সাত বছর ধরে শিকলবন্দি, গরম লোহার ছ্যাঁকা; বাংলার শ্রমিকের উপর নারকীয় নির্যাতন গুজরাটে
আজ থেকে ১০ বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা শিব বর্মন ও টুলটুলি বর্মনের সঙ্গে গুজরাটে কাজ করতে যায় কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় দেবশর্মা। বছর দুই-তিন পর শিব বর্মণ ও টুলটুলি বর্মণ গ্রামে ফিরে এলেও সঞ্জয় আর ফেরেনি। গ্রামে ফিরে শিব বর্মনরা জানিয়েছিলেন, ফেরার পথে ট্রেন থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে সঞ্জয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ফের বাংলার শ্রমিকের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল গুজরাটে। প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের এক শ্রমিককে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নারকীয় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে গুজরাটের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয় স্থানীয় এক ব্যক্তি ও মহিলাকে। ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের।
আজ থেকে ১০ বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা শিব বর্মন ও টুলটুলি বর্মনের সঙ্গে গুজরাটে কাজ করতে যায় কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় দেবশর্মা। বছর দুই-তিন পর শিব বর্মণ ও টুলটুলি বর্মণ গ্রামে ফিরে এলেও সঞ্জয় আর ফেরেনি। অভিযোগ, গ্রামে ফিরে শিব বর্মনরা জানিয়েছিলেন, ফেরার পথে ট্রেন থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে সঞ্জয়। এরপর শুক্রবার অনেক রাতে আচমকাই বাড়িতে ফিরে আসে সঞ্জয়। তখনই সামনে আসে গোটা ঘটনা।
সঞ্জয় জানিয়েছে, দীর্ঘ এতগুলো বছর গুজরাটে বন্দিজীবন কাটিয়েছে সে। সেখানে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। বন্দি অবস্থাতেই একটি হোটেলে বাসন মাজার কাজ করত সে। কাজ করতে অস্বীকার করলে, গরম লোহা দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করেছে সঞ্জয়। দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর কোনওমতে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয় সে।
আরও পড়ুন, নার্সিংহোমে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় মৃত্যু রোগীর, পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
সঞ্জয়ের কাছ থেকে এই কথা শোনার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা শিব বর্মন ও টুলটুলি বর্মনকে মারধর শুরু করেন। গাছের সঙ্গে বেঁধে তাঁদের উত্তমমধ্যম দেওয়া হয়। পরে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে এলাকাবাসীর হাত থেকে উদ্ধার করে দম্পতিকে। সঞ্জয়-সহ দু'জনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিত্সাধীন সঞ্জয়। কিন্তু ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে এতদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে গুজরাট পুলিসের ভূমিকা নিয়ে।