`স্বাস্থ্য আগে, শাস্ত্র পরে` এই মন্ত্র নিয়েই `নবান্নে`র দিনে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে শুরু ভোগবিলি
কোভিড-বিধি মেনেই করা হয়েছে সব কিছুর আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদন: এই মন্দিরে এসেছিলেন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ! এই মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত আছে রাজা তেজচাঁদের নাম। এই মন্দিরের দেবীমূর্তির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে অনেক মিথ।
মন্দিরটি স্বনামধন্য। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির। করোনা-সংক্রমণে বন্ধ ছিল। তবে মাসদু'য়েক আগে খুলেও গিয়েছে। কিন্তু বন্ধ ছিল ভক্তদের মধ্যে ভোগবিলির অনুষ্ঠান। কোভিড-বিধি মেনেই মন্দির কর্তৃপক্ষ সেটা এতদিন বন্ধ রেখেছিলেন।
তবে, আজ, রবিবার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে 'নবান্ন' উৎসব। কথিত আছে, রাজা তেজচাঁদের আমল থেকেই চলে আসছে এই প্রথা। করোনা-কোপে বন্ধ হয়ে যাক সেই অনুষ্ঠান চান না কেউই। তাই যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেই আজ থেকে এ মন্দিরে শুরু হল ভোগ বিতরণের অনুষ্ঠান।
বর্ধমানের এই সর্বমঙ্গলা মন্দির দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম তীর্থস্থান। এখানে দেবী সর্বমঙ্গলা রূপে পূজিতা হন। তবে, কথিত আছে, যখন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়নি, প্রচারিত হয়নি দেবীমাহাত্ম্য, তখন স্থানীয় জেলেনীরা নাকি মাছ ধরে ফেরার পথে এই মূর্তির উপরেই গুগলি-শামুক ভাঙতেন! মূর্তিটির বিষয়ে তাঁদের মনে তেমন কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তবে এ সংবাদ রাজা তেজচাঁদর কানে যায়। তিনি মূর্তিটি উদ্ধার করেন এবং মন্দির গড়ে সেখানে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকেই সর্বমঙ্গলাদেবীর মাহাত্ম্য প্রচারিত হয়। স্বয়ং রামকৃষ্ণও এ মন্দিরে এসেছেন বলে কথিত।
আজ সেখানে 'নবান্ন' উৎসব। তবে সংক্রমণ এড়াতে রয়েছে পর্যাপ্ত সুরক্ষাবিধি। থাকছে 'স্যানিটাইজার টানেল'। থাকছে স্যানিটাইজার দেওয়ার ব্যবস্থা। মাস্ক ছাড়া নিষেধ করা হয়েছে প্রবেশ। ভক্তেরা যেন যথেষ্ট শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখেন সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গেল, এখন তাদের মূলমন্ত্র: 'স্বাস্থ্য আগে; শাস্ত্র পরে'!
মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ জানান, সর্বমঙ্গলা মন্দিরে নবান্ন উৎসব দিয়ে গোটা রাঢ়বঙ্গে নবান্নের সূচনা হল। কোভিডের জন্য এতদিন ভোগবিলি বন্ধ ছিল। আজই প্রথম সাধারণের জন্য ভোগ বিলি হবে। তবে তা সংখ্যায় অন্য বছরের তুলনায় কম। মাত্রই ৮০০ জন। এবং কোভিড-বিধি মেনেই সব কিছুর আয়োজন করা হয়েছে।
তবে মন্দিরের তরফে জানা গিয়েছে, ভক্তদের মন্দির-চত্বরে বসিয়ে ভোগ খাওয়ানোর যে রীতি এখানে চলে আসছে এখনও তা বন্ধই রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণনগর কলেজের বাঙালি গণিতের অধ্যাপক এখন বিশ্ব সেরা বিজ্ঞানী