নিজস্ব প্রতিবেদন : ''যখন দেশে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়, কোনও ডিজাস্টার হয় তখন দেশের প্রতিটা মানুষকে সেটা ফিল করতে হয়। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়...।'' কথাগুলো উদ্বেগে ভরা স্বরে বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁরা শুনছিলেন তাঁদের মধ্যে কাজ করছিল এক অদ্ভুত অস্থিরতা। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, এটাই বারবার মরিয়া হয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই কথা বুদবুদের মতো উবে গেল নব্বান্নের সভাঘরের বাতাসে। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছলেও মর্মে গেল না। সভার মাঝেই যেন ডুয়েল যুদ্ধ বাধল। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রবিবার ইস্ট-মোহন ডার্বি। তার আগে ক্রীড়া সংস্থাগুলির কর্তাদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই দুই প্রধানের কর্তাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেছিলেন, এক মাসের জন্য ম্যাচ পিছনো হলে কী এমন সমস্যা হতে পারে! সোজা প্রশ্নের সোজা জবাব আসেনি। এসেছে উল্টোদিকের ক্লাব কর্তার প্রতি শ্লেষাত্মক মন্তব্য। কখনও আবার উঠে এসেছে ক্রিকেটের সঙ্গে ফুটবলের গতানুগতিক তুলনা! কেন ক্রিকেট সমস্ত সুখ ভোগ করবে! কেন ফুটবলের জন্য বরাদ্দ হবে সমস্ত বঞ্চনা! মূল ফটকের আলোচনা সরে গিয়ে ফোকাস পড়ল অবাঞ্চিত হাজারো বিষয়ে। বৈঠকে হাজির ছিলেন অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন-এর কর্তাও। দুই ক্লাবের কর্তাদের তু তু ম্যায় ম্যায়-এর মাঝে পড়ে তিনিও যেন হা করে চেয়ে রইলেন। মোহনবাগান কর্তা মুখ্যমন্ত্রী কাছে আবেদন জানালেন, তাদের যেন সরকারিভাবে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেয় ফেডারেশন। তাতে তারা বাকি চারটি ম্যাচ ওয়াকওভার দিতেও রাজি। সভাঘরে ইস্টবেঙ্গলকে হেয় করার সামান্য সুযোগও এক্ষেত্রে কাজে লাগান মোহনবাগান কর্তা। তিনি বলেন, ''আমরা ডার্বিতে না খেললে ইস্টবেঙ্গল সান্ত্বনার তিন পয়েন্ট পেয়ে যাবে।'' কথা হল, আলোচনা হল। সব কিছুর মাঝে যেন বাংলার ফুটবল কর্তাদের ইগোর লড়াই প্রকট হয়ে উঠল। ফুটবলের হিত করার দায়িত্ব তাঁদের কাঁধে। আর সেই ব্রতপালনে করোনার প্রকোপও তাঁদের ঠেকাতে পারবে না। সম্ভবত সেটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন দুই প্রধানের কর্তারা। 


আরও পড়ুন-  আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে বড়সড় ঘোষণা দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর, মন ভাঙল সমর্থকদের


সারা বিশ্বে করোনা ছড়াচ্ছে দ্রুতগতিতে। কোটি কোটি মানুষের জীবন সংশয়ে। ইতালির মতো ফুটবল বিশ্বের প্রথম সারির দেশ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ম্যাচ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের লড়াই চলল ম্যাচ নিয়ে। দিল্লিতে সমস্ত ম্যাচ বাতিল করেছে প্রশাসন। ওড়িশাও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে পর্যন্ত এআইএফএফ ঠিক করেছিল, রবিবার ইস্ট-মোহন ম্যাচ হবে ক্লোজড ডোর। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুললেন, কেন এমন উদ্বেকজনক পরিস্থিতিতে আই লিগের ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হবে না! সভাঘরে হাজারো যুক্তি উঠল। আই লিগে বাকি এখনও ২৮টি ম্যাচ। মোহনবাগানের বাকি চারটি ম্য়াচ। ইস্টবেঙ্গলের চারটি। এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সওয়াল, যেখানে সব রাজ্য ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার পথে এগোচ্ছে, সেখানে আই লিগের ম্যাচ পিছিয়ে দিলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে! শেষ পর্যন্ত এআইএফএফ কর্তারা মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। ১৫ ও ২২ তারিখ কলকাতায় যে দুটি আই লিগ ম্য়াচ হওয়ার কথা সেগুলি পিছিয়ে যেতে পারে।