INDvsNZ: অভিষেক টেস্টে শতরান, বন্ধু Surya Kumar Yadav-কে জানালেন শিহরিত Shreyas Iyer
পয়া কানপুরের গ্রীনপার্ক স্টেডিয়ামে বারবার ফিরে আসতে চান শ্রেয়স আইয়ার।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শুধু তো রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) নন, কঠিন সময়কে দূরে সরিয়ে রেখে তাঁর ক্রিকেটীয় উত্থানের নেপথ্যে রয়েছেন আরও একজন। তিনি শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) ছোটবেলার কোচ প্রবীণ আমরে (Pravin Amre)। তাই কানপুরের গ্রীনপার্কে অভিষেক টেস্টে শতরান করেই আমরেকে বিশেষ ডিনারের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন ২৬ বছরের এই মুম্বইকর।
ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে এসে শ্রেয়স বলেন, "প্রবীণ আমরে স্যার আমার পাশে সবসময় থেকেছেন। যখনই আমি কোনও সমস্যায় পড়েছি ওঁনার কাছে ছুটে গিয়েছলাম। আমাকে উনি বলেছিলেন যে কেরিয়ারে তুমি অনেক সাফল্য অর্জন করেছ, কিন্তু টেস্ট ক্যাপ পাওয়াটাই আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত। স্যার আরও বলেছিলেন যে আমি যদি টেস্টে সেঞ্চুরি করতে পারি, তবে উনি আমার সঙ্গে ডিনার করবেন। আশা করি এবার সেই সুযোগটা আমি পাব। স্যারের কথা রেখেছি। এবার স্যারকে ডিনারে আমন্ত্রণ জানাব।"
আরও পড়ুন: INDvsNZ: কেন গত চার বছরে নিজের হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি বদলাননি Shreyas Iyer-এর বাবা?
তবে চমকের আরও বাকি আছে। সাত বছর আগে এই মাঠেই রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে একটা ইনিংস তাঁর কেরিয়ার বাঁচিয়ে দিয়েছিল। মুম্বইয়ের সেই ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন সূর্য কুমার যাদব (Surya Kumar Yadav)। এহেন সূর্যর এই টেস্টে অভিষেক ঘটতেই পারত। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত অনুসারে অভিষেক হল শ্রেয়সের। আর প্রথম টেস্টেই বাজিমাত। তাই তো দিনের শেষে বিশেষ আড্ডায় মাতলেন দুই মুম্বইকর। সেই ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছে বিসিসিআই।
বেশ কয়েক বছর ধরে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। তবে টেস্ট ক্রিকেটই যে আসল। অবশেষে তাঁর জীবনে এল এমন মনে রাখার মতো মুহূর্ত। তাই তো আপ্লুত শ্রেয়স তাঁর সতীর্থ সূর্যকে বললেন, "টেস্ট ক্রিকেট খেলা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল। তাই অভিষেক টেস্টে শতরান করে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। এর চেয়ে ভাল শুরু হতে পারে না।"
আরও পড়ুন: INDvsNZ: 'শিষ্য' Shreyas Iyer-এর উত্থানের পরেও কেন আশঙ্কায় 'গুরু' Pravin Amre?
কানপুরের এই গ্রীনপার্ক স্টেডিয়াম শ্রেয়সের জীবনে আরও একটা বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের শুরুটা ওঁর মোটেও ভাল হয়নি। প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যর্থতা দিয়ে শুরু হয়েছিল। প্রথম ৭ বছর আগে এই মাঠেই উত্তর প্রদেশের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন শ্রেয়স। সেই ম্যাচে মাত্র ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল মুম্বই। সেখান থেকে ৭৫ রান করে দলকে প্রথম ইনিংসের লিড এনে দিয়েছিলেন শ্রেয়স। সেই ইনিংস শুধু শ্রেয়সের কেরিয়ার বাঁচায়নি। মুম্বই দলের তৎকালীন কোচ আমরের চাকরিও বেঁচে যায়।
সেই ম্যাচের প্রসঙ্গও টেনে আনেলন সূর্য। প্রশ্ন শুনেই শ্রেয়সের জবাব ছিল, "কানপুরের এই স্টেডিয়াম আমার কাছে খুবই পয়া। ২০১৪ সালে আমার রঞ্জি ট্রফির শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। প্রথম চার ইনিংসে ব্যর্থ হওয়ার পর মনে হয়েছিল এ বার আর সুযোগ পাব না। কিন্তু সাত বছর আগে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ৭৫ রানের ইনিংস আমার জীবন পুরোপুরি বদলে দেয়। সেই ম্যাচেও কিন্তু আমাদের অবস্থা ভাল ছিল না। মাত্র ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরে টেল এন্ডারদের নিয়ে প্রথম ইনিংসের লিড পেয়েছিলাম। এমনকি এই মাঠেই আইপিএল-র ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৯৩ রান করেছিলাম। তাই এই মাঠে বারবার ফিরে আসতে ইচ্ছা করে।"
তাঁর শতরানের দাপটে ভারত (Team India) প্রথম ইনিংসে ৩৪৫ রান করলেও, দ্বিতীয় দিনের শেষে দুই ওপেনারের দাপটে লড়াই করছে নিউজিল্যান্ড (New Zealand)। উইল ইয়ং (৭৫*) ও টম ল্যাথাম (৫০*) লড়াইয়ের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে এখনও পর্যন্ত ১২৯ রান তুলে ফেলেছে কিউইরা। যদিও অজিঙ্কা রাহানের দলের প্রাপ্তি হল টিম ইন্ডিয়া এখনও ২১৬ রানে এগিয়ে আছে। ফলে টেস্টের তৃতীয় দিনের সকালে তাঁর বোলাররা বাইশ গজে আগুন ঝরাতে পারলে ফের কানপুর টেস্টে ফিরতে পারে ভারত।
সেটা মনে করিয়ে দিয়ে শ্রেয়স ফের যোগ করলেন, "এটা ঠিক যে ওদের শুরুটা বেশ ভাল হয়েছে। তবে আমাদের কিন্তু বাড়তি রান খরচ করলে চলবে না। কারণ পিচে ইতিমধ্যেই ভাঙন ধরতে শুরু করেছে। তাই তৃতীয় দিন সকাল থেকে আমরা সঠিক লাইন-লেন্থে বোলিং করতে পারলে এই টেস্ট জিততেই পারি।"