলেন ময়দানের প্রিয় 'জংলা', সুভাষ, সুরজিতের কাছে গেলেন পরিমল দে
আরও পড়ুন: Border Gavaskar Trophy 2023: কামিন্সদের বিরুদ্ধে প্রথম দুই টেস্টে সম্ভবত নেই শ্রেয়স, বদলি কে?
ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে পরিবর্ত হিসাবে নেমেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক গোলটি করেন পরিমল। তাঁর সেই গোল মিলিয়ে দিয়েছিল গোটা ময়দানকে। ইস্ট-মোহন-মহামেডান সমর্থকরা যেন মুহূর্তে ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যান। তারপর থাকে দর্শকরাই কাঁধে তুলে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পৌঁছে দেন।
টানা ৬ বছর লাল-হলুদে খেলেছেন তিনি। খেলতেন ফরোয়ার্ড পজিশনে। ১৯৬৮ সালে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক হন তিনি। ২০১৪ সালে তাঁকে জীবনকৃতি সম্মান দেয় ইস্টবেঙ্গল। এরপর ২০২১ সালে লাল-হলুদের শতবর্ষের অনুষ্ঠানেও মজিদ বাসকারের সঙ্গে এক স্টেজে উপস্থিত ছিলেন পরিমল। অরিজিৎ সিং-এর 'জার্সি মানেই আমার মা' গানে দুলিয়েছিলেন কোমর।
এহেন ফুটবলারের প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া ময়দানে। শেষের কয়েক বছর তিনি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। একাকীত্বে ভুগতেন। সেই একাকীত্বকে সঙ্গী করেই, সুভাষ, সুরজিতদের কাছে চলে গেলেন লাল-হলুদের কিংবদন্তি। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল।