Lionel Messi, FIFA World Cup 2022: একা অনুশীলন থেকে একাই এক ঘরে থাকা! কেন মেসির জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছেন হেড কোচ স্কালোনি? জেনে নিন
Lionel Messi, FIFA World Cup 2022: সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার মেসি শুরুতে মাঠে না নামলেও তাঁর প্রস্তুতির কোনও ফাঁক ছিল না। সময় কাটিয়েছিলেন জিমে। `এল এম টেন`-এর সঙ্গে জিমে ছিলেন রড্রিগো ডি পল, লেন্দ্রো পারেডেস, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং নিকোলাস ওটামেন্ডি। শুক্রবার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির ছিলেন প্রায় ৪০০ সাংবাদিক। মজার কথা হল, তাঁরা সবাই চলে যাওয়ার পর জিম থেকে বেরিয়ে মেসি–সহ পাঁচজনই মাঠে নেমে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেন!
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লিওনেল মেসি (Lionel Messi) দলের সঙ্গেই আছেন। কিন্তু বিশ্বকাপের (FIFA World Cup 2022) আগে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। শুক্রবার ছিল কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর মাঠে আর্জেন্টিনা (Argentina) শিবিরের অফিসিয়াল অনুশীলন। সেখানে মেসির অনুপস্থিতি ভাবাচ্ছিল ভক্ত-সমর্থকদের। মেসিকে না দেখতে পেয়ে দেশজ সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত চাপে পড়ে গিয়েছিল। তবে সবাইকে স্বাস্তি দিলেন দলের অধিনায়ক। হেড কোচ লিওনেল স্কালোনির (Lionel Scaloni) নির্দেশে একা অনুশীলন করছেন দলের অধিনায়ক। কারণ চোট যে বড় বালাই। এবং একইসঙ্গে দিয়েগো মারাদোনার (Diego Maradona) কীর্তি ছোঁয়ার তাগিদও যে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
প্যারিস সাঁ জাঁ-র (Paris Saint-Germain) জার্সি গায়ে চাপিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সময় অ্যাচিলিসে চোট পেয়েছিলেন মেসি। সেই চোট নাকি তিনি এখনও সারিয়ে উঠতে পারেননি। এরমধ্যে এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। 'ফুটবল আইডল' মারাদোনার কীর্তি ছোঁয়ার এটাই তাঁর কাছে শেষ সুযোগ। এমন অবস্থায় 'এল এম টেন' (LM 10) ও আর্জেন্টিনা টিম ম্যানেজমেন্ট একেবারেই ঝুঁকি নিতে চায় না। বিপক্ষ দলগুলোর একের পর এক তারকা চোটের তালিকায় নাম লিখিয়ে কাপ যুদ্ধ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তালিকায় করিম বেঞ্জেমা (Karim Benzema), এনগোলো কান্তে (N'Golo Kante), পল পোগবার (Paul Pogba) ফ্রান্সের তিন তারকার নাম রয়েছে। এমনকি নিজের দলের দুই ফুটবলারকে ইতিমধ্যেই হারিয়েছেন মেসি। নিকো গনজালেজ (Nico Gonzalez) ও জোয়াকুইন কোরেয়া (Joaquin Corrrea) চোট পেয়ে আগেই ছিটকে গিয়েছেন। তাই সাতপাঁচ ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর্জেন্টিনার মহাতারকা।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার মেসি শুরুতে মাঠে না নামলেও তাঁর প্রস্তুতির কোনও ফাঁক ছিল না। সময় কাটিয়েছিলেন জিমে। 'এল এম টেন'-এর সঙ্গে জিমে ছিলেন রড্রিগো ডি পল, লেন্দ্রো পারেডেস, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং নিকোলাস ওটামেন্ডি। শুক্রবার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির ছিলেন প্রায় ৪০০ সাংবাদিক। মজার কথা হল, তাঁরা সবাই চলে যাওয়ার পর জিম থেকে বেরিয়ে মেসি–সহ পাঁচজনই মাঠে নেমে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেন! যাঁরা প্রথম পনেরো মিনিট দেখলেন, তাঁরা ভাবলেন, মেসি হয়ত মাঠে নামেননি। শনিবারও তিন নম্বর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে যখন নীল–সাদা ব্রিগেডের অনুশীলন শুরু হল স্থানীয় সময় সন্ধে ৬টায়, মাঠে নামেননি মেসি। চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার সাংবাদিকরা। আবার কী হল? আসলে মেসিকে নিয়ে যেন কিছুতেই অস্বস্তি কাটছে না। কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল, ফিজিক্যাল ট্রেনারের সঙ্গে মাঠে নামছেন লিও। তখনই হাসি ফুটল আর্জেন্টিনা–সহ সব দেশের সাংবাদিকদের মুখেও। স্প্রিন্ট টানলেন, ছোট ছোট পাস খেললেন। এদিন মাত্র ১৫ মিনিট সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল। তার মধ্যেই মেসিকে দেখে স্বস্তি।
এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিট আর্জেন্টিনা। মেসির দল টানা ৩৬ ম্যাচ ধরে অপরাজিত। ২২ নভেম্বর সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবে ১৯৭৮ ও ১৯৮৬-র বিশ্বজয়ী দল। এর আগে মেসিকে চাঙ্গা রাখতে আরও একটি চমকে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কালোনি। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘাঁটি গেড়েছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের সময় দলের দীর্ঘদিনের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী এক ঘরে দুই ফুটবলার থাকেন। গতবার রাশিয়ায় মেসির রুম পার্টনার ছিলেন সের্জিও আগুয়েরো। তিনি অবসর নিয়েছেন। কিন্তু মেসি যাতে এবার নিজের মতো করে তাঁর ঘরে (রুম নম্বর বি–২০১) সময় কাটাতে পারেন, তাই কাউকেই তাঁর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়নি। মেসির পাশের ঘরে আছেন ওটামেন্ডি এবং ডি পল। মেসির উল্টোদিকের ঘরে আছেন ডি মারিয়া এবং পারেডেস। স্কালোনি বলছেন, 'দলের বাকিদের যা বলেছি, মেসিকেও তাই বলেছি। বিশ্বকাপে খেলা উপভোগ করো। মাঠে ভাল সময় কাটাও। এর বাইরে ওকে আর কিছু বলার নেই। সবাই জানি ও কী করতে পারে।'
আর্জেন্টিনা মানেই প্রত্যাশার বিপুল চাপ। ১৯৮৬–তে শেষবার এসেছিল বিশ্বকাপ, দিয়েগো মারাদোনার নেতৃত্বে। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও শেষরক্ষা হয়নি। বিশ্বকাপ হাতে নেওয়া হয়নি মেসিদের। এবার কাতারে জীবনের শেষ বিশ্বকাপে নামছেন লিও, আছেন তুখোড় ছন্দে। আর্জেন্টিনাজুড়ে প্রার্থনা, অকাল প্রয়াত মারাদোনার জন্যই এবার বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরুন মেসিরা।