অর্কদীপ্ত মুখার্জি


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে অলিম্পিক। ভারতের পদক জয়ের অন্যতম আশা ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে ভারতের হয়ে ঐতিহাসিক রূপোর পদক জিতেছিলেন সিন্ধু। এবারের অলিম্পিকে নেই অপর তারকা সাইনা নেহওয়াল। বাড়তি দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই। গাচ্ছিবৌলিতে নিবিড় অনুশীলনে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলেন তিনি। পদকের লক্ষ্যেই জুলাইয়ের ১৫ তারিখ উড়ে যাচ্ছেন টোকিও। তার আগে হায়দরাবাদ থেকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন জি ২৪ ঘন্টাকে।


প্রতিনিধি- কতটা প্রস্তুত আপনি অলিম্পিকের জন্য? টোকিওর উদ্দ্যেশ্যে কবে রওনা দিচ্ছেন?
সিন্ধু-  প্রস্তুতি একদমই ঠিকমতো হয়েছে। শারীরিক সক্ষমতারও একদম শীর্ষে রয়েছি। ভাল ফলের আশা নিয়েই টোকিওর উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেব। জুলাইয়ের ১৫ অথবা ১৬ তারিখ আমি রওনা দেব টোকিওর উদ্দেশ্যে।


  
প্রতিনিধি- আপনার অন্যতম কঠিন প্রতিদ্বন্ধী স্পেনের ক্যারোলিনা মারিন খেলতে পারছেন না অলিম্পিকে। পদক জেতার ক্ষেত্রে এটা কতটা সুবিধা আপনার জন্য?
সিন্ধু-– আমি এটাকে বাড়তি সুবিধা হিসেবে দেখছি না। অলিম্পিকে আরও বেশ কিছু অত্যন্ত ভালো খেলোয়াড় রয়েছেন যেমন তাইজু, ওকুহারা এবং অন্যান্যরা। প্রত্যেকেই অলিম্পিকে নিজেদের সেরা ফর্মে থাকবে। আমার জন্য নিশ্চিতভাবেই সহজ হবে না।



প্রতিনিধি- সাইনা নেহওয়াল নেই। আপনি ভারতের একমাত্র সিঙ্গলস মহিলা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। এটা কি অতিরিক্ত চাপ?
সিন্ধু- চাপ নয়, তবে বাড়তি দায়িত্ব তো বটেই। প্রত্যাশা সবসময়ই থাকবে। যখন আমি কোর্টে নামি তখন আমাকে নিজের কাজের প্রতি পুরোপুরি ফোকাসড্ থাকতে হবে এবং নিজের সেরাটা দিতে হবে। প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা চান আমি জিতি, আমাকে সমর্থন করেন এবং ভালোবাসেন। প্রত্যাশা সবসময়ই থাকবে এবং সেটাকে কখনই না বলা যায় না। 



প্রতিনিধি-  শেষ এক বছর সবার জন্যই অত্যন্ত কঠিন ছিল। আপনার কি মনে হয় অলিম্পিকের সময় যতটা ভালো ফর্মে থাকা উচিৎ ছিল সেটা রয়েছে?
সিন্ধু- আমি নিজের স্কিল, টেকনিকের উপর রীতিমতো খাটছি। এইমুহূর্তে অনেকটা সময় পাচ্ছি। এটা হতাশাজনক যখন গতবছর অলিম্পিক স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। এখন আমাদের কাছে অনেকটা সময় আছে নতুন কিছু শেখার জন্য এবং অনুশীলন করার। আমি আমার কোচকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তিনি সবসময় আমায় উজ্জীবিত রাখেন ও সাপোর্ট করেন।



প্রতিনিধি- কোচ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতে চাই, অলিম্পিকে যাওয়ার আগে প্রাক্তন কোচ গোপীচাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন?
সিন্ধু- তিনি মাঝেমধ্যেই আসেন অনুশীলনে। গাচ্ছিবৌলিতে বহুদিন ধরেই আমি অনুশীলন করছি। ফেব্রুয়ারি থেকেই আমি এখানে অনুশীলন করি। পার্ক এই মুহুর্তে আমার কোচ প্রায় দেড় বছর ধরে। আমার খেলার ধরণ খুব ভালো করেই জানেন। আমার ভালো খারাপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কী ভুল করছি বা কোথায় খামতি থাকছে তাও তিনি জানেন। আমার ভুলগুলি শুধরে দিচ্ছেন ফলে আমার খেলাও ভালো হচ্ছে। বিপক্ষের খেলা নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এখন পার্কই আমার কোচ এবং তাঁর সঙ্গেই আলোচনা আমি আমার প্ল্যানিং তৈরি করছি।



প্রতিনিধি-  স্কিল, টেকনিক ছাড়াও এইরকম বড় টুর্নামেন্টের আগে মানসিক কাঠিন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এই মহামারিতে কিভাবে সেটা বজায় রাখছেন?
সিন্ধু- যখন অলিম্পিক স্থগিত হয়ে যায় তখন শুধু খেলা বন্ধ হয়নি বাড়ির বাইরে পা রাখাও বন্ধ হয়ে যায়। সেইসময় আমি পরিবারের সঙ্গে অনেক সময় কাটাতে পারি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই সময়টা ভালো ছিল। এছাড়াও আমি বাড়িতে অনুশীলন করছিলাম, আমার ট্রেনার আমার নির্দিষ্ট শিডিউল দিয়েছিল। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে, খেলা শুরু হয়। এখনও আমরা শুধু অনুশীলনে যাই আর বাড়িতে ফিরে আসি। সবথকে জরুরী বিষয় হল পজিটিভ থাকা। আমি নিশ্চিত খুব দ্রুতই সব ঠিক হয়ে যাবে। 



প্রতিনিধি-  সাইনা নেহওয়াল এবং শ্রীকান্ত এইবছর অলিম্পিকে খেলতে পারবেন না। বেশ কিছু কোয়ালিফাইং টুর্নামেন্ট ভেস্তে যায় ও BWF সূচির কোনো পরিবর্তন করেনি। দুর্ভাগ্য তাড়া করল তাদের?
সিন্ধু-  এটা খুবই দুঃখজনক যে তাঁরা অলিম্পিকে নেই। সাইনা, শ্রীকান্ত থাকলে ভারতীয় দলের পক্ষে অত্যন্ত ভালো হত। তবে একইসঙ্গে বুঝতে হবে যে বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের দেশেই শুধু নয়, বরং পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে। সংগঠকরা প্রবল পরিশ্রম করে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করার চেষ্টা করছেন। তবে মনে রাখতে হবে সবকিছুর উপরে মানুষের জীবন। এই পরিস্থিতিতে নিজের খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রত্যেকেই কোন টুর্নামেন্ট খেলবেন বা কোনটা খেলবেন না তা নিজের মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমি নিশ্চিত সাইনা এবং শ্রীকান্তের নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা এবং ভিশন আছে। তবে এটা অত্যন্ত হতাশাজনক যে তারা সিলেক্টেড হতে পারেননি।


 
প্রতিনিধি-  আইপিএল ও কোপা আমেরিকায় ইতিমধ্যেই করোনা কেস দেখা গেছে। আপনার কাছে বায়ো-বাবলে থাকা কতটা নিরাপদ? 
সিন্ধু- এইসময়ে সাবধানে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আমাদের দেশই নয়, প্রত্যেকটি দেশই নিজেদের খেয়াল রাখছে। এই অবস্থায় ট্র্যাভেল করা খুবই কঠিন। কিন্তু সংগঠকরা যাবতীয় নিয়ম মেনেই সবকিছু করছেন এবং তারা রীতিমতো পরিশ্রম করছেন যাতে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে করা যায়। তবে এটাও সহজ নয় যে বিভিন্ন দেশের থেকে একাধিক অ্যাথলিট এক জায়গায় এসে বায়ো বাবলে থাকছে। তবে সংগঠকরা চেষ্টা করছেন যে সবকিছু যেন ঠিক থাকে। আগের কিছু টুর্নামেন্টে সংগঠকরা আমাদের বায়ো বাবলে আমরা সুস্থ রেখেছেন, আশা করছি অলিম্পিকেও সব ঠিক থাকবে।



প্রতিনিধি-  আপনি ইতিমধ্যেই ইউথ আইকন। ইতিমধ্যেই জিতেছেন অলিম্পিক পদক। এইবারেও পদক আনার ব্যাপারে ভারতের অন্যতম সেরা বাজি। ভক্ত ও আপনাকে যারা আদর্শ মনে করে তাদের কি বলবেন?
সিন্ধু-  আমি আমার সমস্ত ফ্যানদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি এই অলিম্পিকে ভালো ফল করার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি সবাইকে বলতে চাই বাবা-মায়ের সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন। খেলাধূলাকে পেশা বানাতে চাইলে অন্য সব পেশার মতই কঠোর পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি। একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে হার-জিত জীবনের অঙ্গ, এগিয়ে চলতে হয়। যখন আপনি হারবেন, তখন শিখবেন অনেক কিছু। সহজে সাফল্য আসে না, ধৈর্য্য রাখতে হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং চেষ্টা করে যেতে হবে। আমি নিজের বাবা-মায়ের কাছে এবং যারা আমায় সবসময় সমর্থন করে গেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।


(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)