নিজস্ব প্রতিবেদন: একদিকে ভারতীয় দল যখন চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক সেই সময় ১৬ বছর আগের পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটলেন গ্রেগ চ্যাপেল (Greg Chappell)। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে গুরু গ্রেগের অম্লমধুর সম্পর্ক ও সেটা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের মহা বিতর্কিত অধ্যায় সবার মনে আছে। নিজের ‘নট আউট’-এ পুরনো প্রসঙ্গ টেনে এনে ফের একবার প্রচারে আসতে চাইলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক। তবে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ছাড়াও ফের একবার গ্রেগের নিশানায় সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)ও বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (Virender Sehwag)। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গ্রেগ তাঁর বই ‘নট আউট’-এ ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কা সফরের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। গ্রেগ লিখেছেন, 'ভারতের হয়ে কোচিং শুরু করার সময় ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলাম। একটা ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য দল প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর আগে অবশ্য মন্থর ওভার রেটের জন্য সৌরভ নির্বাসিত ছিল। ফলে শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম দিকে ও দলে ছিল না।
জগমোহন ডালমিয়া তখন বিসিসিআই-এর সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, 'গ্রেগ তুমি কি সৌরভকে দলে চাও? তা হলে আমরা ব্যবস্থা করতে পারি।' আমার জবাব ছিল, 'সৌরভ এলে দলের ভাল হবে। তাই এই প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়। তবে রাহুল দ্রাবিড়কে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চাই। কারণ দেখে নিতে পারব, অধিনায়ক হিসেবে ও কেমন। বোঝা যাবে, আমাদের হাতে আর কী বিকল্প আছে। ডালমিয়া আমার কথায় রাজি হয়ে যান। আমরাও সৌরভকে ছাড়া শ্রীলঙ্কা সফরে চলে গিয়েছিলাম।' 



বইতে গ্রেগ আরও দাবি করে লিখেছেন, 'সৌরভকে ছাড়াই ভারতীয় দল তখন খেলছিল। তবে সেই সফরের মাঝপথে সৌরভের ওপর থেকে নির্বাসন উঠে যায়। এরপর দলের কয়েক জন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। দলের বেশ কিছু ক্রিকেটারদের কাছে প্রশ্ন ছিল, 'তোমরা কি সৌরভকে দলে ফেরাতে চাও?' একাধিক ক্রিকেটার সৌরভকে দলে ফেরাতে রাজি না হলেও, জাতীয় নির্বাচকরা সৌরভকে মাঝপথে দলে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।' 


আরও পড়ুন: WT20: বিদায়ঘন্টার জন্য কার ঘাড়ে দোষ চাপালেন Jasprit Bumrah?


মহারাজের সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন দুই সতীর্থ সচিন ও শেহওয়াগকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন গ্রেগ চ্যাপেল।  'মাস্টার ব্লাস্টার'কে খোঁচা দিতে গিয়ে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন হেড স্যার। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত সে বারের বিশ্বকাপে সচিনকে চার নম্বরে ব্যাট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটা নিয়ে তৎকালীন কোচ এবং সচিনের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। সেই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ভারত। বইতে সেটাও তুলে ধরেছিলেন তিনি।   



গ্রেগ আবার লিখেছেন, 'সেই বিশ্বকাপের আগের বছরেই ভারতীয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল। চোটের জন্য সেই সিরিজে সচিন ছিল না। সে বার ক্যারিবিয়ান সফরে গিয়ে লক্ষ্য করেছিলাম যে মাঝের দিকে উইকেট মন্থর হয়ে আসছে। মন্থর উইকেটে ব্যাট করা খুব কঠিন। তাই আমরা মাঝের দিকে একজন ভাল ও ম্যাচ জেতানো ব্যাটারকে রাখতে চেয়েছিলাম। আর তাই সচিনকে চার নম্বরে ব্যাট করার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সচিনকে ওপেন থেকে সচিনকে ওপেন থেকে সরানো মানে তো তাজমহলকে আগ্রা থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার মত ব্যাপার!' 


বীরু সম্পর্কে বড় চ্যাপেল লিখেছেন, 'জোরে বোলিংয়ের বিরুদ্ধে বীরুর দুর্বলতা ছিল। ওকে আরও পরিশ্রম করতে বলেছিলাম, যাতে আরও ভাল ফল পাওয়া যায়।' সেটা শুনে বীরু পাল্টা বলেছিল, 'বীরু জোরে বোলারদের ভয় পায়? জোরে বোলাররাই বীরুকে ভয় পায়।' গ্রেগ ফের লিখেছেন, 'ক্রিজে দাঁড়িয়ে গেলে যে কোনও বোলারকে শেষ করে দিতে পারত শেহওয়াগ। কিন্তু ফিটনেস আর টেকনিক নিয়ে আরও খাটলে আরও ভাল করতে পারত। দারুণ সব টেস্ট ইনিংস খেলেছে ও ঠিকই। কিন্তু টেস্টে ৪৯ ব্যাটিং গড় নিয়ে শেষ করেছিল বীরু। কিন্তু ওর টেস্ট গড় হতে পারত ৬০।'  


পুরনো সব অধ্যায় নিয়ে আগেও একাধিক বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু ফের একবার সেই সব মহা বিতর্কিত অধ্যায়কে টেনে আনলেন চ্যাপেল। যদিও একাধিক মানুষের ধারণা নিজের বই-এর মাধ্যমে সকলের সামনে আত্মপক্ষ রাখছেন চ্যাপেল। তবে এই বিষয়ে সৌরভ, সচিন ও শেহওয়াগ কোনও প্রতিক্রিয়া দেন কিনা সেটাই দেখার। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)