জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চলতি আইপিএলে ( IPL 2023) লিগের শেষ ম্যাচে শনিবার, কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (Kolkata Knight Riders) 'মিরাকল' করতে হবে। লখনউ সুপার জায়েন্টসের (Lucknow Super Giants) বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে কেকেআরের মাথায় অলৌকিক শব্দটাই ঘুরছিল। অস্বাভাবিক কিছু ঘটলেই কেকেআরের প্লে-অফের আশা অল্প হলেও বেঁচে থাকত। তবে ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens, Kolkata) কোনও 'মিরাকল' ঘটল না! কলকাতা এক রানে লখনউয়ের কাছে হেরে গেল। এই হারের সঙ্গেই দু'বারের চ্যাম্পিয়ন দলের এবারের মতো আইপিএল অভিযান থামল। অন্যদিকে লখনউ তৃতীয় দল চলে গেল প্লে-অফে। গুজরাত টাইটান্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে এক আসনে বসল। এবার চতুর্থ স্থানের জন্য লড়াইয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, রাজস্থান রয়্যালস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING
এদিন কিন্তু কলকাতা জিতলেও খুব একটা শান্তিতে থাকতে পারত না। কারণ তাদের ভাগ্য এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছিল যে, খেলা নয় যেন অংকের পরীক্ষায় চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের শিষ্যরা। চর্চিত 'মিরাকল' থিওরিতে কী কী শর্ত ছিল কেকেআরের? লখনউকে হারিয়ে জিতে ১৪ পয়েন্টে আসতে হবে। রাজস্থান রয়্যালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সঙ্গে এক আসনে বসা যাবে। কিন্ত তাতেও নেটরানরেট ইস্যু থেকেই যাচ্ছে। এছা়ড়াও প্রথমে ব্যাট করে ন্যূনতম ১০৩ রানের ব্যবধানে জেতার শর্ত ছিল। অন্যদিকে পরে ব্যাট করলে নয় ওভারে ম্যাচ জিততে হত। এখানেই শেষ নয়, কেকেআরের কপাল চও়়ড়া করার জন্য মুম্বই ও আরসিবি-কে তাদের গ্রুপ লিগে শেষ ম্যাচে হারতে হবে। এত হিসেব কখনই মিলত না। তা বলে দেওয়া যেতেই পারে। যতই অঘটন শব্দ থাকুক না ক্রিকেটে।
এবার আসা যাক ম্যাচের কথায়। টস জিতে নীতীশ রানার ব্যাট করতে পাঠিয়ে ছিলেন ক্রুনাল পাণ্ডিয়াদের। প্রথমে ব্যাট করে লখনউ ১৭৬ রান তুলতে পেরেছিল আট উইকেট হারিয়ে। কেকেআর বোলারদের দাপটে লখনউ এদিন নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছিল। দলের মাত্র চার ব্যাটারই দুই অংকের রান করতে পেরেছিল। কুইন্টন ডি কক (২৮), প্রেরক মাঁকড় (২৬), আয়ুশ বাদোনি (২৫) ও নিকোলাস পুরান (৫৮)। কেকেআর বোলারদের প্রশংসা করতেই হবে। তাঁদের পারফরম্যান্স ছিল তারিফ করার মতো। বৈভব অরোরা, শার্দূল ঠাকুরও সুনীল নারিন নেন দু'টি করে উইকেট। হর্ষিত রানা ও বরুণ চক্রবর্তী নেন এক উইকেট করে। কেকেআরের হয়ে এই রান তাড়া করতে নেমে জেসন রয় ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার শুরুটা দারুণ করেছিলেন। তাঁরা পাওয়ারপ্লে-তে ৬১ রান তুলে ফেলেছিলেন। ভেঙ্কটেশ ১৫ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান। এরপর জেসনকে সঙ্গ দিতে এসে নীতীশ রানা আট রানে ফিরে যান। এরপর জেসন (২৮ বলে ৪৫) আউট হয়ে যান। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ফেরেন ১৫ বলে ১০ রান করে। এদিনও সেই একা কুম্ভ আগলেছেন কেকেআরের সবচেয়ে ধারাবাহিক ক্রিকেটার রিঙ্কু সিং। শেষ ওভার পর্যন্ত লড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ৩৩ বলে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেও পারেননি দলকে জেতাতে। মাত্র এক রানের জন্য কেকেআর হেরে যায় এদিন। লখনউয়ের হয়ে রবি বিষ্ণোই ও যশ ঠাকুর দুই উইকেট করে পেয়েছেন।
এদিন ছিল বিশেষ ম্যাচ। ক্রুনাল-কুইন্টনরা দলের পরিচিত জার্সি ছেড়ে, মোহনবাগানের চিরাচরিত সবুজ-মেরুন রংয়ের ওপর ভিত্তি করেই বানানো নতুন জার্সি গায়ে মাঠে নামলেন। এলএসজি-র মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা মোহনবাগান ফুটবল ক্লাবের চেয়ারম্যানও। আইএসএল জেতার রাতেই তিনি সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। মোহনবাগানের আগে থেকে এটিকে শব্দ সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মোহনবাগানের নতুন নাম হয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। কলকাতা ও মোহনবাগান ফ্যানদের বিশেষ উপহার দেওয়ার জন্যই লখনউকে তিনি সবুজ-মেরুন জার্সিতে খেলালেন। তবে এদিন মোহনবাগানের একটি ফ্যান ক্লাবের বেশ কিছু সদস্যকে, ইডেনে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ফ্যানদের জার্সিতে মোহনবাগানের লোগো ও স্কার্ফ থাকায় তাঁরা গ্যালারিতে নিষিদ্ধ বলেই জানানো হয়! তবে এই অভিযোগ পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠেনি। বরং কেকেআর ম্যানেজমেন্টেকেই ফ্যনরাই আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। অনুরাগীদের দাবি যে, শাহরুখ খানের টিমের ম্যানেজমেন্টই নাকি বাগানের জার্সিতে ফ্যানদের ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। এদিন সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছিলেন ফ্য়ানরা। ক্লাব থেকে দল বেঁধেই তাঁরা ইডেনমুখী হয়েছিলেন। কিন্তু প্রিয় ক্লাবের লোগো ও স্কার্ফ পরে মাঠে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য তাঁরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। যদিও পরে সবাইকে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল বলেই জানা যায়।