হাসপাতালেই অন্নপ্রাশন! আদরের `গোলুমোলু`র মুখে ভাত তুলে দিলেন ডাক্তার`মামা`
`গোলুমোলু`র অন্নপ্রাশন আজ। লাল ধুতি-পাঞ্জাবী, মাথায় পাগড়ি, মালা, চন্দনে সেজেছে গোলুমোলু। আপাতত ওর ঠিকানা আসানসোল জেলা হাসপাতাল। শুক্রবার অন্নপ্রাশন হল সেখানেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন : 'গোলুমোলু'র অন্নপ্রাশন আজ। লাল ধুতি-পাঞ্জাবী, মাথায় পাগড়ি, মালা, চন্দনে সেজেছে গোলুমোলু। আপাতত ওর ঠিকানা আসানসোল জেলা হাসপাতাল। শুক্রবার অন্নপ্রাশন হল সেখানেই।
মঙ্গলদীপ, ধূপ, শঙ্খ, ধান-দুর্বা। আয়োজন ছিল এলাহি। প্রথমবার ভাত খাবে যে গোলুমোলু। মেনুতে ভাত, আলু ভাজা, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, কুমড়ো ভাজা, ঢেঁড়শ ভাজা, মাছ ভাজা, দু'রকমের তরকারি আর পায়েস। তৈরি গোলুমোলুও। লাল ধুতি-পাঞ্জাবী পরে মাথায় পাগড়ি বেঁধে, গলায় গোরের মালা পরে মিষ্টি মিষ্টি হাসিতে কোলে কোলে হাজির সে। কিন্তু এ কী? অন্নপ্রাশনে অতিথিদের সবাই যে নার্সের পোশাক পরে? আসলে গোলুমোলুর ঠিকানাই যে এখন হাসপাতাল। আসানসোল জেলা হাসপাতাল।
আরও পড়ুন- পরিবার কোন্দলে নাক গলাতে গিয়ে নাক কাটা গেল বাড়ির মেয়ের
মাস পাঁচেক আগে এক মানসিক ভারসাম্যহীন অন্তঃসত্ত্বাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে এই হাসপাতালেই ভর্তি করে যান কয়েকজন ব্যক্তি। তাঁরই ছেলে গোলুমোলু। মা সুস্থ নন। বাড়িঘরের ঠিকানাও মনে নেই। এতদিন তাই হাসপাতালেই বেড়ে উঠছে গোলুমোলু। চিকিত্সক থেকে নার্স, সকলের অত্যন্ত আদরের শিশু গোলুমোলু। পরম আদরেই নামটাও ওঁদেরই দেওয়া। শুক্রবার ৬ মাসে পড়ল গোলুমোলু। এদিনই তাই অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থা করেছিলেন চিকিত্সক-নার্সরা।
হাসপাতালের সুপারের হাতে পায়েস খেয়ে ভাত খাওয়া শুরু করল সে। আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না চিকিত্সক থেকে নার্সরা। চোখে জল আসার আর একটা কারণও রয়েছে যে। আগামী দিনে হয়তো চাইল্ড লাইন হোমে পাঠিয়ে দিতে হবে গোলুমোলুকে। কাছ ছাড়া করতে হবে খুবই কাছের হয়ে ওঠা শিশুটিকে।