Blood Sport: মুরগি `খুন করা`র অভিযোগ উঠল হাঁসের বিরুদ্ধে! থানায় ডেকে পাঠানো হল অভিযুক্তকে
বিশ্বের ইতিহাসে মুরগি-লড়াই অন্তত ৬০০০ বছরের পুরনো!
নিজস্ব প্রতিবেদন: মুরগি-লড়াই খুব প্রাচীন এক প্রথা। এটি একটি খেলা। তবে তা রক্তাক্ত। খেলাটি 'ককপিট' নামের একটি জায়গায় ঘটে। বক্সিংয়ের রিংয়ের মতো এটিই যুদ্ধোদ্যত দুই মুরগির লড়াইক্ষেত্র। এই খেলার প্রভূত জনপ্রিয়তা। লোকসংস্কৃতির সঙ্গে এটি নিবিড় ভাবে সংযুক্ত। পশ্চিমবঙ্গে অনেক জায়গাতেই এই লড়াইয়ের প্রচলন আছে। তবে রাঢ় অঞ্চলে এটি বহু কাল ধরেই এক আবশ্যিক প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের ইতিহাস ধরলে মুরগি-লড়াই অন্তত পক্ষে ৬০০০ বছরের পুরনো বিষয়।
দুই মুরগির লড়াই না হয় হল! কিন্তু তাই বলে একটি হাঁস ও একটি মুরগির মধ্যে লড়াই? এমন আজব কথা শোনা গিয়েছে নাকি কোথাও?
গিয়েছে বইকি! কলকাতা থেকে খুব দূরেও নয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কাশীপুর অঞ্চলে একটি মুরগি ও একটি হাঁসের মধ্যে ঘটে গিয়েছে প্রাণান্তকর এক লড়াই। তাতে মারা গিয়েছে মুরগিটি। বিষয়টি এক ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে এখানেই শেষ হতে পারত। হয়নি। কেননা, এখানে হাসঁ-মুরগির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে মানুষও। জড়িয়ে পড়েছে কাশীপুর অঞ্চলের একটি পরিবার। বলা হচ্ছে, এই ঘটনায় নাকি আসলে ভাইপো'র হাঁস 'খুন করল' কাকার মুরগিকে! অভিযোগ অন্তত তেমনই। এবং এই মর্মে আজ মঙ্গলবার অভিযোগও দায়ের হয়েছে কাশীপুর থানায়।
ঠিক কী ঘটেছিল?
অভিযোগ, মোটেই পাঁচটি সাধারণ মৃত্যুর মতো নয় এই বিষয়টি। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই প্রতিবেশী ভাইপো চক্রান্ত করে নিজের হাঁস দিয়ে তাঁর সাধের মুরগিটিকে মেরে ফেলেছেন। আর তাই এর সুবিচার চেয়ে সটান কাশীপুর থানায় হাজির হয়েছেন কাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাশীপুর থানার চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের বামুনিয়া গ্রামের বদ্যিপাড়ায় বাড়ি মহম্মদ আলি মোল্লার। স্ত্রী তসলিমা বিবি ও এক পুত্রসন্তান ছাড়া তাঁর সংসারে রয়েছে দুটি গরু, কয়েকটি মুরগি। অত্যন্ত যত্ন নিয়েই তিনি মুরগি প্রতিপালন করছেন।
মহম্মদ আলি মোল্লার অভিযোগ, 'আমার বাড়ির পাশে আমার ভাইপো সরিফুল মোল্লার বাড়ি। আমার মুরগি পোষা দেখে ভাইপো হাঁস পুষছে। হাঁসগুলি খুবই হিংস্র। আমার মুরগি উঠানে ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখলেই হাঁসগুলি তেড়ে আসে। ভাইপো ও তাঁর স্ত্রী এর জন্য কোনও ব্যবস্থাও নেন না। সোমবার দুপুরে ভাইপোর একটি হাঁস আমাদের বাড়িতে এসে আমার মুরগিকে আক্রমণ করে, ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। ভাইপো তখন সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘটনাটিতে কোনও বাধা দেয়নি। অনেক চেষ্টা করেও পরে আমার আহত মুরগিটিকে বাঁচাতে পারিনি আমি। এ নিয়ে ভাইপোকে বলতে গেলে সে অকথ্য গালাগাল করে। শুধু তাই নয়, আমার বাকি মুরগিগুলিকেও হাঁস দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ও। আমি খুবই আতঙ্কে আছি।'
সন্ধ্যায় বৃদ্ধ বিষয়টি নিয়ে পাড়ার মুরব্বিস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। স্থানীয় উপ প্রধানের কাছেও যান। কিন্তু তাঁরা বিষয়টিতে কোনও সমাধানসূত্র বের করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। তখনই বৃদ্ধ কাশীপুর থানায় এসে সোজাসুজি থানার বড়বাবুর কাছে অভিযোগ জানান।
মহম্মদ আলি মোল্লা দুঃখ করে বলেন, কয়েকদিন পরেই মুরগিটা ডিম পাড়ত। টানা দু'বছর কম করে কয়েকশো ডিম দিত এটি। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।
বৃদ্ধার অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে কাশীপুর থানায় মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয় অভিযুক্ত সরিফুল মোল্লাকে। দু'দিনের মধ্যে তাঁকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Deer Rescued: ঘিরে ধরেছিল কুকুরের দল, চালসায় উদ্ধার পূর্ণবয়স্ক সম্বর হরিণ