জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতের খেলার ইতিহাস যদি দেখা যায়, তাহলে একটা বিষয় ভীষণ স্পষ্ট, বিশ্বমঞ্চে জিমন্যাস্টিক্সের জন্য় কখনই ভারতীয়দের নাম উঠে আসেনি। তবে ২০১৬ সালের পর থেকে চিত্রটা যদিও বদলে যায়। সেবছর রিও অলিম্পিক্সে (Rio Olympics 2016) আগরতলার বঙ্গকন্যা দীপা কর্মকার (Deepa Karmakar) চমকে দিয়েছিলেন। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন দীপা। মহিলাদের ভল্ট ইভেন্টে প্রোদুনোভা ভল্টে সারা বিশ্বকে ভারতের নামটা জানিয়ে দিয়েছিলেন দীপা। যদিও অল্পের জন্য় পোডিয়াম ফিনিশ করতে পারেননি ব্রাজিলে। দীপা শেষ করেছিলেন চতুর্থ স্থানে। দীপার পর যদি কোনও এক জিমন্যাস্টের জন্য যদি ভারত স্বপ্ন দেখেছে, তাহলে তিনি প্রণতি নায়েক (Pranati Nayak)। আরও এক বাঙালি। যিনি খোদ এই বাংলার মেয়ে। ঝাড়গ্রামের ২৮ বছরের কন্যা ২০২১ টোকিয়ো অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। দীপার পর দ্বিতীয় ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। আবারও সেই প্রণতিই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। এক নয়, জোড়া সোনার! এবার মঞ্চটা এশিয়ান গেমস (Asian Games 2023)। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Asian Games 2023: ঘোড়া ছুটিয়ে সোনা জিতল ভারত, ৪১ বছর পর এশিয়াডে ইতিহাস


আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর প্রণতি আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের অলরাউন্ডের ফাইনালে এবং ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি ভল্টের ফাইনালে নামবেন। কারণ এই দুই ইভেন্টেই প্রণতি ফাইনালে উঠেছেন। চলতি এশিয়াডে প্রণতি ছাড়া আর কোনও ভারতীয় জিমন্যাস্টই নেই। কারণ দেশের আর কোনও জিমন্যাস্টই এশিয়াডের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেননি। এশিয়াডে নামার আগে প্রণতির প্রস্তুতিও সেরেছিলেন দুরন্ত মেজাজে। চলতি সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, প্রণতি ইন্টারন্যাশনাল জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন আয়োজিত, অ্যারোবিক্স জিমন্যাস্টিক্সে ভল্ট ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর হাঙ্গেরির জোম্বাথেলেতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যালেঞ্জ কাপে, গ্রিসের প্রতিদ্বন্দ্বীকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছিলেন প্রণতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার অসাধারণ জিমন্যাস্টের কৃতিত্বে গর্বিত হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ১১ দিনের বিদেশ সফরে যাওয়ার সময় লিখেছিলেন,  'আমি গর্বে ভরে যাচ্ছি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার তরুণী ও অসাধারণ জিমন্যাস্ট প্রণতি নায়েক বিশ্ব চ্যালেঞ্জ কাপে ব্রোঞ্জ জিতেছে।  হাঙ্গেরির জোম্বাথেলেতে যেটা হয়েছিল। এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ওকে আমার শুভেচ্ছা। আমাদের অ্যাথলিটরা ভারতকে গর্বিত করছে অসাধারণ সব পারফরম্যান্সে।'


প্রণতি ভুবনেশ্বরের জিমন্য়াস্টিক্স হাই-পারফরম্য়ান্স সেন্টারে নিয়মিত অনুশীলন করেন কোচ অশোক মিশ্রার তত্ত্বাবধানে। ২০১৪ সাল থেকেই অশোক ভারতীয় জিমন্য়াস্টিক্সে পরিচিত মুখ। ২০১৮ বিশ্বকাপে মেলবোর্নে ষষ্ঠ স্থানে শেষ করা প্রণতি ধীরে ধীরে দেশের জিমন্যাস্টিক্স সার্কিটে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। চার বছর আগে, জাকার্তা এশিয়াডে দীপার সঙ্গে একই দলে ছিলেন প্রণতি। ফাইনালে সাত নম্বরে শেষ করেছিলেন তিনি। ব্য়ক্তিগত ভাবে ভল্ট ফাইনালে শেষ করেছিলেন আটে। ২০১৯ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভল্টে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন প্রণতি। দীপা ও অরুণা রেড্ডির পর তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে ভল্টে আন্তর্জাতিক পদক জিতেছিলেন। প্রণতি কিন্তু অতি সাধারণ পরিবারের একটি মেয়ে। তাঁর বাবা একসময়ে বাস চালাতেন। ছয় বছর থেকেই প্রণতি জিমন্যাস্টিক্সের সঙ্গে যুক্ত। ২০০৩ সালে ট্রেনিংয়ের জন্য় কলকাতায় চলে এসেছিলেন প্রণতি। কোচ মীনারা বেগমই তাঁর দেখভালের সব খরচ সামলাতেন একটা সময় পর্যন্ত। ঝাড়গ্রাম থেকে উঠে এসে যেভাবে প্রণতি নিজের স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন, তা সত্যিই কুর্নিশ করার মতো। প্রতিটি বাঙালির গর্ব প্রণতি। আজ দেশকে দেখাচ্ছেন 'সোনালি' স্বপ্ন। দেখা যাক এবার প্রণতি কী করেন!



আরও পড়ুন: WATCH: বারাণসীতে ৪৫১ কোটির ক্রিকেট স্টেডিয়াম! মোদী-যোগীর অনুষ্ঠানে সচিন-কপিলরা
 




 

 

Loaded4.13%
 

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের, রইল AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেলের ঢোকার রাস্তা)