দিলীপেই আস্থা অমিতের
দিলীপের দাবি অমিত তাঁকে বলেছেন, `২০১৯-এর জন্য টিম তৈরি করুন। যারা কাজ করছে না, তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দিন। তিনি যত বড়ই নেতা হোক না কেন এতে যেন কোনও নড়চড় না হয়।`
অঞ্জন রায়
রাজ্য বিজেপির একাংশে যতই 'দিলীপ হঠাও ষড়যন্ত্র' জারি থাকুক, অমিত শাহ কিন্তু ভরসা রাখছেন সেই দিলীপেই। এমনকি, রাজ্য ছেড়ে যাওয়ার আগে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দিলীপ ঘোষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন স্বয়ং অমিত শাহ। দিলীপের দাবি অমিত তাঁকে বলেছেন, "২০১৯-এর জন্য টিম তৈরি করুন। যারা কাজ করছে না, তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দিন। তিনি যত বড়ই নেতা হোক না কেন এতে যেন কোনও নড়চড় না হয়।" এখানেই শেষ নয়, জনসভায় রাজ্যের শাসক দলকে কড়া আক্রমণে বেঁধার পাশাপাশি 'ভাঁড়ামি' না করে বক্তৃতায় 'রাজনৈতিক কথা' বলার নির্দেশও দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি।
গত কয়েক মাস ধরে এ রাজ্যের যেসব গেরুয়া নেতা দিলীপের বিরুদ্ধে প্রচার করছিলেন, অমিতের এই নির্দেশ সামনে আসার পর তাঁরা আবার দিলীপ ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছেন। পাশাপাশি, সকলের চোখে মুখে এখন একটাই প্রশ্ন- "কে কে বাদ যাবে"?
প্রসঙ্গত, অমিতের সর্বশেষ সফরে এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থেকেছে গেরুয়া ব্রিগেড। ২৭ জুন দু'দিনের রাজ্য সফরে এসে অমিত শাহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। আর তাঁর সফর জুড়ে গাড়িতে একমাত্র স্থান পেয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ সভাপতি হওয়ার পর অমিত শাহ যতবার বাংলায় এসেছেন, কখনও এমন দৃশ্য দেখেনি গেরুয়া জনতা। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচিতে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও অমিত কৌশলে এড়িয়ে গেছেন তাঁদের। বরং বারবার গুরুত্ব পেয়েছেন খড়গপুরের বিধায়ক। ফলে, দিলীপ ঘোষই যে এই মুহূর্তে রাজ্য বিজেপির শেষ কথা তা তিনি বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বেশ কয়েক মাস ধরেই দিলীপকে সভাপতি পদ থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে, বলে প্রচার করেছে দলেরই একাংশ। এমনকি আমিত শাহ রাজ্য ছেড়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সই জাল করে সর্বভারতীয় বিজেপির লেটার হেডে জানানো হয়েছিল, দিলীপ আর সভাপতি নেই। সেই 'লেটার হেড' কৌশলে ছড়িয়েও দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর পর খানিকটা বাধ্য হয়েই সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ করেছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু, এসব প্রচারে যে অমিত শাহ যথেষ্টই রুষ্ট তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দিলীপকে দেওয়া নির্দেশই অমিতের মনোভাবের চূড়ান্ত সাক্ষ্য বহন করছে বলেও মনে করছে বিজেপির একাংশ। ফলে, এখন বলাই যায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি দিলীপময়। আরও পড়ুন- পুরুলিয়ায় অমিত না দিল্লিতে মোদী- কে মিথ্যা বলছেন? প্রশ্ন তৃণমূলের