ভাই, ভাই-বউকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার! বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি বিধায়কের
বিধায়কের দাবি, দেশে আলোড়ন জাগানো জলপাইগুড়ি শিশু পাচারকাণ্ডের পর্দাফাঁস করেছিলেন তাঁর ভাই সুবোধ ভট্টাচার্য। সেইসময় প্রভাব খাটিয়ে মামলা থেকে পাশ কাটিয়ে যান সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়। তারপর থেকেই সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়রা তাঁর ভাইয়ের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন।
প্রদ্যুত্ দাস: ভাই ও ভাইয়ের বউ-কে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্য়ায়ের। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তার স্বামী বিশিষ্ট সমাজসেবী সুবোধ ভট্টাচার্যের আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন মৃত সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়।
শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা অপর্ণা ভট্টাচার্য ও তার স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিস উদ্ধার করেছে বিষের শিশি এবং চারপাতার সুইসাইড নোট। সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ সহ চারজনকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন করেন দম্পতি। এদিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের ছবি এবং সুইসাইড নোটের কপি সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান বিজেপির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়।
বিধায়কের দাবি, দেশে আলোড়ন জাগানো জলপাইগুড়ি শিশু পাচারকাণ্ডের পর্দাফাঁস করেছিলেন তাঁর ভাই সুবোধ ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী এখন জেলে। কিন্তু ওই অভিযোগপত্রে সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়ের নামও ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু শিখাদেবীর অভিযোগ, সেইসময় প্রভাব খাটিয়ে মামলা থেকে পাশ কাটিয়ে যান সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়। তারপর থেকেই সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়রা তাঁর ভাইয়ের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। ভাই ও ভাইয়ের বউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করে বাড়ির দলিল সহ ব্ল্যাঙ্ক চেকে সইও করিয়ে নেন তৃণমূল নেতারা। যার উল্লেখ সুইসাইড নোটে রয়েছে।
যদিও এই সুইসাইড নোটের সত্যতা যাচাই করা হয়নি। আর পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। অন্যদিকে, সুইসাইড নোটের হাতের লেখা এবং এই ঘটনায় শিখা চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি সুইসাইড নোটের হাতের লেখা অপর্ণা ভট্টাচার্যর নয়। একই সঙ্গে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের একটি এফআইআর সামনে এনে ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, শিখা চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখে পুরসভায় চাকরি দেওয়ার টাকা তুলেছিলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে শিখা চট্টোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সবমিলিয়ে এই ঘটনায় জেলায় যথেষ্ট শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর দাবি, পুলিস এই ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা চালাবে। সেই কারণে আদালতের মাধ্যমে বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং সিবিআই তদন্তের দাবি জানাবেন তাঁরা। ওদিকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কোতোয়ালি থানার পুলিস।
আরও পড়ুন, Shaktigarh Shootout: রাজু ঝায়ের গাড়িতেই ছিলেন আব্দুল লতিফ? ভাইরাল ভিডিয়ো