সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী:  রসগোল্লার বাংলার। এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর খুব স্বাভাবিকভাবেই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পরাণের পানতুয়ার রাজ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি  তুলল গ্রাহক থেকে মালিকপক্ষ।  ইতিমধ্যে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পরাণের ক্ষীরের পানতুয়া জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন শহরে পাড়ি জমিয়েছে।  রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী  জ্যোতি বসু থেকে শুরু করে হাল আমলে নেতা মন্ত্রীরাও কাটোয়ার পরাণের পানতুয়ার স্বাদ নিয়েছেন। শোনা যায় 'নিশিপদ্ম' ছবির শুটিংয়ের  সময় বাঙালির হার্টথ্রব উত্তম কুমার এই পরাণের পানতুয়া খেয়েছিলেন। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে পরাণের পানতুয়ার দোকানে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


শুরু হয়েছিল সেই ১৯০০ শতকের একদম গোড়ার দিকে। অবিভক্ত বাংলাদেশ থেকে রুটিরুজির টানে ফরিদপুর জেলার মাদারিপুর এলাকার হালুইকর সুরেন্দ্রনাথ কুণ্ডু বর্ধমানের কাটোয়ায়  গঙ্গা তীরবর্তী বারোয়ারিতলায় এসে ছোট্ট মিষ্টির দোকান শুরু করেন। দোকানে পাওয়া যেত  মুরুলি, অমৃতি ও ক্ষীরের পানতুয়া। বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে মিঠাইয়ের  বরাবর একটা আলাদা জায়গা ছিল। কালক্রমে সুরেন্দ্রনাথ মুরুলি, আমৃত তৈরি বন্ধ করে গ্রাহকদের চাহিদায়  শুধুই লম্বা সাইজের  ক্ষীরের পানতুয়া  তৈরি করতে শুরু করল।  বাংলাদেশ থেকে বিশেষ গোপন ‘রেসিপি’ যুক্ত এই ক্ষীরের পানতুয়া আকারেও বদল হয়ে এখন কাটোয়ার পরাণের পানতুয়া হিসাবে পরিচিতি।


আরও পড়ুন- রসগোল্লা বাংলারই, ওড়িশাকে হারিয়ে সত্ত্ব পেল পশ্চিমবঙ্গ


কাটোয়ার পুর এলাকার ১৭ নং ওয়ার্ডের বারোয়ারিতলায় দোকানের সাইনবোর্ডে  ক্ষীরের পানতুয়ার লেখা থাকলেও এলাকার মানুষ পরাণের পানতুয়ার দোকান  নামেই চেনেন। সুরেন্দ্রনাথের তিন ছেলের মধ্যে  ছোট ছেলে  প্রাণকৃষ্ণ কুণ্ডু বাবার কাছে পানতুয়ার গোপন রেসিপি শিখে  শুরু  করেন পানতুয়া তৈরির কাজ। আজ প্রাণকৃষ্ণ এলাকার মানুষের কাছে পরাণ হিসাবে পরিচিত ।


আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত নির্বাচন আগে জেলায় জেলায় গরু বিলি করবে রাজ্য সরকার


প্রাণকৃষ্ণ কুণ্ডুর মৃত্যুর পর তার ভাইপো তপন ও সমরেশ  কুণ্ডু  এখন সেই বাংলাদেশের গোপন রেসিপিযুক্ত ক্ষীরের পানতুয়া জেলা তথা বাংলার মানুষের কাছে হাজির করেছেন। রাজ্যের সরকারি বেসরকারি নানান অনুষ্ঠানে বাঙালির পাতে রসনা তৃপ্তি করে আসছে  কাটোয়ার পরাণের পানতুয়া। রসগোল্লার পর পরাণের পানতুয়াও যাতে   স্বীকৃতি পায় সে বিষয়ে গ্রাহক থেকে মালিক পক্ষ  দাবি তুলছেন।