`কর্ণাটকে খুঁটিপুজো, মহেশতলায় মহালয়া, দশমী হবে দিল্লিতে`
দেশজুড়ে ৪টি লোকসভা ও ১১ টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েতে সবুজ ঝড়ের পর এবার মহেশতলা বিধানসভা উপনির্বাচনেও অব্যাহত তৃণমূলের বিজয়রথ। আর তারপরই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে চাঁছাছোলা ভাষায় একহাত নিলেন পদ্মশিবিরকে।
"কর্ণাটকে খুঁটিপুজো হয়েছে। মহেশতলার জয় দিয়ে মহালয়ার শুরু। এবার দশমী হবে দিল্লিতে।" মহেশতলা বিধানসভা উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় হাঁকিয়ে সদর্পে ঘোষণা করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ডায়মণ্ডহারবার সাংসদ। ২৮ মে সারা দেশে ৪টি লোকসভা ও ১১টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সবকটি কেন্দ্রেরই ফল ঘোষণা হয়। এদিন ভোটগণনা শুরু হতেই দেখা যায়, দেশজুড়ে মোদী ঝড় স্তিমিত, বরং প্রায় সর্বত্রই জোরালো হচ্ছে বিরোধী কণ্ঠস্বর। প্রত্যাশামতোই এমন ফলাফলে অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা উত্তরপ্রদেশের কৈরানা। যোগীরাজ্যের এই লোকসভা আসনে বিজেপিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন আরএলডি প্রার্থী। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা-গোন্ডিয়া লোকসভা আসনেও এগিয়ে শরদ পাওয়ারের এনসিপি। অন্যদিকে, বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে কর্নাটকের রাজরাজেশ্বরী নগর, পঞ্জাবের শাখকোট, মহারাষ্ট্রের পালাস কাদেগাঁও এবং মেঘালয়ের আম্পাতিতে জয় হাসিল করেছে কংগ্রেস। কেরলের চিঙ্গানুরে জয়ী সিপিএম। ঝাড়খণ্ডের সিল্লিতে জয় পেয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। গোমিয়েতেও এগিয়ে জেএমএম। বিহারের জোকিহাটে জয়ী আরজেডি। উত্তরপ্রদেশে কৈরানা লোকসভা আসনের সঙ্গে বিজেপির হাতছাড়া হচ্ছে নূরপুর বিধানসভা আসটিও। সেখানে জয়ের পথে সমাজবাদী পার্টি। বিজেপির জন্য স্বস্তি এনে দিয়েছে শুধু নাগাল্যান্ড ও মহারাষ্ট্রের পালগড় লোকসভা এবং উত্তরাখণ্ডের থারালি বিধানসভা আসনটি।
দিকে দিকে বিরোধীদের এই ভালো ফলকে উল্লেখ করেই এদিন বিজেপিকে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেও ঠিক এভাবেই গেরুয়া শিবিরের পরাজয় হবে বলে সাফ ঘোষণা করেন আত্মবিশ্বাসী অভিষেক। যার স্পষ্ট ইঙ্গিত তাঁর এই মন্তব্যেই, এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
প্রসঙ্গত, কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরতে পরতে নাটকের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। ফল ঘোষণার পর বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপি সরকার গড়ার আহ্বান পেলেও, দু'দিনের মাথায় পিছু হঠতে বাধ্য হয় গেরুয়া শিবির। আস্থাভোটের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করতে না পেরে শপথগ্রহণের ২ দিনের মাথাতেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন বি এস ইয়েদুরাপ্পা। এরপরই সরকার গড়ে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জেডিএস নেতা কুমারস্বামীর শপথগ্রহণের দিন বেঙ্গালুরুতে এক অবিজেপি শক্তির 'সমাবেশ'-এর সাক্ষী থাকে সারা দেশ। উল্লেখ্য, এর আগে উত্তরপ্রদেশের ফুলপুর ও গোরখপুর লোকসভা আসনে উপনির্বাচনেও জয় হাসিল করে নিয়েছিল সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির জোট।
আরও পড়ুন, মহেশতলায় ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস
এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর সেই প্রেক্ষিতে অভিষেকের এই মন্তব্য অবিজেপি শক্তি দ্বারা দিল্লি দখলের হুঙ্কার হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল-