West Bengal Lok Sabha Elections 2024: বন্ধ রেশন, পান না বার্ধক্য ভাতাও! হতাশ ১০৫ বছরের পরেশচন্দ্র...
West Bengal Lok Sabha Elections 2024: পরেশবাবু স্বাধীনতাসংগ্রামী নন। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে থেকে ব্রিটিশ তাড়ানোর কাজে অনেক কিছুই করেছেন তিনি তাঁর যৌবনে। চাষবাস করতেন, বাড়ি তৈরির কাজ করতেন। সব মিলিয়ে ভালই চলত। কিন্তু শেষ বয়সে এসে আক্ষেপ-- কিছুই পেলেন না তিনি!
কিরণ মান্না: শরীর খুব ভাল নেই। কিন্তু বিশ্রাম নিতে চান না। বরং কাজের মধ্যেই আরাম পান শতায়ু বৃদ্ধ। তীব্র গরমের মধ্যেও তাই বাড়ির বাইরে বসে শুকনো নারকেল পাতা ছাড়াচ্ছেন। হলদিয়ার কিশমত শিবরামনগর গ্রামের বাসিন্দা ১০৫ বছর বয়সী পরেশচন্দ্র বেতাল। বৃদ্ধের দাবি, তাঁর রেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, মৃত্যুকালে পৌঁছে গেলে বার্ধক্যভাতা পান না! বলছেন, অনেক ছোটাছুটি করেছেন 'দুয়ারে সরকারে'র ক্যাম্পে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এতদিন ভোট দিয়ে এসেছেন, অথচ সেভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা কিছুই পাননি বলেই অভিযোগ তাঁর। তাই আর ভোট দিতে চান না। দুঃখ করে বলেন, 'কাকে ভোট দেব? কেউ তো আর আমার কথা রাখল না!'
আরও পড়ুন: মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই ডুবল পথঘাট! যানজট, ভোগান্তি সত্ত্বেও দাবদাহমুক্তিতে খুশি সকলেই...
জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ এক সময়ে রেশন পেতেন। কিন্তু এখন রেশন কার্ড ডিজিটাল। রেশন তুলতে হলে হাতের আঙুলের ছাপ চাই। বয়সের জন্য হাতের সব আঙুল বেঁকে গিয়েছে পরেশচন্দ্রের। আঙুলের ছাপ আর দিতে পারেন না। আর হাতের ছাপ দিতে পারেন না বলেই রেশন পান না। একই কারণে পান না বার্ধক্য ভাতাও। ব্যাংকের বই নতুন করে না খুলতে পারায় বার্ধক্য ভাতা মিলছে না তাঁর।
বৃদ্ধের দুই ছেলে, দুই নাতি ও এক বৌমাকে নিয়ে সংসার। ২০১৩ সালে এক রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পরেশবাবুর বড় ছেলে নারায়ণ বেতালের। ছোট ছেলে গোবিন্দ বেতালের স্ত্রীর মৃত্যু হয় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে। ছোট বৌমার চিকিৎসা করাতে গিয়েই জমি-জমা বিক্রি করতে হয়েছে। অনেক টাকাও খরচ হয়ে গিয়েছে। নিজেদের একটি ছোট্ট পানের বরজ দেখাশোনা করেন ছোট ছেলে। দুই নাতি হলদিয়ায় এক বেসরকারি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। এভাবে কোনও রকমে চলে বৃদ্ধের সংসার।
আরও পড়ুন: Yellow Alert: রাজ্যে জারি এবার হলুদ সতর্কতা! কত বেগে বইবে হাওয়া? ঝড়-জলই-বা কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠবে?
পরেশবাবু স্বাধীনতাসংগ্রামী নন। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে থেকে ব্রিটিশ তাড়ানোর কাজে অনেক কিছুই করেছেন তিনি তাঁর যৌবনে। পরে যতদিন কর্মক্ষম ছিলেন ততদিন চাষবাস করতেন, বাড়ি তৈরির কাজ করতেন। সব মিলিয়েই চলত। কিন্তু শেষ বয়সে এসে যেন কিছুই পেলেন না তিনি! আক্ষেপে ভরা শতায়ু বৃদ্ধের মন! তিনি মনে-মনে তাই ঠিক করেছেন, যদি কখনও তাঁর কেন্দ্রের প্রার্থীদের সামনে পান তাঁদের বলবেন-- 'আমি আর কতদিন আর বাঁচব! বার্ধক্য ভাতাটা অন্তত আমাকে দেওয়া হোক!'