Manoj Tiwary, BEN vs SAU: ১০ হাজার রানের মাইলস্টোন নয়, `রুথলেস ক্রিকেট`ই মনোজদের অস্ত্র
বদলার ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে একেবারে গনগনে মেজাজে বঙ্গ অধিনায়ক। কারণ তিনি যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূর্ণ করার মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে মনোজ কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত মাইলস্টোন নয়, বরং ট্রফি জয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে আছেন।
সব্যসাচী বাগচী
হাতে আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy 2023) জয়ের ৩৩ বছরের খরা কাটাতে বাইশ গজের যুদ্ধে নামছে বাংলা (Bengal)। প্রতিপক্ষ সৌরাষ্ট্র (Saurashtra)। তিন বছর আগে এই দলের বিরুদ্ধেই ফাইনাল হেরে গিয়েছিল বঙ্গব্রিগেড। সময় বদলেছে। বদলে গিয়েছে ভেন্যুও। রাজকোটের (Rajkot) সেই হার ভুলে ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) প্রতিশোধ তুলতে বদ্ধপরিকর মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) দল। শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল প্রথম একাদশে দুটি বদল হতে পারে। ইডেনে 'গ্রিন টপ'-এর কথা মাথায় রেখে দলে ফিরতে পারেন বোলিং অলরাউন্ডার আকাশ ঘটক (Akash Ghatak)। সেক্ষেত্রে বাইরে যাবেন প্রদীপ্ত প্রামাণিক। একইসঙ্গে ওপেনিংয়েও বদল ঘটাতে পারে বঙ্গ টিম ম্যানেজমেন্ট। করণ লালের বদলে মেগা ফাইনালে আর এক ওপেনার সুমন্ত গুপ্তকে (Sumanta Gupta) সুযোগ দিতে পারেন হেড কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla)।
এত গেল দলের খবর। মেগা ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগে দেখা গেল এক বন্ধুত্বের ছবি। বাংলা দলের প্রস্তুতি তখন শেষ। ড্রেসিংরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মনোজ। ঠিক এমন সময় তাঁকে লক্ষ্য করে 'মন্ত্রী...মন্ত্রী' বলে ডেকে উঠলেন জয়দেব উনাদকাট (Jaydev Unadkat)। দু'দলের অধিনায়ককে দেখা গেল একফ্রেমে। হাসি মুখে ক্যামেরার সামনে পোজ দিলেন দুই দলের দুই তারকা। তবে বদলার ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে একেবারে গনগনে মেজাজে বঙ্গ অধিনায়ক। কারণ তিনি যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূর্ণ করার মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে মনোজ কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত মাইলস্টোন নয়, বরং ট্রফি জয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে আছেন। সাংবাদিক বৈঠকের বিশেষ অংশ জি ২৪ ঘন্টার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল...
১০ হাজার রানের মাইলস্টোন: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্যাক্তিগত ১০ হাজার রানের মাইলস্টোন নয়, বরং আমি শুধু ট্রফি জেতার কথাই ভাবছি। কারণ এর আগে ব্যক্তিগত মাইলস্টোন নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে ভালো ব্যাট করতে পারিনি। যদি বাকি ১৬৭ রান এই ম্যাচ করতে পারি তাহলে তো ভালো হবে। তবে যদি আমি এবার ১৫০ বলে ৫০ রান করতে পারি তাহলেও নিজেকে আমি খুশি হব। কারণ আমার প্রথম টার্গেট থাকবে, তিন পয়েন্ট ঘরে তোলা।
'ভাই' জয়দেবকে খোঁচা: অনুশীলনের শেষে মাঠ ছাড়ার সময় জয়দেব আমাকে 'মন্ত্রী...মন্ত্রী' বলে ডাকছিল। আমরা কিছুক্ষণ আড্ডা মারলাম। ওর সঙ্গে সেই কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলার সময় থেকে সম্পর্ক। তবে ম্যাচ শুরু হয়ে গেলে ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা রুথলেস ক্রিকেট খেলব। ঠিক যেমন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম।
বদলার ফাইনাল?: মনের ভিতরে সেটা অবশ্যই কাজ করছে। কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার এই ফাইনালকে বদলার ম্যাচ হিসেবে দেখছে। যদিও জুনিয়র ক্রিকেটাররা মধ্যে তেমনভাবে ম্যাচটা দেখছে বলে মনে হয় না। একইসঙ্গে আমরা ড্রেসিংরুমে টিম মিটিং করার সময় 'বদলা' শব্দটাও প্রয়োগ করছি না। আগামি পাঁচ দিন আমরা বিপক্ষকে ক্রিকেটীয় স্কিলে হারাতে পারলেই, বুক বাজিয়ে বলতে পারব যে, বদলা নিলাম।
সৌরাষ্ট্রকে পাওয়া কি বাড়তি অ্যাডভান্টেজ?: ট্রফি জিততে হলে যে কোনও প্রতিপক্ষকেই হারাতে হবে। তবে সৌরাষ্ট্রকে পেয়ে বেশি ভালো লাগছে। কারণ ওদের বিরুদ্ধেই তো শেষবার আমরা হেরেছিলাম। ওদের গত কয়েক ম্যাচের ভিডিয়ো আমরা দেখেছি। বিপক্ষের অনেক ভুলভ্রান্তি আমাদের চোখে পড়েছে। আর তাছাড়া পুরনো ঘটনা নিয়ে বসে থেকে তো লাভ নেই। আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। আর আমাদের ভবিষ্যৎ অবশ্যই ভালো। কারণ আমাদের পেস বোলাররা ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরম্যান্স করে চলেছে। অভিমন্যু, অনুষ্টুপ, সুদীপ চলতি মরসুমে প্রায় ৮০০-র কাছাকাছি রান করেছে। আমি-শাহবাজও ফর্মে আছি। লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে। এমনকি আকাশ ঘটকও অবদান রাখছে। আর এতেই সাফল্য পাচ্ছে বাংলা।
অভিমন্যুর সঙ্গী কে?: করণ লাল গত পাচ-ছ'টি ইনিংস খেলেছে। কয়েকটা ম্যাচে প্রথম উইকেটে ৫০ রান উঠেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য ওপেনিং জুটিতে ১০০ কিংবা এর বেশি রান যোগ করা। তাই ফাইনালে অন্য কাউকে অভিমন্যুর সঙ্গে দেখা যেতেই পারে।
ঘরের মাঠে প্রথম রঞ্জি ফাইনাল: এটা আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। আর আগে তিনটি রঞ্জি ফাইনাল খেললেও, এই প্রথমবার আমি ও বাকিরা ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলব। স্বভাবতই সবাই তেতে রয়েছে। আমার কাছে অন্তত জীবনের অন্যতম সেরা ম্যাচ। এখন দিন-রাত এই ম্যাচটা নিয়েই ভাবছি।
জ্বর সারিয়ে শাহবাজ ফিট: শাহবাজের জ্বর হয়েছিল। সেইজন্য মঙ্গলবার ও ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ও বুধবার দলে যোগ দিয়ে ব্যাটিং করেছে। তবে আমরা ওকে বোলিং করতে নিষেধ করেছিলাম। কারণ শাহবাজ আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ওর মাঠে থাকা খুব জরুরী।