মৃত্যুঞ্জয় দাস: বিশ্বের সবথেকে ছোট অ্যান্টেনা তৈরি করে সাড়া ফেলে দিলেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল। রাঁচির মেসরার বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল তাঁর সহযোগী মৃন্ময় চক্রবর্তীকে নিয়ে এই অ্যন্টেনা তৈরি করেন ২০১৩ সালে। সেই সময় এই  অ্যান্টেনার জন্য পেটেন্টের জন্য আবেদন জানানো হয়। সম্প্রতি ভারত সরকার এই অ্যান্টেনার পেটেন্ট প্রদান করেছে। বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পালের দাবি, এই অ্যান্টেনা ওয়ারলেস প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দিগন্ত খুলে দেবে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আজ থেকে ২৪ বছর আগে ব্লুটুথের আবিষ্কার হয়েছিল। সেই ব্লুটুথ প্রযুক্তি ওয়ারলেস যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছে। দ্রুত জনপ্রিয় সেই প্রযুক্তির আরও উন্নতির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগারে নিরন্তর গবেষণা শুরু হয়। আর এসবের মাঝেই তৎকালীন পিএইচডি পাঠরত মৃন্ময় চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকান্ত পাল বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণাগারে তৈরি করে ফেলেন এমন এক অ্যান্টেনা যা শুধু আকারে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম তাই নয়, ব্লুটুথের থেকে কমপক্ষে একশো গুণ বেশি গতিসম্পন্ন। 


বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল জানিয়েছেন, নতুন এই অ্যান্টেনার ফ্রিকোয়েন্সি ১.৮ গিগাহার্জ থেকে ১৮ গিগাহার্জ পর্যন্ত। এই অ্যান্টেনা তথ্য আদানপ্রদানের জন্য ১০:১ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে। আকার ছোটো হওয়ায় অনায়াসেই এই অ্যান্টেনা সংযুক্ত করা যাবে মোবাইল ফোন বা যে কোনও স্মার্টযন্ত্রে। ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে দুটি বা তার বেশি এই অ্যান্টেনা যুক্ত যন্ত্র ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই চোখের নিমেষে আদানপ্রদান করতে পারবে বড় আকারের তথ্য সমৃদ্ধ ফাইল ও ফোল্ডার। বোতামের মতো দেখতে এই অ্যান্টেনার উৎপাদন খরচও অত্যন্ত কম হবে বলে জানিয়েছেন ওই গবেষক। অ্যান্টেনাটির পেটেন্ট পাওয়ার পর বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার তরফে বাণিজ্যিকভাবে এবার তা তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল। অ্যান্টেনাটি উৎপাদনের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই এসেছে বলেও জানান তিনি।


ছোটো থেকেই অত্যন্ত মেধাবী হিসাবেই পরিচিত শ্রীকান্ত পাল তাঁর এই আবিষ্কার জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম এই অ্যান্টেনা আবিষ্কারের বহু আগেই আন্তর্জাতিক স্তরে বিজ্ঞানী মহলে পরিচিতি পান শ্রীকান্ত পাল। মার্কিন মুলুকে থাকা বিশ্বের বৃহত্তম টেলিস্কোপ হিসাবে পরিচিত নাসার গ্রিন ব্যান্ড টেলিস্কোপে সঙ্কেত গ্রহণ সংক্রান্ত দীর্ঘকালীন একটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে নজর কাড়েন শ্রীকান্ত পাল। পরবর্তীতে ব্রিটেনের জড্রেল ব্যাংক মানমন্দিরে থাকা টেলিস্কোপের জটিল যান্ত্রিক রোগও সারান তিনি।  


আরও পড়ুন, Jalpaiguri Cash Recover: গাড়ির অতিরিক্ত টায়ারের ভিতর কাঁড়ি কাঁড়ি নোটের বান্ডিল! উদ্ধার বিপুল নগদ


বাঁকুড়া জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, খ্রিস্টান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক, ওয়ারেঙ্গেল আর ই কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক ও কমিউনিকেশনে বি.টেক,  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.টেক, তারপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরেট করেন তিনি। জীবনের গোড়াতে ভারত ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পরে বিভিন্ন সময়ে দিল্লি ও রুরকি আইআইটিতে অধ্যাপনার কাজও করেছেন শ্রীকান্ত পাল।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)