নিজস্ব প্রতিবেদন: ‘‘আপনাদের সবাইকে আমার নমস্কার। ভারতের এগিয়ে যাওয়ার পথে আপনাদের (আমার, কিষাণ ভাইদের) অবদান অমূল্য। আর তাই আমার চাষি ভাইদের এই বিপুল জনসমগম দেখে, আমি খুব আনন্দিত।’’ মেদিনীপুরের কলেজ মোড়ে কৃষক কল্যাণ সমাবেশের শুরুতেই বাংলায় কথা বলে ‘কিষাণ ভাইদের’ মন জয় করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বেলা ১২টা বেজে ৫০ মিনিট। মঞ্চে উঠলেন নমো। ‘মোদী...মোদী’ রবে তখন গমগম করছে এলাকা। কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পর বিজেপি প্রধানমন্ত্রীকে দেশজুড়ে সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগেরই অংশ হিসেবে সোমবার মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে নরেন্দ্র মোদীকে সংবর্ধনা দেয় রাজ্য বিজেপি।


আরও পড়ুন: ফ্লেক্স-যুদ্ধে ছাড়া হবে না ‘সূচ্যগ্র মেদিনী’! জানান দিচ্ছে মেদিনীপুর


সভার শুরুতেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় ‘ম্যাজিক’ দেখান মোদী। হাজারও করতালির ছন্দ কেটে মোদী বলে ওঠেন, "কালকের ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল ম্যাচ দেখলেন কি? কেমন লাগল? আপনাদের ফুটবল প্রেম বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।" উত্তরের জন্য কয়েক মুহূর্তের অপেক্ষা। এরপরই কথার রেশ টেনে মোদী বলেন, ‘এই বিশাল জনসমাবেশ দেখে আমি খুশি। এখানে আসার পথে জনজোয়ার দেখে বিস্মিত হয়েছি। বৃষ্টির মধ্যেও রাস্তায় অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন...এর জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’ 


মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে সোমবার মোদী বলেন, ‘শিক্ষা-সমাজ-সংস্কার সব ক্ষেত্রেই মেদিনীপুরের অবদান অনস্বীকার্য। নতুন ভারতের স্বপ্নপূরণ করতে এগিয়ে এসেছে দেশবাসী। আমার সরকার আপনাদের সরকার, কৃষকদের সরকার।’ এরপরই তিনি যোগ করেন, ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে অনেক দাবি ছিল, অনেক কমিশন হয়েছে, কেউ কখনও কান দেয়নি। এরআগের দিল্লি বা রাজ্য সরকারও কর্ণপাত করেনি। কিন্তু, ক্ষমতায় এসে চটের দাম বাড়িয়েছে বিজেপি। এর ফলে বাংলার কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। বিজেপি কৃষকদের কথা ভেবেই সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আগের সরকার গাছ বলে বাঁশ কাটা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। এখন বাঁশ কেটে বিক্রি করা যাবে। গ্রামের উন্নয়ন না হলে শহর এগোতে পারবে না।’’ 


আরও পড়ুন: অগস্টে তৃণমূলকে 'সংখ্যা'য় চ্যালেঞ্জ ছুড়বেন অমিত শাহ!


এদিনের সভাতে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে মোদী বলেন, ‘‘বিজেপি কৃষকদের জন্য এত কাজ করেছে যে তৃণমূলও স্বাগত জানিয়েছে।’’ তবে যতই কৃষকদের জন্য সবা হোক, রাজ্যের শাসক দলকে বিবিন্ন ইস্যিতে বিঁধতে ছাড়েননি মোদী। সিন্ডিকেটরাজ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মা মাটি মানুষের সরকারের আসল ছবি সিন্ডিকেট। কোথায় ফসল বিক্রি হবে, চাষি কত দামে ফসল বিক্রি করবে, তা ঠিক করবে সিন্ডিকেট। কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য। এ রাজ্যে পার্টি আর সরকারের লক্ষ্য হল সিন্ডিকেটকে সাহায্য করা। ভোট ব্যাঙ্কের জন্যই সিন্ডিকেট ব্যবহার করা হচ্ছে। যে রাজ্যে বন্দেমাতরম গান তৈরি হয়েছিল, সেই পবিত্র মাটিতেই সিন্ডিকেটের দাপাদাপি। ভোট প্রক্রিয়াকেও মান্যতা দেয় না এ রাজ্যের সরকার।’’ এরপরই তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ''বামপন্থীদের সরিয়ে এই বিপদই কি আপনারা চেয়েছিলেন?'' প্রশ্নের উত্তরের ঢঙে তাত্পর্যপূর্ণভাবে তিনি নিজেই বলে দেন, "বামেদের সরাতে অনেক সময় লেগেছে। এবার এই জুলুম থেকে মুক্তি মিলবে শীঘ্রই"।