হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কলে আত্মঘাতী একাদশ শ্রেণির ছাত্র, গ্রেফতার প্রেমিকা
রাতেই যখন দরজার কড়া নাড়াল ছেলের বন্ধুরা, তখনই যেন এক মুহূর্তের জন্য গোটা পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল মায়ের কাছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: হোয়াটস অ্যাপের ভিডিও কলটা তখনও কাটেনি। বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে ছেলের চড়া গলার আওয়াজ শুনেই আঁচ করতে পেরেছিলেন হয়তো প্রেমিকার সঙ্গে কোনও সমস্যা হয়েছে। কিন্তু ‘মুক্তমনা’ মা একাদশ শ্রেণির ছেলের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করতে চাননি। আর তাতেই হল কাল। রাতেই যখন দরজার কড়া নাড়াল ছেলের বন্ধুরা, তখনই যেন এক মুহূর্তের জন্য গোটা পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল মায়ের কাছে। সম্পর্কের টানা পোড়েনের কারণে হোয়াটস অ্যাপে প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কল করে আত্মঘাতী একাদশ শ্রেণির ছাত্র। মর্মান্তিক এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বারুইপুরের শালেপুরে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
আরও পড়ুন: এই মুহূর্তে হাইকোর্টের দেওয়া একটা রায়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ৫০ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যত্
বারুইপুরে শালেপুরের বাসিন্দা সুরজ রায় পদ্মপুকুর হাইস্কুলের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র। এক মাস আগে সোনারপুরের এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সম্পর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। সুরজ ও ওই ছাত্রীর পরিবার তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে আঁচ করতে পারে। কিন্তু এক মাসের প্রেমের পরিণতিই যে এত মর্মান্তিক হবে, তা ভাবতে পারেননি কেউ।
বুধবার রাত এগারোটা নাগাদ প্রেমিকার সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল করেছিল সুরজ। কিন্তু কোনও একটা বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তারপরই হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল অন রেখেই গলায় ফাঁস লাগায় সুরজ। সেই দৃশ্য দেখে ছাত্রীটি তার দিদিকে বিষয়টি জানায়। ছাত্রীর দিদি সুরজের বন্ধুদের ফোন করে খবর দেন। সুরজের বন্ধুরা যতক্ষণে তার বাড়িতে এসে খবর দেয়, ততক্ষণে সব শেষে।
সুরজকে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তার মা ও বন্ধুরা। ভিডিও কল তখনও অন করাই ছিল। গোটা দৃশ্য মোবাইলবন্দি হয়েছে। বারুইপুর থানায় ছাত্রীর নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুরজের মা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
তবে এসবের পরও ছাত্রছাত্রীর পরিবারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সুরজের মা যখন আগেই ছেলের চিত্কার শুনে কিছু বুঝতে পেরেছিলেন, তখনই তাঁর সাবধান হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন মনোবীদরা।