সুখেন্দু সরকার


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হার্টে বাইপাস সার্জারি মানেই মনে ভয় ঢুকে যাওয়া, ''বাঁচবো তো?'' আশঙ্কার এই দোলাচলেই মানসিকভাবে হয়তো পিছিয়ে পড়েন অনেকেই। কিন্তু অস্ত্রোপচার নয়, একেবারে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পরেও সব আশঙ্কা দূরে সরিয়ে হৃদয়ের ছন্দে আপন গতিতে দৌড়ে চলেছেন রূপায়ণ রায়। শুধু দৌড় নয়, ম্যারাথনেও সাফল্যের সঙ্গে অংশ নিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করে ফেলেছেন এন্টালির রূপায়ণবাবু। TSK 25K Run-এ এবারও অংশ নিচ্ছেন তিনি।


এন্টালি সিআইটি-রোডের এলআইসির শীর্ষস্থানীয় কর্মী রূপায়ণ রায়। ২০১৬ সালে শ্বাসকষ্ট, কাশি সঙ্গে রক্ত-বমি আর একরাশ আবসাদ নিয়ে চিকিত্সকের দারস্থ হন তিনি। সেই সময় ধরা পড়ে কঠিন ব্যাধি। চিকিত্সকরা জানান তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হতে বসেছে, একেবারে শেষ পর্যায়। তড়িঘড়ি হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন না করলে আর বাঁচার কোনও উপায় নেই। কলকাতায় চিকিত্সকদের সঙ্গে আলোচনা করে চেন্নাইয়ে ডাঃ কে.আর বালাকৃষ্ণণের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সেখানেই ফর্টিস মালারে ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই তাঁর হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট হয়। তারপর ...


আরও পড়ুন - TSK 25K রানে এবার হাত না ধরেই দৌড়বেন দৃষ্টিহীন মহম্মদ আসিফ


অন্যের হৃদয়ে নতুন জীবন পেয়ে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পেয়ে গেলেন রূপায়ণ রায়। সঙ্গে ডাঃ বালাকৃষ্ণণের পেপটকে যেন বদলে গেল সবকিছু। রূপায়ণের শরীরে স্বাভাবিক ছন্দ পেল অন্যের হৃদয়, আর জীবনে নতুন দৌড় শুরু করলেন তিনি। শরীরকে সুস্থ রাখতে শরীরচর্চা প্রয়োজন কিন্তু সেখানেও রয়েছে নানা বিধি নিষেধ। কারণ,  প্রতিস্থাপনের পর হৃদযন্ত্র এমনভাবে শরীরে বসানো হয় যেখানে ব্যায়াম বা শরীর চর্চা, কিংবা ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তাই হালকা জগিং বা দৌড়ানো বরং অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। এরপরই ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার ভাবনা তাঁর মাথা চাড়া দেয়। চিকিত্সকদের পরামর্শ মতোই দৌড় শুরু করলেন। ২০১৭ সালে বিএসএফ-এর পাঁচ কিলোমিটার 'রান ফর মার্টায়ার'-এ অংশ নেন। সেই শুরু... তারপর গত বছর TSK 25K Run-এ পাঁচ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে এয়ারটেল হাফ ম্যারাথনে(২১ কিলোমিটার) অংশ নিয়ে চমক দেন তিনি। থেমে নেই রূপায়ণবাবু। এবার TSK 25K Run-এ পুরো ২৫ কিলোমিটারই দৌড়বেন তিনি। তবে প্রতিবারই লম্বা দৌড়ের আগে স্বাস্থ্যপরীক্ষা কিন্তু বাধ্যতামূলক।


আরও পড়ুন - TSK 25K RUN : শীর্ষে থাকার চ্যালেঞ্জ অবিনাশ-সুরিয়ার, এবার দৌড়বেন বাংলাদেশের ৬৭ বছরের 'যুবক'!


অন্যের হৃদযন্ত্রে তিনি বেঁচে আছেন, আজ দৌড়চ্ছেন কিলোমিটারের পর কিলোমিটার। এভাবেই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মধ্যে দিয়ে অন্যেরা বেঁচে থাকেন আর একজনের শরীরে। হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পরেও রূপায়ণবাবু যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা সত্যিই অন্যদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আর রূপায়ণবাবু বলছেন, " ... এভাবেও ফিরে আসা যায়। অন্যের হৃদযন্ত্রে আমি বেঁচে আছি, দৌড়চ্ছি। সুস্থভাবে জীবনযাপন করছি। আগামী দিনে অঙ্গদানে হয়তো অনেকেই এগিয়ে আসবেন। কারণ অন্যকে নতুন জীবন দিয়ে তাঁরা বেঁচে থাকবেন, অন্যের মধ্যে দিয়েই এগিয়ে নিয়ে যাবেন লক্ষ্যে..."