পড়শিদের মদতেই স্ত্রীর পরকীয়া, সন্দেহে ঘরের সামনে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে খুন ৩ জনকে!
সেই তারে বিদ্যুত্ সংযোগও করে দেন। এরপর পরিকল্পনা মাফিক নিজের ঘরের বারান্দায় আগুন জ্বালিয়ে দেন রবিউল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ভয়ঙ্কর ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বোগা নোয়াপাড়ায়। ঘরের দরজায় বিদ্যুতের তার 'জড়িয়ে' ৩ জনকে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বিদ্যুত্পৃষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন আরও ৬ জন। আহতরা সবাই বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।
অভিযুক্তের নাম রবিউল। আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা রবিউল বোগা নোয়াপাড়ার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রাজমিস্ত্রি রবিউলের স্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না। ওই এলাকারই কোনও যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন রবিউল। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। গত ৩ দিন ধরে নিখোঁজ রবিউলের স্ত্রী। কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে, রবিউলের স্ত্রী শেখ রোহিত নামে এক ভাড়াটিয়ার সঙ্গে চলে গিয়েছেন।
এরপরই এদিন ভোর রাতে ঘটে ঘটনাটি। রবিউল যে এলাকায় ভাড়া থাকতেন, সেখানে আরও ২০টি পরিবার ভাড়া রয়েছে। অভিযোগ, এদিন ভোর রাত ৩টে নাগাদ এলাকার প্রতিটি ঘরের দরজার সামনে বিদ্যুতের তার ফেলে রাখেন রবিউল। সেই তারে বিদ্যুত্ সংযোগও করে দেন। এরপর পরিকল্পনা মাফিক নিজের ঘরের বারান্দায় আগুন জ্বালিয়ে দেন রবিউল। নিজেই নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে চিত্কার জুড়ে দেন রবিউল। রবিউলের আর্ত চিত্কার শোনামাত্রই তড়িঘড়ি পড়শিরা দরজা খুলে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন। আর তাতেই বাঁধে বিপত্তি। রবিউলের পরিকল্পনা মতো দরজা খুলে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করতেই, দরজায় জড়ানো তারে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হন ৩ জন। জখম হন আরও ৬ জন।
এদিকে ততক্ষণে হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পালানোর চেষ্টা করে রবিউল। ট্রেন ধরতে আকড়া স্টেশনে আসে। এদিকে খালি পায়ে রবিউলকে দৌড়তে দেখে সন্দেহ হয় ওই এলাকার একটি বিয়েবাড়ির লোকজন। তাঁরাই ধরে ফেলেন রবিউলকে। বেধড়ক মারধরের পর পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। গণধোলাইয়ের জেরে পরে হাসপাতালে মৃত্য়ু হয় রবিউলের।
আরও পড়ুন, প্রাণপ্রিয় ২ পোষ্য সারমেয়কে গুলি করে খুনের পর বাড়ির দোনলা বন্দুকে আত্মঘাতী মালিকও!
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মারধরের সময় অপরাধের কথা কবুল করে অভিযুক্ত। পাশাপাশি আরও দাবি করে, তাঁর স্ত্রী যখন-তখন বেরিয়ে যেতেন। সাংসারিক অশান্তি সমাধানে সালিশিও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু স্ত্রীকে 'আটকানোর' জন্য কোনও চেষ্টা-ই করেননি পড়শিরা। আর তাতেই তাঁর রাগ হয়ে যায়। পড়শিরা তাঁর স্ত্রীকে মদত দিচ্ছে বলে সন্দেহ হয় তাঁর। আর সেকারণেই বদলা নিতে এই পরিকল্পনা করেছিলেন রবিউল।