আমাদের বাঙালিদের কাছে ঝুলন খুব বড় উতসব নয় হয়তো। ক্যালন্ডারে থাকে না কোনও লাল কালির ছোঁয়া। আসলে রঙের গায়ে রঙ মাখানোর সাহস আর কে করবে! না-ই বা হল বড়, ঝুলন অনেক বাঙালির কাছেই প্রাণের উতসব। মনের উতসব। কল্পনার উতসব। এই বিরাট পৃথিবীটার মাঝে বেঁচে থেকেও নিজের জন্য একটা ছোট্ট পৃথিবী গড়ার উতসব। শক্ত নিরস কাঠের পৃথিবী নয়। কাঠগুড়ো দিয়ে তৈরি এক মোলায়েম প্রেমের পৃথিবীর ভিত। যাতে কোনও দানবাকার গ্যালিভার থাকে না। সেখানে আদুরে লিলিপুটের সাম্রাজ্য। যেখানে কাদা-কাপড়ের পাহাড়ে নকল সৈন্যরা যুদ্ধ হয়তো করে বাস্তবের অনুকরণে, কিন্তু সেই যুদ্ধে কারও রক্ত ঝরে না। প্রাণ যায় না। আর্তনাদের শব্দ থাকে না। ঝুলন এতটাই শান্ত। ঝুলন আসলে বাস্তবকে মিলিয়ে কল্পনা দিয়ে করা কোনও অনুকরণ। চিরকালীন প্রথা এমনই ছিল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রথা তৈরিও তো হয় ভাঙার জন্য। ২০১৭-র প্রযুক্তির পৃথিবীতে আর কল্পনা করার সময় কোথায় মানুষের! ঈশ্বরও তাই ঝুলনকে যেন কল্পনার মশারি থেকে বের করে বাস্তবের চলমান ঝুলন বানালেন। যে ঝুলন শান্ত হয়ে বয় না। আগুন হয়ে ঝরে। যে ঝুলন মানুষের কল্পনার সীমানার মাঝে কুঁকরে বসে থাকে না। দু'হাত বাড়িয়ে নিজের সাফল্যকে সেলিব্রেট করে। যে ঝুলন ছুটির তারিখ না-হয়েও রবিবারের ছুটির সারাদিনও ১২৫ কোটির মানুষের দেশকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করে। যে ঝুলন সাত দিন পরে তুলে ফেলার পর স্মৃতি রোমন্থন নয়। বরং, দুর্গা পুজোর তৃতীয়ার সাত সকালেও বহু দূর থেকে শহরে আসা এক নিরাপত্তাকর্মীকে দিয়েও বলিয়ে নেন, - 'দিদি যেদিন থেমে যাবেন, সেদিনও মেয়েরা ক্রিকেট মাঠে আসবে তো!' তাঁর কথা শেষ হতে না হতেই সকাল ৭ টায় যাদবপুর ক্যাম্পাসের মাঠে ২৪ ঘণ্টা ডট কম-এর প্রতিনিধি স্বরূপ দত্ত-র সামনে বসে পড়লেন বাস্তবকে ছাড়িয়ে স্বপ্ন দেখানো বাঙালির এক নতুন উতসবের নাম, 'ঝুলন গোস্বামী'!


২৪ ঘণ্টা ডট কম - জীবনের সব থেকে বড় স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার একদম কাছে গিয়ে থেমে যাওয়া। এই আক্ষেপ যাবে কোনওদিন?
ঝুলন গোস্বামী - না। যাবে না। কোনওদিনও যাবে না। বিশ্বকাপ জেতার কাছে এসেও একটুর জন্য জিততে পারিনি। এই আক্ষেপ কী দিয়ে মেটাবো! কোন মলমে সারবে? তবু, আমাদের সৌভাগ্য। এক বছরের মধ্যেই আমরা ফের একটা বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। ওটা যদিও একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বকাপ নয়। টি২০ বিশ্বকাপ। আমরা যদি সবাই মিলে চেষ্টা করে এবার টি২০ বিশ্বকাপটা জিততে পারি, তাহলে ওই আক্ষেপ হয়তো খানিকটা মেক-আপ করা যাবে। আবারও বলছি, খানিকটাই মেক আপ করা যাবে। লর্ডসের ওই আক্ষেপ কোনওদিনও যাবে না। তবু, আমরা তো খেলোয়াড়। ব্যর্থতা নিয়ে ভেবে থেমে থাকার কোনও মানে নেই। বরং, ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়াটাই ভাল। আপাতত, মন দিয়ে শুধু ক্রিকেট খেলছি। এছাড়া কোনও ভাবনা নেই। যেদিন মনে হবে, ক্রিকেট খেলে আর আগের মতো আনন্দ পাচ্ছি না। সেদিন থামবো। তার আগে পর্যন্ত কোনও কিছু না-ভেবে শুধু খেলে যাব। নিজের সেরা পারফরম্যান্স করে যাওয়ার জন্য উজাড় করে দেব।



২৪ ঘণ্টা ডট কম - যেদিন সত্যিই খেলা ছেড়ে দেবেন, সেদিন কোন পথে পা বাড়াবেন? কোচিং নাকি প্রশাসন?
ঝুলন গোস্বামী - না, না। এখনও ওসব কিছু ভাবিইনি। ভাবতেও চাইনি। ক্রিকেট এখনও খেলছি। আনন্দ পাচ্ছি। উত্তেজনা রয়েছে। খেলার এই আনন্দ আর উত্তেজনাটাই দরকার। যতদিন এটা ক্রিকেট থেকে পাচ্ছি, ততদিন অন্য কিছু নিয়ে কিছু ভাববো না। শুধুই ক্রিকেট খেলবো। তারপর সব দেখা যাবে।


২৪ ঘণ্টা ডট কম - মেয়েদের আইপিএল নিয়ে আপনারা বিসিসিআইয়ের কাছে দরবার করেছেন। কী মনে হচ্ছে?
ঝুলন গোস্বামী - হ্যাঁ, বিসিসিআইয়ের সঙ্গে মেয়েদের আইপিএল নিয়ে তো আমাদের কথা হয়েছেই। বিসিসিআই-ও বিষয়টা নিয়ে ভাবছে। তবে, এত বড় একটা জিনিস তো আর শুধু একবার কথা বললাম, দু'বার কথা বললাম, শুরু হয়ে গেল তেমন না। অনেক পরিকল্পনা করতে হবে। হোমওয়ার্ক করতে হবে। আমার মনে হয়, বিসিসিআই মেয়েদের আইপিএল শুরু করলেও সেটা ২০১৭-'১৮ মরশুমে করবে না। হতে পারে, তার পরের মরশুম। অর্থাত, ২০১৮-'১৯ মরশুম নাগাদ। বা, তার পরের বার। আমরা নিশ্চয়ই আশাবাদী। এরকম কিছু হলে, মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য খুব ভাল হবে, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।



২৪ ঘণ্টা ডট কম - মেয়েদের ক্রিকেটেও বিসিসিআইয়ের গ্রেডেশন পদ্ধতি নিয়ে কী মত আপনার?
ঝুলন গোস্বামী - ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। খুব ভাল। বিসিসিআইকে এই জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ। আসলে জীবনে টাকাটা খুবই দরকার। যেকোনও ক্ষেত্রেই। ক্রিকেটও ব্যতিক্রম নয়। যখন খেলে টাকার নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না, তখনই মানুষ টাকার জন্য চাকরি করার কথা ভাবতে বাধ্য হয়। কিন্তু, এখন গ্রেডেশন পদ্ধতি শুরু হয়ে যাওয়ার ফলে ক্রিকেটারদের মধ্যে মানসিক স্থিরতা অনেক বেশি। তারা, সবাই খেলাটার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। সবাই বুঝতে পারছে যে, উপার্জনের জন্য, জীবনে বেঁচে থাকার জন্য ক্রিকেটটাও একমাত্র পথ হতে পারে। ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি পেশাও। খেলার জন্য অনেক খরচ। ক্রিকেটারকে অনেক খেলার সরঞ্জাম কিনতে হয়। ভাল খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। নানা-জায়গায় যেতে হয়। সবকিছুর জন্যই প্রয়োজন টাকার। তাই গ্রেডেশন পদ্ধতি শুরু হওয়ার জন্য, আমি তো বলবো,-খুব ভাল হয়েছে।


২৪ ঘণ্টা ডট কম - লোধা কমিটির সুপারিশ নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
ঝুলন গোস্বামী - এই বিষয়ে আমি কোনও কথা বলবো না। এটা খেলার বাইরের বিষয়। টেকনিক্যাল বিষয়। বিচার্য বিষয়। না, এই বিষয়ে আমি কোনও কথা বলতে চাই না।



২৪ ঘণ্টা ডট কম - ঠিক আছে। আমরা তাহলে খেলায় ফিরি। আপনি নিজে ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন। এখন মিতালি ক্যাপ্টেন। আপনার এবং মিতালির দলের তুলনা কীভাবে করবেন?
ঝুলন গোস্বামী - আমি যখন ক্যাপ্টেন ছিলাম, তখন দেশের মেয়েদের ক্রিকেটের একটা সন্ধিক্ষণ চলছে। যারা অনেকদিন ধরে খেলেছে, তারা একে-একে অবসর নিচ্ছে। আর নতুন করে একটা ভারতীয় দল গড়ে উঠছে। দলে একঝাঁক নতুন মেয়ে উঠে এসেছিল তখন। তখন অনেক মেয়েরা দলে সুযোগ পাচ্ছিল। আবার বাইরেও চলে যাচ্ছিল। গোটা বিষয়টায় সেভাবে স্থায়িত্ব ছিল না। মেয়েদের ভারতীয় ক্রিকেট তখন যেন খুব চঞ্চল। তখন যে সব মেয়েরা দলে সুযোগ পেয়েছিল, তাদের অনেকেই এখন ভারতীয় দলের প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার। হরমনপ্রীতই যেমন। সে-ও ওই সময়েই পাঞ্জাব থেকে উঠে এসেছে। আর এখন ভারতীয় দলে সে রীতিমতো প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার। আমার দলটা ছিল একেবারে নতুনদের নিয়ে গড়া। আমি চেয়েছিলাম, তাদের পাশে দাঁড়াতে। ওদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে। প্রেরণা দিতে। কাজটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। আর মিতালির কথা বলবো, মিতালি অনেক শান্ত মনের মানুষ। ও খুব ভালভাবে, নিজের মতো করে দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই ওকে সমর্থন করি। আর আমি তো বলবো যে, একজন ক্যাপ্টেন ততটাই ভাল, যতটা ভাল তাঁর দল। তাই ভাল দল হওয়াটাই বেশি দরকারি। আমাদের এই দলটা যেমন শক্তিশালী তেমনই দলের মধ্যে ভারসাম্য রয়েছে। আসলে আমি আর মিতালি দু'জনে একেবারে আলাদা-আলাদা দুটো পরিস্থিতির মধ্যে ক্যাপ্টেন্সি করেছি।


২৪ ঘণ্টা ডট কম -  কিন্তু, মিতালিও তো একদিন থামবেন। ঝুলন, মিতালি, এরপর ভারতীয় ক্রিকেটের দায়িত্ব কার কাঁধে?
ঝুলন গোস্বামী - অনেকেই রয়েছে। হরমনপ্রীত রয়েছে। স্মৃতি মন্ধনা রয়েছে। আরও অনেকেই রয়েছে। সবাই দলে রীতিমতো প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার। এদের মধ্যেই কেউ আগামিদিনে ভারতের ক্যাপ্টেন্সি করবে। নিশ্চিত, সেক্ষেত্রে যোগ্য লোকের হাতেই দায়িত্ব যাবে।



২৪ ঘণ্টা ডট কম - কোনও বিশেষ একজন? যাঁকে আপনার মনে হয়, তিনিই হতে পারেন পরবর্তী মিতালি বা ঝুলন?
ঝুলন গোস্বামী- না, এভাবে কোনও নাম বলাটা ঠিক নয়। ওরা সকলেই ভাল। ওদের অনেকেই ভাল ক্যাপ্টেন হওয়ার মতো। যে-ই হোক পরবর্তী ক্যাপ্টেন, আমার তার জন্য শুভেচ্ছা রইলো। আর আশা করব, এই ভারতীয় দল যে জায়গাটায় পর্যন্ত পৌঁছেছে, পরবর্তী ক্যাপ্টেন সেই ছন্দ-তালটা ঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশকে আরও অনেক সাফল্য এনে দেবে।


২৪ ঘণ্টা ডট কম - বাংলাই বলুন, ভারতই বলুন বা বিশ্বের ক্রিকেট বলুন, মেয়েদের ক্রিকেট কোন পথে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে আপনার?
ঝুলন গোস্বামী - ক্রিকেট এখন গোটা বিশ্বেই প্রচণ্ড দ্রুতগতিতে জনপ্রিয় হচ্ছে। বাংলা বা সিএবি-র ক্ষেত্রে বলতে পারি, গোটা বাংলাতেই অনেক অনেক প্রতিভা ছড়িয়ে রয়েছে। এই প্রতিভাদের তুলে আনতে হবে। তাহলেই বাংলার ক্রিকেটে ভাল হবে। ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও তাই। প্রতিভার কোনও অভাব নেই। আর এবার বিশ্বকাপে ভারত যেমন খেলেছে, সেটা নিশ্চয়ই দেশের উঠতি ক্রিকেটারদের প্রেরণা দেবে। আসলে জীবনে বড় হতে গেলে, কোনও খেলায় সেরা হতে গেলে জীবনে রোল মডেল দরকার হয়। যেমন সচিন তেন্ডুলকর, কপিল দেব, পিটি উষা। ঠিক, তেমনই এখন উঠতি ক্রিকেটাররা বলতে পারবে, আমি মিতালির মতো হতে চাই। আমি সারা টেলরের মতো হতে চাই। আর এবার আইসিসি-ও খুব ভালভাবে মেয়েদের বিশ্বকাপটাকে প্রোমোট করেছে। যেটা মেয়েদের ক্রিকেটকে আরও বেশি জনপ্রিয় করবে। এবং করেছেও। এবার বিশ্বকাপের পর মেয়েদের ক্রিকেট নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক বেশি আগ্রহ বেড়েছে।


২৪ ঘণ্টা ডট কম - সম্প্রতি দু'টো দারুণ সম্মান পেলেন। একটা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট এবং অন্যটি ইডেনে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ শুরু হল, আপনি ঘণ্টা বাজানোর পর। ভাল বল করে উইকেট নয়। ভাল খেলে পুরস্কার নয়। এক, অন্যরকম অভিজ্ঞতা। কী অনুভূতি আপনার?
ঝুলন গোস্বামী - কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় আমায় যে সম্মানটা দিয়েছে, আমার কিছু বলার নেই জাস্ট। আপ্লুত। কোনওদিনই পুরস্কার পাওয়ার জন্য খেলিনি। আমরা মাঠে পারফর্ম করি। ভাল খেলার বিনিময়ে পুরস্কার বা সম্মান পেয়েছিও অনেক। তবে, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্মান আমায় কাছে অন্য মানের। অন্য অনুভূতির। নিজে বেশি দূর পড়াশোনা করিনি। 'টুয়েলভ' পর্যন্তই পড়াশোনা। সেখানে আমাকে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট সম্মান দিচ্ছে, আমার স্বপ্ন মনে হয় এখনও। সেটাও কিনা আমার নিজের জেলার বিশ্ববিদ্যালয়। এই অনুভূতি শুধু বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আর ইডেনের ঘণ্টা বাজানোর কথা বলতে গেলে, এটাতেও দারুণ সম্মানিত। একবার ২০০৬ সালে লর্ডসে খেলছিলাম, তখন মাইক গ্যাটিং ঘণ্টা বাজিয়ে খেলা শুরু করিয়ে ছিলেন। এখন তো এই রীতি বিশ্বের নানা মাঠেই শুরু হচ্ছে। দারুণ। সিএবি-আমাকে যে সম্মান দিল, সেটাও কোনওদিন ভুলবো না। সিএবি-র সকলকে ধন্যবাদ জানাই যে, আমাকে ঘণ্টা বাজানোর জন্য বাছা হয়েছিল। আমার এত ভাল লেগেছে যে, সব কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছি।



২৪ ঘণ্টা ডট কম - এখন তো ক্রীড়াবিদদের বায়োপিক বানানোর একটা ট্রেন্ড চলছে। ঝুলন গোস্বামীকে নিয়ে বায়োপিক কবে আসছে?
ঝুলন গোস্বামী - ইতিমধ্যেই কথা হয়ে গিয়েছে। হয়তো আগামী বছর কাজ শুরু হয়ে যাবে। নাম কী, কারা করছে, এই বিষয়ে এখনই খোলাখুলি কিছু বলবো না। নির্দিষ্ট সময়ে, এই বিষয়ে সব জানাবো।


২৪ ঘণ্টা ডট কম - বাংলার পরবর্তী ঝুলনকে চোখে পড়েছে? কাকে মনে হচ্ছে?
ঝুলন গোস্বামী - ঝুলন নয়। ঝুলনের থেকে অনেক ভাল ভালো ক্রিকেটার আসতে চলেছে। তবে, নাম বলতে চাই না। ব্যাপারটা শুনলে 'বায়াস' মনে হবে। তার থেকে সময় দিন। সঠিক সময়ে ঝুলনের থেকেও ভাল ক্রিকেটার আসবে বাংলায়। ২৪ ঘণ্টা ডট কমের পাঠকদের অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শারদীয়ার শুভেচ্ছা।


শুভেচ্ছা যে আপনাকেও ঝুলন। অনেক-অনেক। ২৪ ঘণ্টা ডট কমের পক্ষ থেকে। ২৪ ঘণ্টা ডট কমের পাঠকদের পক্ষ থেকেও। শুধু মুশকিল হয়, আপনাকে যে, অভিন্দন জানানোর পর্বই শেষ হয় না। শুভেচ্ছা নতুন করে জানাবো কখন। ঝুলন গোস্বামীর যে প্রাপ্তি অনেক। আমাদের দেশের ১০০ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে এসেছেন কপিল দেব থেকে অনিল কুম্বলে। যাঁদের উইকেট সংখ্যা চোখ কপালে তুলেছিল ক্রিকেটের কোনও কোনও যুগে। কপিল দেব তো বিশ্বরেকর্ডই করেছিলেন স্যার রিচার্ড হ্যাডলিকে টপকে ৪৩৪-এ গিয়ে। কিন্তু, এদেশের কোনও পুরুষ মানুষের হাত থেকে বলটা এত জোরে কখনও ছুটে যায়নি, যাতে তাঁকে বিশ্বের সবথেকে দ্রুতগতির বোলার বলা যেতে পারে। আপনি ঝুলন গোস্বামী যে ১২৫ কোটির ভারতীয়দের সেই আক্ষেপটাই মিটিয়ে গর্বে পরিণত করে দিয়েছেন। আজ ভারতীয়রা বুক ফুলিয়ে বলতে পারে, আমাদের দেশের মেয়েই বিশ্বে সব থেকে জোরে বল করতে পারেন। আসলে লোকে ভাবে আপনি বোলিং করেন। কিন্তু, আপনি আপনার জীবনের সব প্রতিকূলতাকে জেদের আগুনে গোলায় পরিণত করে মুঠোয় ভরে ছুঁড়ে দেন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের পিছনের উইকেটকে লক্ষ্য করে। কে বলে, ঝুলন শুধুই কল্পনার উতসবের নাম? ঝুলন যে আসলে, কল্পনার বেড়াকে টপকে বাস্তবের কঠিন বুকে পতাকা পুঁতে দিয়ে জানিয়ে দেওয়ার নাম। মেয়েরা 'অবলা' নয়। মেয়েরা আসলে অগতির 'গতি'।