স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


দ্যাহেলিজ পে মেরে দিল কী, জো রাখে হ্যায় তুনে কদম।
তেরে নাম পে মেরি জিন্দেগি, লিখ দি মেরে হামদম।
হা শিখা ম্যানে জিনা জিনা, ক্যাসে জিনা, হা শিখা ম্যানে জিনা মেরে হামদম।।
না শিখা কভি জিনা জিনা ক্যাসে জিনা, না শিখা জিনা তেরে বিনা হামদম।।


আজ কি তবে ইডেন বা কলকাতা এই কথাগুলোই অস্ফুটে বলবে? যেগুলো আমার আপনার কানে ধরা দেবে না। আসলে জাগতিক নিয়মেই কিছু শব্দ বা কথা শুনতে হয় 'হৃদয়' নামের এক অন্য ইন্দ্রিয় দিয়ে। প্রশ্ন হলো, হঠাত্‍ এমন কথা বলার কারণ কী? বলছি, এক এক করে -


১) আজ আতিফের জন্মদিন। পাকিস্তানের গায়ক। বিরাট কোহলির ভক্ত বলায় এক পাকিস্তানিকে রীতিমতো জেলে ভরে দেওয়া হয়েছিল এই তো মাস খানেক আগে! আমি রাহত আর আতিফের ভক্ত বললে যদি আমারও জেল হয়। হোক তবে। মনে হয় না, তেমন হবে বলে। কারণ, আমাদের দেশটা অন্তত পাকিস্তানের মতো করে ভাবে না। আর দ্বিতীয় কারণ, আমি ভারতীয়ই। ভারতে থাকি। ভারতেই বাঁচি। আর যাবই বা কোথায়? থাকবোও এ দেশেই। মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, সরস্বতীর দুই পাকিস্তানি বরপুত্র রাহত আর আতিফ। রাহত ক্লাসিক্যাল। আতিফ আধুনিক। ওঁরা দুজন গত এক দশকে মনে অনেক ভালো লাগা দিয়েছেন। আজ রাহত 'সাবজেক্ট' নয়। তাই রাহতকে 'রিলিফ' দিলাম! আজ আতিফের দিন। তাই তাঁকেই ধরলাম। কেন? বাকি এক ঝাঁক গানের কথা ছেড়েই দিলাম। কিন্তু বদলাপুরের এই 'জিনা জিনা'-র কথা না বললেই নয়। আতিফ চিরকাল শুধু মনে থাকবেন এই গানটির জন্যই। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের খেলা দেখতে ভালোবাসেন না, কোন ক্রিকেটপ্রেমী! তো সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচ। তাও আবার বিশ্বকাপের মতো আসরে! সেটা হবে ক্রিকেটের নন্দনকাননে! ইডেন বা কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা, শাহিদ আফ্রিদিদের শহরে পা পড়ার মনে মনে গেয়ে উঠবেন না, এই লাইনগুলো? কী জানি, মন তো বলে তেমনই সুর আজ গুনগুন করছে তিলোত্তমার কণ্ঠে।


২) পাকিস্তান আর ভারতের দু দেশে ক্রিকেট খেলতে যাওয়া আসাটা সেই বিড়ালের গল্পের মতো হয়ে গিয়েছে। ছেলেবেলায় তো বটেই বড় হয়েও গল্পটা শুনেছি আরও কবার। তা হলো, বাড়ির বিড়াল রোজ মাছ আর দুধ চুরি করে সাবাড় করে দেয়। শেষে আর ধৈর্য রাখতে না পেরে বাড়ির মালিক ভাবেন ঝোলায় করে বিড়ালটাকে এবার বিদায় করে আসবেন। গেলেনও তাই। ঝোলায় করে ফেলে এলেন চোর বিড়ালকে অনেক দূরে। রাতে খেতে বসে দেখেন, সেই বিড়াল দিব্যি চলে এসেছে বাড়ি চিনে! ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ এদেশে, বা ওদেশে গিয়ে খেলাটাও সেইরকমই। সে বিড়াল বাড়িতেই থাকবে। কিন্তু নাটকের অন্ত নেই!


৩) আতিফের ওই গানটিও কিনা বদলাপুরের! ভাবুন। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই তো বদলার। কখনও ভারত বদলা নেবে। কখনও বা পাকিস্তান। আর এত যাব না, যাব না করে বাপের বাড়ি থেকে পাকিস্তান ক্রিকেট দল যখন ফের শ্বশুড়বাড়িতে এলো, সেই দিনটাই কিনা আতিফের জন্ম দিন! বদলা নয়, বদল চাই, এবার অন্তত এই স্লোগান উঠুক, ক্রিকেটের মাঠেও। খেলার মাঠেও।


৪) জিনা জিনা গানটার একটা লাইন এরকম - আসমা মিলা জমি কো তেরি, আধে আধে পুরে হ্যায় হাম। সত্যিই তো। কেমন যেন কথাটা মিলে যায় ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গেও। অন্তত ক্রিকেট মাঠে তো বটেই। ভারত আর পাকিস্তান দুটোই যেন অর্ধেক-অর্ধেক। ভারত জমি হলে তার আকাশ তো পাকিস্তানই। আর পাকিস্তান জমি হলে তার আকাশও যে ভারত। ভাবতে বেশ ভালোই লাগলো, আতিফের গানের সঙ্গে লাইনদুটো মিলে গেল বলে।


৫) আতিফের জিনা জিনা গানটির আরও একটি লাইন না নিয়ে পারলাম না। - সাচ্চি সি হ্যায় ইয়ে তারিফে, দিলসে জো ম্যানে করি হ্যায়। জো তু মিলা তো সাজি হ্যায়, দুনিয়া মেরি হামদম। ঠিকই তো। আতিফ, রাহত তো বটেই। শাহিদ আফ্রিদি, ওয়াহাব রিয়াজ, মহম্মদ আমিরের প্রশংসা যে, আমার মতোই এ দেশের অগণিত ক্রিকেটপ্রেমী আর সঙ্গীতপ্রেমী করেই থাকে। এটাও বেশ ভালোই মিলে গেল, কী বলেন? ঠিক এভাবেই তো ওই পাকিস্তানের ছেলেটির মতো কত পাকিস্তানিই সচিন আর লতা মঙ্গেশকরে পাগল। তাঁরাও যে তারিফ টা সত্যিই করেন।