Sourav Ganguly, BCCI President: `আমি অন্য কিছু করতেই পারি!` গদি হারিয়ে প্রথম মুখ খুললেন `মহারাজ`
ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে তিনি আর নেই। বিসিসিআইয়ের সভাপতি এখন অতীত। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যমেয়াদ শেষ হয়নি। গদি হারিয়ে এই প্রথম কথা বললেন `মহারাজ`।
দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজনীতির শিকার হয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সভাপতির (BCCI President) গদি হারিয়েছেন। গত মঙ্গলবার বেশি রাতে মুম্বই থেকে শহরে ফিরেই বেহালার বীরেন রায় রোডের বাড়িতে ঢুকে গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সারাদিন বাড়িতেই ছিলেন। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ দুপুরে কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে হাজির ছিলেন 'মহারাজ'। বন্ধন ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন তিনি। বিসিসিআই-এর পদ হারিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন 'মহারাজ''। সাফ জানিয়ে দিলেন যে, আগামী দিনে আরও বড় কিছু তিনি করতেই পারেন। সৌরভ নতুন ইনিংসেরই ইঙ্গিত দিলেন নিজের শহরে বসে। জানিয়ে দিলেন প্রশাসকের চেয়ারে বসার থেকে ক্রিকেট খেলা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের।
সৌরভ এদিন বলেন, '১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের দিন সকালে জানতে পারি খেলব। তিন সপ্তাহ পর লর্ডসে ছিল প্রথম টেস্ট। আমি শতরান করি। পঙ্কজ রায়ের পর বাংলা থেকে দীর্ঘদিন কেউ খেলেননি। আমি অতীত নিয়ে ভাবি না। ভবিষ্যতে বাঁচি। সচিন-দ্রাবিড়রা একশোর বেশি টেস্ট খেলেছে। ওদের সঙ্গে আমিও খেলেছি। লর্ডসের সেঞ্চুরি করেছিলাম শনিবার। এত বছর পরেও ভুলিনি। স্কোরবোর্ডে তাকাইনি। ধাপে ধাপে প্রথমে ২০ ও তারপরে ৩০। আমি এভাবেই এগিয়েছি। বন্ধন ব্যাংকও এভাবেই এগিয়েছি। স্পোর্টস এ সাফল্য রাতারাতি আসে না। এক রাতে কেউ চন্দ্রশেখর ঘোষ, নরেন্দ্র মোদী, সচিন তেন্ডুলকর হতে পারেন না। আমার মনঃসংযোগ ছিল। পরের বল ও পরের রান নিয়ে ভাবতাম। এটা একটা পদ্ধতি। ওই ইনিংস আত্মবিশ্বাস দেয়। স্পোর্টসে প্রতিদিন শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। কেউ বঞ্চিত হবে। কেউ সফল হবে। কেউ ব্যর্থ হবে। কিন্তু নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে। আমি একসময় প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছি। এখন সেখান থেকে বেরিয়ে এর চেয়েও বড় কিছু করতেই পারি। আমি সিএবি ও বিসিসিআই সভাপতি হয়েছি ঠিকই। কিন্তু খেলোয়াড় জীবনের ১৫ বছর সেরা। জানতাম দলে থাকতে গেলে রান করতে হবে। আমি মানি জীবনে বাঁচতে গেলে ধনকুবেরের মত অর্থ লাগে না।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসাবেই দায়িত্ব সামলাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাই তিনি সবিনয়ে আইপিএল চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১৯ সালে বিসিসিআই-এর সভাপতি হন সৌরভ। বিগত তিন বছরে চেয়ারে বসে নিজের ছাপ রেখেছেন সৌরভ। ভারতে দিন-রাতের টেস্ট আয়োজন করা থেকে, কোভিড আবহে সফল ভাবে আইপিএল আয়োজন। সৌরভের সিভি-তে রয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা থেকে রেকর্ড অর্থে আইপিএল মিডিয়া সত্ব বিক্রি। সৌরভের অনুরোধেই রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণ ভারতীয় ক্রিকেটের দুই বড় দায়িত্বে এসেছেন। এই প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, 'আমি সিএবি-তে পাঁচ বছর ও বিসিসিআই-তে তিন বছর প্রশাসক হিসাবে কাজ করেছি। এতগুলো বছরে এটা বুঝেছি, কিছু জিনিস ছাড়তে হয়। ক্রিকেটারের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। প্রশাসককে অনেক বেশি অবদান রাখতে হয়। দলের জন্য আরও ভালো কিছু করতে হয়। আমি প্লেয়ার হিসাবে অনেক বেশি সময়ে ছিলাম। চুটিয়ে উপভোগ করেছি। বিশ্বে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠিত করেছি। প্রশাসক হিসাবেও দুর্দান্ত সব মুহূর্ত পেয়েছি। কেউ সারাজীবন খেলতেও পারে না বা প্রশাসক হিসাবেও থাকতে পারে না। বিগত তিন বছরে ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক ভালো কিছু হয়েছে। কোভিড আবহে আইপিএল থেকে। মহিলা ক্রিকেটারদের রুপো জয়। ভারতীয় দল বিদেশের মাটিতে ভালো খেলেছে। এই ভারতীয় দলের দারুণ প্রাণশক্তি রয়েছে।' এখন দেখার সৌরভ ভবিষ্যতে কোন ইনিংস বেছে নেন।