কমলাক্ষ ভট্টাচার্য:  আর যেন পারা যাচ্ছিল না! কামালগাজির গলির বাজারে গলায় মাক্স ঝুলিয়ে হিমসাগরের গন্ধ শুঁকে সত্তর প্লাস হিরন্ময় বসু বললেন, “আমেও করোনা নাকি? ছেলে যে আম আনত, মুখে দেওয়া যাচ্ছিল না। আজ আড়াই মাস পর বাজারে এলাম। কটা ভাল আম তো নিতেই হবে!”


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সত্যিই, আজ বাজারে বাজারে নাকে মুখে মাক্সের প্রোটেকশন নিয়ে বলগাহীন ঘোড়ার মত ছুটে বেরাচ্ছেন প্রবীণের দল। ভাল মাছ, ভাল আম -লিচুর চলছে সন্ধান। এই ছবি প্রায় সব পাড়ার বাজারেই। হাই সুগারের রোগী সমরেন্দ্র পাল। মাঝে মাঝেই সুগার ফল করে। পকেটে তাই চকোলেট নিয়ে বাজারে। কপাল বেয়ে দরদরিয়ে ঘাম, চোখে মুখে অদ্ভুত প্রশান্তি। বললেন, “আজ ছেলে বৌমার সঙ্গে ঝামেলা বাঁধিয়ে বেরিয়ে পড়েছি। সুগার বলে প্রায় তালাবন্ধ করে দিয়েছিল। আর কাহাঁতক?”
 দূর থেকে গোপনে এই কথোপকথন  শুনছিলেন এক তরুণ আইটি কর্মী। চোখাচোখি হতেই ভরা বাজারে চিৎকার জুড়ে দিলেন সমরেন্দ্রবাবু। 'পাহারা দিতে এসেছিস! আমি মরব না। তোর অফিস খুললে কে বাজার করবে?' মুহুর্তে অদৃশ্য ওই তরুণ।

আরও পড়ুন: দিনে দিতে হবে ৩০ টাকা! লকডাউনে ছেলের নির্দেশ মানতে না পারায় বৃদ্ধ ফেরিওয়ালার ঠাঁই বাড়ির বাইরে
লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় পর্যায়ে বাজারে বাজারে বৃদ্ধ হিরন্ময়, সমরেন্দ্রবাবুরা যেমন আছেন, তেমন আছেন আরও অনেক বৃদ্ধেরা, যাঁদের নাম জানা হয়নি। যাঁদের ছেলে নেই। যাঁদের থেকেও নেই। যাঁদের না ছিল উপায়! এরা প্রায় রোজই বাজার গেছেন, চেষ্টা করেছেন একটা রুমাল দিয়ে হলেও মুখ ঢাকতে। একা একাই লড়ে যাচ্ছেন ভাইরাসের বিরুদ্ধে। নিজেদের মত করে দু’জনের সংসারে।