IND vs PAK, BCCI vs PCB: জয় শাহ-র বক্তব্য হতাশাজনক, একতরফা! কড়া বিবৃতি দিল রামিজ রাজার পিসিবি
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ক্রিকেট কর্তাদের কাজিয়া বেড়েই চলেছে। ২০২৩ সালে পাকিস্তানে এশিয়া কাপ খেলতে না যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন জয় শাহ। তাঁর সেই মন্তব্যের পালটা দিল পিসিবি। একইসঙ্গে এবার এই বিতর্কে ঢুকে গেলেন `বুম বুম আফ্রিদি`।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিসিসিআই-এর (BCCI) সচিব জয় শাহ-র (Jay Shah)পালটা মঙ্গলবার সন্ধের দিকে প্রতিবেশী দেশ থেকে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার সকালের দিকে বোমা ফাটিয়েছিলেন শাহিদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)। আর এবার আগামি বছর এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) খেলতে পাক মাটিতে ভারতের খেলতে না আসা নিয়ে কড়া বিবৃতি দিল রামিজ রাজা-র (Ramiz Raja) পিসিবি (PCB)। টুইট করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উদ্দেশে সেই বার্তা দিয়েছে পাক ক্রিকেট বোর্ড। এই বিবৃতিতে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকেও (Asiain Cricket Council) উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে জয় শাহ-র বক্তব্যকে হতাশাজনক, একতরফা বলে দাবি করেছে চিরপ্রতিদ্বন্দী দেশ।
পিসিবি-র লেখা সেই বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, 'এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি জয় শাহ মঙ্গলবার একটি বক্তব্য করেছেন। সেখানে উনি বলেছেন আগামি বছর এশিয়া কাপ নিরপক্ষে ভেন্যুতে আয়োজিত হবে। তাঁর এই বক্তব্য আমাদের অবাক করেছে। একইসঙ্গে জয় শাহ-র মন্তব্য খুবই হতাশাজনক। উনি নিজের বক্তব্য সাংবাদিকদের সামনে রাখার আগে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ও পিসিবি-র সঙ্গে আলোচনা করেননি। তাঁর এমন বক্তব্য ভবিষ্যতে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। সেটা মনে রাখা উচিত।'
বিবৃতিতে ফের লেখা হয়েছে, '২০২৩ সালে যে এশিয়া কাপ পাকিস্তানে আয়োজিত হবে সেটা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের আলোচনায় আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। সভাপতি জয় শাহ সেই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। এবং তিনিও সিলমোহর দিয়েছিলেন। তাহলে এখন এশিয়া কাপ কেন আমাদের দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা উঠছে! এটা একেবারে একতরফা সিদ্ধান্ত।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ক্রিকেট কর্তাদের কাজিয়া বেড়েই চলেছে। ২০২৩ সালে পাকিস্তানে এশিয়া কাপ খেলতে না যাওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন জয় শাহ। তাঁর সেই মন্তব্যের পালটা দিল পিসিবি। একইসঙ্গে এবার এই বিতর্কে ঢুকে গেলেন 'বুম বুম আফ্রিদি'।
পাক মাটিতে এশিয়া কাপ খেলতে না গেলে, বাবর আজমের দল পরের বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে পা দেবে না। বিবৃতি দিয়ে এমন হুমকি ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছে পাক বোর্ড। সেখানে ফের লেখা হয়েছে, 'এশিয়ার ক্রিকেটের উন্নতির জন্যই ১৯৮৩ সালের এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল। সেই বোর্ডের স্বার্থ, ক্রিকেটের স্পিরিট মেনে চলা উচিত। সেটা মেনে চললে ভালো, নাহলে পাকিস্তান কিন্তু আগামি বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতের মাটিতে পা দেবে না। এমনকি ২০২৪-২০৩১ পর্যন্ত ভারতে একাধিক আইসিসি ইভেন্ট রয়েছে। সেই ইভেন্টগুলোতেও খেলার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা রয়েছে।'
এবং এই বার্তার শেষে লেখা হয়েছে, 'এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতির মন্তব্যের পর এখনও পর্যন্ত এই ইস্যু নিয়ে এসিসি-র থেকে কোনও সরকারি বিবৃতি পায়নি। তাই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে পিসিবি-র দাবি খুব দ্রুত যেন আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়। কারণ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর।'
মঙ্গলবার বার্ষিক সাধারণ সভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বোর্ড সচিব হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা জয় শাহ বলেছিলেন, 'আগামি বছরের এশিয়া কাপ নিরপেক্ষ দেশে আয়োজিত হতে পারে। কারণ ভারতীয় দল পাকিস্তানে যাবে না।' এরপর তাঁর দিকে তোপ দেগে শাহিদ টুইটারে লিখেছিলেন, 'গত এক বছরে দুটো দলের মধ্যে কী অসাধারণ বন্ধুত্ব দেখা গিয়েছে। মনে হয়েছে ক্রিকেটারদের মধ্যে সব ঠিকঠাকই রয়েছে। তা হলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কেন বিসিসিআইয়ের সচিব এ ধরনের কথা বললেন? ভারতের ক্রিকেট প্রশাসনে কতটা অনভিজ্ঞতা রয়েছে, সেটা এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে।'
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (ICC T20 World Cup 2022) ২৩ অক্টোবর 'মাদার অফ অল ব্যাটেল'। এর আগে মাঠের বাইরের তুমুল ঝামেলায় জড়িয়ে গেল বিসিসিআই ও পিসিবি। আগামি বছর ভারতের মাটিতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে। সেটা মাথায় রেখে এশিয়া কাপও একদিনের ফরম্যাটে খেলার কথা ভেবে রেখেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। নিজেদের দেশের মাটিতে যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, অর্থাৎ পাকিস্তান যাতে বিশ্বকাপ খেলতে আসে সেইজন্যই ওয়াঘার অন্য প্রান্তে ভারতীয় দলকে চিরপ্রতিদ্বন্দী দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করেছিল বিসিসিআই। তবে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দরকার ছিল কেন্দ্রের ছাড়পত্রের। তবে শোনা যাচ্ছে এবারও পাকিস্তানে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনড় প্রধানমন্ত্রী (Prime Minster Of India) নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তাই বোর্ড কর্তারাও সেটা মেনে নিলেন। মঙ্গলবার বিসিসিআই-এর তরফে জানিয়ে দেওয়া হল যে পাকিস্তানে গিয়ে এশিয়া কাপ খেলবে না ভারত। আর এরপর থেকেই শুরু হল নতুন বিতর্ক।
সীমান্ত সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক চাপানউতোরের জন্য সেই ২০১২ সাল থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ। শেষবার ২০০৮ সালে এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে গিয়েছিল ভারত। এর আগে ২০০৫-০৬ মরসুমে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়ের দল। সেবার তাঁর নেতৃত্বে টেস্ট এবং এক দিনের সিরিজ় খেলেছিল টিম ইন্ডিয়া। এর পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় হলেও পাকিস্তানে যায়নি ভারত। ২০১২-১৩ মরসুমে শেষবার পাক দল ভারতের মাটিতে পা রেখেছিল। ২০১২ সালের পর রাজনৈতিক কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ও বন্ধ হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে। বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপের মতো প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হচ্ছে দুই দেশ।
যদিও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এখনও দুই দেশের মধ্যে ব্যাট-বলের লড়াই দেখা যায়নি। আগামি ২৩ অক্টোবর মেলবোর্নের বাইশ গজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে 'মাদার অফ অল ব্যাটেল'। মহম্মদ রিজওয়ান-সূর্যকুমার যাদবের ডুয়েল দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট দুনিয়া। এর আগে বিসিসিআই জানিয়ে দিল যে পাকিস্তানে পা দেওয়া কোনওমতেই সম্ভব নয়। আর সেটা নিয়েই এখন বিতর্ক তুঙ্গে। মুখ খুলে জয় শাহ-র বিরুদ্ধে টুইট করেছিলেন আফ্রিদি। আর এবার টুইটারে কড়া বিবৃতি দিল পিসিবি।