সুখেন্দু সরকার


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


রবিবাসরীয় ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আট বছরের অধরা কলকাতা লিগ জয়ের কাছাকাছি পৌঁছতে মরিয়া মোহনবাগান। চলতি মরশুমে ঘরোয়া লিগে এখন পর্যন্ত ৭টি ম্যাচ খেলে ৬ টিতে জিতে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে (ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে পয়েন্ট সমান) গোলপার্থক্যে লিগের শীর্ষে মোহনবাগান। রবিবার ডার্বি জিততে পারলেই লিগ জয়ের দিকে অনেকটাই এগিয়ে যাবে সবুজ-মেরুন শিবির এমনটাই মনে করছেন বাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী।



গত আড়াই বছরে ৬টি ডার্বিতে অপরাজিত মোহনবাগান। রবিবারের ম্যাচে তাই কি এগিয়ে থেকেই নামবে মোহনবাগান? মোহনবাগান কোচের সাফ জবাব,"না, কখনই না। প্রত্যেকটি ডার্বি নতুনভাবে আসে। আবার নতুন করে দেখানোর তাগিদ থাকে কোচ থেকে ফুটবলারদের সকলের। নতুন করে জাগার ম্যাচ ডার্বি।" অতীত নিয়ে ভাবতে রাজি নন শঙ্করলাল। "একটা সেকেন্ডও পিয়ারলেস ম্যাচের ভুল করা চলবে না, তাহলেই বিপদ!" বড় ম্যাচে নামার আগে ফুটবলারদের এই বলে বার বার সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্তা শঙ্করলালের চিন্তার বড় কারণ। তিনি বলছেন, "ও (জনি)তো অনেক বড় প্লেয়ার সেটা তো মানতেই হবে। সে তো ওয়ার্ল্ড কাপ খেলে এসেছে। একমাস ধরে ট্রেনিং করেছে সে। যে নেইমারকে আটকেছে তাকে বিট করতে হবে, এটাই বলেছি ডিকা-হেনরিকে। আর এই বিশ্বকাপার থাকাটাই ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে রাখার অন্যতম কারণ।"


আরও পড়ুন - ডার্বি ম্যাচে টিকিট-বিভ্রান্তি, ড্যামেজ কন্ট্রোলে আইএফএ


শুধু তাই নয়, আমনাকে নিয়েও চিন্তা-ভাবনা রয়েছে শঙ্করলালের মাথায়। রবিবারের বড় ম্যাচের আগে যেন 'বিনয়''-এর অবতার বাগান কোচ। প্রতিপক্ষকে এগিয়ে রাখছেন তিনি। মুখে সে কথা বললেও মনে মনে যেন নিঃশব্দ বিপ্লব বাগান সারথির। আসলে গত মরশুমে ঘরোয়া লিগের শেষ ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ড্র করে পয়েন্ট সমান হলেও, গোলপার্থক্যে চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্টবেঙ্গল। শিলিগুড়িতে ওই ম্যাচটা না-জিততে পারার যন্ত্রনা কুরে কুরে খাচ্ছে শঙ্করলাল-সহ বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে। সেই যন্ত্রণা ভুলতে রবিবার সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নামতে চলেছেন শিল্টন, ডিকা, কিংসলেরা। সেই সঙ্গে শেষ পাঁচ বছরে ঘরোয়া লিগে ডার্বি জেতেনি মোহনবাগান। এবার সেই অঙ্কটাই বদলে দিতে চাইছে শঙ্করলালের মোহনবাগান। পাশাপাশি এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মনের প্রসঙ্গ টেনে এনে শঙ্করলালের বক্তব্য 'মনের জোরে' অনেক সময়ই সব প্রতিকূলতা দূর করা সম্ভব।     



রবিবার মোহনবাগানের গোলের নিচে অধিনায়ক শিল্টন পাল। দুই স্টপার কিংসলে এবং কিম কিমা। রাইট হাফে অরিজিত্ বাগুই। লেফট হাফে অভিষেক আম্বেরকর কিংবা অমেয় রানাওয়াডে। মাঝমাঠে আমনাকে আটকাতে শুরু থেকেই মেহেতাব হোসেনের ডার্বি অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেন কোচ শঙ্করলাল। মেহেতাবের সঙ্গে থাকবেন শিল্টন ডি'সিলভা কিংবা সৌরভ দাস। দুই উইংয়ে ব্রিটো এবং আজাহার। আর আক্রমণে ডিকা ও হেনরি। লাল-হলুদ বধে এই হতে পারে বাগানের প্রথম একাদশ। অনুশীলন শেষে হাতে প্রতীকি চিংড়ি নিয়ে ডার্বিতে গোল করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন হেনরি কিসোকো। সেই সঙ্গে ৬ ম্যাচে ৭ গোল করা ডিপান্ডা ডিকার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বাগান সমর্থকরা। লাল-হলুদের বিশ্বকাপার কোস্তা রিকান ডিফেন্ডারকে টপকে গোল করতে হেনরি-ডিকা জুটিকেই তুরুপের তাস করতে চাইছেন শঙ্করলাল চক্রবর্তী।



এদিকে ক্লাব নির্বাচনের রাজনীতি দূরে সরিয়ে শনিবার সাতসকালে ঘরের মাঠে হাজির পদত্যাগী দুই কর্তা সৃঞ্জয় বোস ও দেবাশিস দত্ত। সম্প্রীতির আবহে সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের পাশাপাশি বাগানের ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বেশ খানিকক্ষণ কথা বলতে দেখা গেল দেবাশিস-সৃঞ্জয়কে। ফুটবলারদের উত্সাহিত করে অবশ্য দু'জনেই চলে গেলেন। রবিবার মাঠে আসবেন কি না সে নিয়েও অবশ্য নিশ্চয়তা দিলেন না। আর বাগানের বর্তমান সচিব অঞ্জন মিত্র অনুশীলন শেষে ফুটবলারদের সুস্থ শরীরে ডার্বি জেতার মন্ত্র দিয়ে গেলেন। আর শৈলেন মান্নার জন্মদিনের ছবিতে ফুল-মালা দিয়ে যেন বড় ম্যাচ জেতার অঙ্গীকার করলেন সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা।