নিজস্ব প্রতিবেদন : ক্রিকেট থেকে ম্যাচ গড়াপেটার কালো ছায়া অনেকটাই সরে গিয়েছে ভাবলে ভীষণ ভুল হবে। একটা রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে জুয়াড়ি এবং অন্ধকার জগতের লোকজন বেছে নিচ্ছে অন্য কোনও রাস্তা। কিন্তু লক্ষ্য একই- ক্রিকেট ম্যাচকে নিজেদের নির্দেশে চালানো। কখন কী হবে, আগে থেকে ঠিক করে দেবে সঙ্গে লুটে নেবে কোটি কোটি টাকা। চমকে দেওয়া এই সব তথ্য উঠে এসেছে গত এক বছর ধরে চলা আইসিসি-র তদন্তে। যার মধ্যে সব চেয়ে বড় চমক হল, গত এক বছরে পাঁচ জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধিনায়ককে ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিল জুয়াড়িরা। যার মধ্যে চার অধিনায়ক টেস্ট খেলিয়ে দেশের। এক জন শুধু অ্যাসোসিয়েট দেশের। সোমবার দুবাইয়ে আইসিসি'র সদর দফতর থেকে পাওয়া গেল এই তথ্য।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


ব্রিটিশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্তা অ্যালেক্স মার্শাল গত বছর দায়িত্ব নিয়েছিলেন আইসিসির দুর্নীতি দমন শাখার। এই এক বছরে তাঁর চালানো তদন্তেই উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদ। আফগান প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিকে টার্গেট করে জুয়াড়িরা তাঁকে এই প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে আইসিসি'র দুর্নীতিদমন শাখা। ঘটনা হল, এই সব তথ্য সামনে এলেও আইসিসি কিন্তু নিজেদের উদ্যোগে এখনও কোনও ম্যাচ গড়াপেটার ঘটনা ধরতে পারেনি। প্রচারমাধ্যমের নানা স্টিং অপারেশন থেকে যে সব ঘটনা উঠে এসেছে, তারই তদন্ত চালিয়েছে।


আরও পড়ুন - দশ বছর পর সিংহাসন হারালেন মেসি-রোনাল্ডো, ফিফার 'দ্য বেস্ট' লুকা মদ্রিচ


আইসিসি সূত্রে খবর, জুয়াড়িদের এখন বিশেষ নজর পড়েছে বিশ্বের নানাদিকে গজিয়ে ওঠা নানা টি-টোয়েন্টি, টি-টেন লিগের ওপরে। যেখানে ম্যাচ গড়াপেটা হওয়ার আশঙ্কা একটু বেশিই থাকে। আইসিসি সিইও ডেভিড রিচার্ডসন বলেছেন, "আমরা টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর ওপর জোর দিচ্ছি। চার দিকে এখন প্রচুর টি-টোয়েন্টি লিগ হচ্ছে। যেখানে আমরা নজর রাখছি। এর ফলে অ্যালেক্সের কাজটা আরও বেড়ে গেল।" আইসিসি-র তদন্তে আরও অনেক তথ্য উঠে এসেছে। যেমন, ক্রিকেট জুয়াড়ি এবং ফিক্সারদের মধ্যে অনেকেই ভারতীয়। এদের কাজটা চলে পুরো বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যে কিছু দিন আগেই এক চ্যানেলের গোপন ক্যামেরা অভিযানে উঠে এসেছে অনিল মুনওয়ারের নাম। যাঁকে এখন খুঁজে চলেছে আইসিসি। কিন্তু এখনও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।



মার্শাল এবং রিচার্ডসন জানাচ্ছেন, গত এক বছরে আইসিসি ৩২টা ঘটনার তদন্ত করে দেখেছে। দেখা গিয়েছে, আটটি ঘটনায় ক্রিকেটারদের নাম উঠে এসেছে। তিনটি ক্ষেত্রে শাস্তি পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। আইসিসি কোনও নাম জানায়নি। কিন্তু এই প্রসঙ্গে একটা ছোট্ট তথ্য দেওয়াই যায়। গত বছরই পাকিস্তান সুপার লিগে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দশ বছরের জন্য নির্বাসিত হয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন ওপেনার নাসির জামশেদ। আইসিসি কর্তারা আরও জানাচ্ছেন, যখনই কোনও ম্যাচে এক তরফা খেলা হয়, তখনই গড়াপেটার অভিযোগ জানিয়ে ফোন আসতে শুরু করে। (বিশেষ করে রবিবারের ভারত-পাকিস্তানের মতো ম্যাচ হলে)  রিচার্ডসন বলছেন,"উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ হাতে না পেলে অবশ্যই আমরা কিছু করি না।"