গনি গড়ে বড় ভাঙনের মুখে কংগ্রেস! তৃণমূলমুখী ২ হেভিওয়েট সাংসদ?
`অপেক্ষা করুন আর দেখুন। ক্রমশ প্রকাশ্য।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : তৃণমূল কংগ্রসে যোগ দিচ্ছেন মৌসম বেনজির নূর ও আবু হাসেম খান চৌধুরী? মালদার অলিতে-গলিতে এখন এই একটা প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে। কান পাতলেই কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে, ঘাসফুলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা নাকি এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই দু'পক্ষ নিজেদের মধ্যে একদফা আলোচনার পর্ব সেরে ফেলেছেন বলে খবর।
কংগ্রেসের গড় মালদা। আর সেই মালদায় 'কংগ্রেস' বলতেই সবাই একডাকে চেনে গনিখান চৌধুরীকে। আর এবার সেই গনিখান দুর্গেই ফাটলের ইঙ্গিত। কংগ্রেসের দুর্গ দখলের পথে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে সারা রাজ্যে যখন ঘাসফুল ঝড়, তখনও গনিখান ভিটেতে সেভাবে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। মালদায় কংগ্রেসের গড় ছিল অটুট। এরপরই মালদা জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আসে তৃণমূল।
এরপর দক্ষ সংগঠক শুভেন্দু অধিকারী ২ বছর ধরে মালদার মাটি কামড়ে পড়ে থেকে তলে তলে ঘাসফুলের বীজ বপন করেন। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধিকারীর সেই পরিশ্রমের প্রমাণও মিলেছে হাতেনাতে। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলাপরিষদ, সর্বত্রই ঘাসফুল ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছে সব বিরোধীরা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে জেলা পরিষদে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। সেখানে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা মাত্র ২। একই ছবি ধরা পড়েছে পঞ্চায়েতে সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফলেও। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৫৩ ও ৩৯৮টি আসন। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে যথাক্রমে ২৫৪ ও ১১১৪টি আসন।
এই ফলাফলই বলে দিচ্ছে যে, দীর্ঘদিনের কংগ্রেস গড়ে 'খেলা' বেশ খানিকটা ঘুরে গিয়েছে। পালের হাওয়া এখন অন্যদিকে। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, হাওয়াবদলের এই ইঙ্গিত হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন গনিখানের ভাগ্নি মৌসম বেনজির নূর ও ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরীও। সামনেই ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন, আর তাই বড় হয়ে উঠেছে অস্তিত্বরক্ষার লড়াই।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মৌসম বেনজির নূর ও আবু হাসেম খান চৌধুরীর সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে শাসকদলের। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে মালদা জেলায় কংগ্রেসে বড়সড় ভাঙনের আভাস মিলেছিল। এরপরই সামনে এল এই খবর। মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, "কেউ থাকবে না। অপেক্ষা করুন আর দেখুন। মুর্শিদাবাদের মতো মালদাতেও প্রথম শ্রেণির জনপ্রতিনিধিরা মমতাদির সঙ্গে আসতে চান। তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নের নৌকায় সওয়ার হতে চান। তাঁরা আমার সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছে। ক্রমশ প্রকাশ্য।"