নিজস্ব প্রতিবেদন: খাতায় কলমে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে কোয়েসের চুক্তি শেষ হতে আর দিন ১৫ বাকি। কোয়েস আগেই জানিয়েছিল ৩১ শে মে চুক্তির শেষদিন। তারপর ইস্টবেঙ্গল ফুটবল টিমের কর্তৃত্ব ফের ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের হাতে। তাঁরা ধরেই নিচ্ছেন কোনও সমস্যা ছাড়াই ফুটবল দলে তাদের শেয়ার ক্লাবকে ফিরিয়ে দেবে কোয়েস। কিন্তু লাল-হলুদ কর্তারা যতই আনন্দে থাকুন, কোয়েসের সঙ্গে গাঁটছড়া ভাঙ্গার পর ক্লাবে নতুন কর্পোরেট আনা, অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্টে ওঠার মতোই কঠিন কাজ হতে চলেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কোয়েস সূ্ত্রের খবর, ইস্টবেঙ্গলকে নিজেদের নামে খেলতে দিতে আপত্তি নেই কোয়েসের। কিন্তু ফুটবল টিমের নামের আগে স্পনসরের নাম বসাতে গেলেই তারা শেয়ার হস্তান্তরের জন্য টাকা চাইতে পারে। জানুয়ারি মাসে মোহনবাগান-এটিকে গাঁটছড়া বাঁধার পর ইস্টবেঙ্গলের বড় কর্তা দাবি করেছিলেন নিজের দমে আইএসএল খেলবে লাল-হলুদ। নিজের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টার কসুর করেননি তিনি। ইনভেস্টর-স্পনসরের সঙ্গে মিটিংয়ের পর মিটিং করেছেন। ছুটে গেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এমনকি স্পনসরশিপের জন্য পৌঁছে গেছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা আইএসএল ফ্রাঞ্চাইজির কাছেও।


তবে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে দাঁড়িয়ে বলতেই হচ্ছে, আইএসএলে খেলার জন্য অপেক্ষা আরও বাড়তে চলেছে লাল হলুদ সমর্থকদের। সেটা বোধহয় বুঝে গেছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও। তাই মুখে যতই তাঁরা আশার বাণী শুনিয়ে সমর্থকদের মন জেতার চেষ্টা করুন, বাস্তব যে অন্য তা ভালোমতই জানেন। প্রথমত এই মরশুমে আইএসএল উদ্যোক্তাদের নতুন দল নেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই নেই।  এএফসি-র নিয়ম অনুসারে এই মরশুমে আইএসএলের এক-একটা দলের ২৭টা করে ম্যাচ খেলার কথা। তাই সেপ্টেম্বরের লিগ শুরু করতে চেয়েছিল ফেডারেশন। কিন্তু করোনার ধাক্কায় তা আর হয়ে উঠছে না। তাই FSDL-র হয়ে এএফসির কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে এআইএফএফ-কে। এই অবস্থায় নতুন দল নিয়ে সমস্যা বাড়াতে নারাজ তারা।


ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও জানেন এর আগে যতবারই আইএসএলে খেলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাঁরা গোঁয়ার্তুমি করে তা হাতছাড়া করেছেন। এখন মোহনবাগান আইএসএলে চলে যাওয়ায় তাঁরা পড়েছেন ফাঁপড়ে। কিন্তু মোহনবাগান যেভাবে দলের কর্তৃত্ব স্পনসরের হাতে তুলে দিয়েছে, তা তাঁরা করতে রাজি নন। আসলে বিজয় মালিয়া দুই প্রধানের অভ্যাসই খারাপ করে দিয়েছিলেন। টাকা তিনি ঢালতেন। আর ছড়ি ঘোরাতেন ক্লাবকর্তারা। সেই অভ্যাস থেকে বাগান কর্তারা বেরিয়ে এলেও ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বেরোতে পারেননি।


শেষ চেষ্টা হিসাবে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। সূত্রের খবর ইস্টবেঙ্গলকে আই এস এল খেলানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথাও বলেছেন ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেলের সঙ্গে। তারপর জল মাপতে চেয়ে ফেডারেশন সভাপতির কাছে লাল-হলুদের চিঠিও পৌঁছে গেছে। তবে সেই চিঠির এখনও কোনও উত্তর দেননি প্রফুল্ল প্যাটেল। এমনকি তাঁর তরফ থেকে ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল খেলাতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এআইএফএফ কর্তাদের কাছে কোনও বার্তাও এসে পৌঁছয়নি।


ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অবশ্য এখন নিশ্চিন্ত মনে আই লিগে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারন তাঁরা মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নেওয়ার পরও আইএসএলের শিকে না ছিঁড়লে, তার দায় আর তাঁদের ওপর বর্তাবে না। তাই আই লিগের জন্য ফেডারেশনের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। শেহনাজ,রফিক, লিংডোর মত ফুটবলারদের সই করাচ্ছেন। বিদেশি কমার পর আই লিগের জন্য এই ফুটবলাররাই যথেষ্ট বলে তাঁদের ধারনা। আর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাওয়ায় অন্তত আই লিগে খেলার মতো স্পনসর পেয়ে যাবেন বলে আশাবাদী। সেই স্পনসরের সঙ্গে চিরপ্রতিপক্ষের যোগাযোগ থাকলেও আপত্তি থাকবে না তাদের। তাই বলাই যায় ইস্টবেঙ্গল এর কাছে আগামী দু-তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


অনেকেই বলছেন করোনার ধাক্কা ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সমস্যায় ফেলে দিল। আবার উল্টো দিক দিয়ে দেখলে দেখা যাবে করোনা বাড়তি সময় এনে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। এই পরিস্থিতি তৈরি না হলে এই সময়ে নতুন মরশুম শুরু হওয়ার তোড়জোড় পড়ে যেত। তবে করোনার হামলার মতো নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতি না বদলালে এই মরশুমে অন্তত কলকাতা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবকে খেলতে হবে দুটো আলাদা লিগে।


 


আরও পড়ুন-অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঁচ টেস্টের সিরিজ নিয়ে নিজের মতামত জানিয়ে দিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট