নিজস্ব প্রতিনিধি : জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার, শুটার জয়দীপ কর্মকারের মতো তিনিও ওলিম্পিকের ফোর্থ ক্লাব-এ সদস্য। অল্পের জন্য ওলিম্পিকের পদক হাতছাড়া করেছেন তিনিও। তা নিয়ে যে তাঁর প্রচণ্ড আক্ষেপ রয়েছে, এমন নয়। এদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা অ্যাথলিটদের তালিকা তৈরি হলে তিনি এখনও সবার উপরেই থাকবেন। পিটি ঊষা। নামটা শুনলেই একটা ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠতে পারে। কৃষ্ণকায় লম্বা চেহারার এক মেয়ে হাজারো বাধা পেরিয়ে ছুটছেন তিরের বেগে। কোনও কিছুই যেন তাঁকে রুখতে পারছে না।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-  ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, দশের মধ্যে নেই আর্জেন্টিনা, জার্মানি


১৯৮৪ লস এঞ্জেলস ওলিম্পিকে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া করেছিলেন তিনি। রোমানিয়ার ক্রিস্তিয়েনা কোজোকারুর সঙ্গে প্রায় একই সময় ফিনিশিং লাইন পেরিয়েছিলেন পিটি ঊষা। কিন্তু পরে জানা যায় সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য কোজোকারুর থেকে পিছিয়ে পড়েছিলেন। ফলে ব্রোঞ্জ পদক হাতছাড়া হয়েছিল ভারতীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড-এর রানির। যদিও পিটি ঊষা বরাবর বলে এসেছেন, ''আমি কখনও ওলিম্পিয়ান হতে চাইনি। আসলে আমি কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে চাইতাম না। আমার লড়াই শুধু আমার নিজের সঙ্গে ছিল। নিজের রেকর্ড ভাঙতে চাইতাম।''


আরও পড়ুন-  রোনাল্ডোহীন রিয়ালকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ অ্যাটলেটিকোর


এত বছর পর হঠাত্ করে ১৯৮৪ ওলিম্পিকের কথা উঠতে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়লেন পিটি ঊষা। পদক জয়ের কারণ জানাতে গিয়ে বলে ফেললেন, ''সেবার গেমস ভিলেজে গিয়ে আমাকে শুধু সেদ্ধ ভাত আর আচার খেয়ে থাকতে হয়েছিল। কেরলে আমরা কাদু মাঙ্গা নামের এক ধরণের আচার খেয়ে থাকি। সেটা দিয়ে সেদ্ধ ভাত খেয়েছিলাম লস এঞ্জেলসে পৌঁছানোর পর থেকে। কারণ আমেরিকানদের মতো খাবার আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তা ছাড়া আমাদের জন্য আলাদা করে কোনও ফুড সাপ্লিমেন্টের ব্যবস্থাও করা হয়নি। ফলে শেষ ৩৫ মিটার কোজোকারুর সঙ্গে আমি এনার্জিতে পেরে উঠিনি। শুধু ভাত আর আচার খেয়ে এথ বড় ইভেন্টে ভাল কিছু করে দেখানো সম্ভব নয়। বেক আলু, হাফ বয়েলড চিকেন, সোয়া সস বা অন্য কোনওরকম আমেরিকান খাবার খেতে পারছিলাম না। এদিকে, এনার্জি বাড়ানোর জন্য সেইমতো খাবারের প্রয়োজন ছিল। ওখানে যাওয়ার আগে কেউ আমাদের বলে দেয়নি যে লস এঞ্জেলসে গিয়ে আমাদের শুধু আমেরিকান খাবার খেতে হবে। ফলে একরম জোর করেই ভাত আর আচার খেয়ে দিন কাটাতে হয়েছে।''


১৮ বছর ধরে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। আর এখন তিনি লেগে পড়েছেন নতুন পিটি ঊষা তুলে আনার জন্য। ঊষা স্কুল অফ অ্যাথলেটিক্সে প্রচুর ছেলমেয়ে নিজেদের পিটি ঊষার মতো গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আর এসব দেখে পিটি ঊষা বলছেন, ''অন্য দেশের অ্যাথলিটদের দেখে মাঝেমধ্যে ঈর্ষা হয়। ওরা তো ভাল পারফর্ম করার জন্য সব কিছু পায়। ভাল খাবার, ভাল সরঞ্জাম। কিন্তু আমরা এসব কিছুই পাই না। এখন আমার মূল কাজ, দেশের জন্য ভাল অ্যাথলিট তৈরি করা। আমি যে কাজটা পারিনি সেটা যেন নতুন অ্যাথলিটরা করে দেখায়।''