`কাজটা থাকবে তো?` বিষে ভরা বিশে এক অন্য শ্রমদিবসের মুখোমুখি শ্রমিকরা
করোনার মারণ গ্রাসে আজ চাকরি খোয়ানোর পথে বহু শ্রমিক, ঘরবন্দি দশা, অন্ধকার ভবিষ্যত্, রোজগারপাতিহীন দিন-হতাশায় ঘিরে ধরেছে শ্রমিকদের। দেশের বেশিরভাগ কলকারখানাগুলি আজ বন্ধ, কাজ হচ্ছে না খনি, ইটভাটাগুলিতে। তাই যাঁদের স্বার্থে শ্রমিক দিবস, তাঁদের জীবনই আজ বিপন্ন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেঁচে থাকার লড়াই, অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের দিন আজ। আজ তাঁদের দিন, যাঁরা সংসারের চাল নুন কেনার গার্হস্থ্য অনুশাসনে প্রতিনিয়ত লড়াই চালাচ্ছেন, রক্ত জল করছেন! শ্রমিকের অধিকারের দিন...আজ শ্রমিক দিবস। হ্যাঁ, প্রতি বছরই এই দিন আসে. চলে যায়। উদযাপিত হয় বটে, কিন্তু আদৌ কি নিজেদের অধিকার খুঁজে পান শ্রমিকরা? শ্রমজীবী মানুষরা স্বার্থকতা খুঁজে পান না এই দিনের। কারণ এই দিনটা তাঁদের কাছে আর পাঁচটা দিনের মতনই। বরং বলতে গেলে, এবার এক অন্য শ্রমিক দিবস। গোটা বিশ্ব এক অন্য শ্রমিক দিবসের দেখা পাচ্ছে। করোনার মারণ গ্রাসে আজ চাকরি খোয়ানোর পথে বহু শ্রমিক, ঘরবন্দি দশা, অন্ধকার ভবিষ্যত্, রোজগারপাতিহীন দিন-হতাশায় ঘিরে ধরেছে শ্রমিকদের। দেশের বেশিরভাগ কলকারখানাগুলি আজ বন্ধ, কাজ হচ্ছে না খনি, ইটভাটাগুলিতে। তাই যাঁদের স্বার্থে শ্রমিক দিবস, তাঁদের জীবনই আজ বিপন্ন।
শ্রমিক দিবসে ছুটির দিন হওয়ায় প্রবল দাবদাহের মধ্যে যাঁরা ইটভাটায় কাজ করেন, বা যাঁরা সারাদিনের রোজগেরে রাতের হাঁড়ি চড়ান, তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ত প্রতিবছরই। 'এই দিনটায় ঘরে এল না দুটো পয়সাও'... আওড়াতে থাকেন বুলি! আর এই বছর তো....থাক, তা আর না বলাই শ্রেয়!
'শেষবারের মতো দেখতে চাই ওকে!', উত্তরপ্রদেশে মৃত স্বামীর কাছে যাওয়ার অনুমতি পেল না বর্ধমানের সুজাতা
সালটা ছিল ১৮৮৬। শ্রমিকেরা আট ঘণ্টা কাজের অধিকারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন।
শিকাগোর হে মার্কেটের সামনে বিশাল শ্রমিক জমায়েত ও বিক্ষোভ হয়েছিল। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১১ জন শ্রমিক। কিন্তু শেষে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। শ্রমিকদের দিন হিসাবে চিহ্নিত হয় দিনটি। সেদিন তাঁরা নিজেদের অধিকার লড়াই করে আদায় করে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবছর বিষেভরা বিশ সালে শ্রমিকরা কীভাবে পারবেন অনিবার্যকে হার মানিয়ে লড়াইয়ে জিততে? আদৌ কি পারবেন অন্ন সংস্থানের উত্সকে বাঁচিয়ে রাখতে? একগুচ্ছ প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে এবছর শ্রমিক দিবসের আবহে।
রাজ্য, কেন্দ্র-দুই সরকারই অবশ্য বারবার আবেদন জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে যাতে কোনও কর্মী, শ্রমিক কাজ না হারান! কলকারখানা, কিংবা চাকরির প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে সরকারি আবেদনের গুরুত্ব কতটা, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ এসবের মধ্যেও সম্প্রতি আসানসোলের একটি কারখানা কর্মী ছাঁটাই করেছে।
প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বহু। শ্রমিকদের আদৌ কোনও অধিকার রয়েছে কিনা, তবুও বলা যাক...'অমর হোক শ্রমিক দিবস'