সর্বকালীন রেকর্ড! লাফিয়ে লাফিয়ে চড়ছে দাম, লকডাউনে মুরগির মাংসে কালোবাজারি?
`বেশি দামে কেনা পড়ছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে। কিন্তু এরফলে লাভ নয়, লোকসান-ই হচ্ছে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনার জেরে লকডাউন শুরুর দিনগুলোতে পোলট্রি মুরগির মাংসের দাম প্রায় একদম তলানিতে এসে ঠেকেছিল। এত সস্তায় মুরগির মাংস! সবার মুখেই খালি ঘুরছিল একই কথা। কিন্তু লকডাউনের দিন যত বাড়তে লাগল, ততই ছবিটা পাল্টাতে শুরু করল। সর্বকালের রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে পোলট্রির মুরগির মাংস। কিন্তু কেন? কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে কালোবাজারির অভিযোগ।
মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের প্রিয় পোলট্রীর মুরগির মাংসর দাম এখন প্রায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। করোনার জন্য দাম অনেকটা নেমে গেলেও ৩ সপ্তাহের মধ্যে ফের তা নিজের অবস্থানে ফিরে আসে। এরপর আচমকাই দাম ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। আর বর্তমানে সেই দাম সর্বকালের রেকর্ড গড়ে ফেলেছে ৷ কেন বাড়ছে দাম? তার খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গেল খুচরো বিক্রেতারা বলছেন, "বেশি দামে কেনা পড়ছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে। কিন্তু এরফলে লাভ নয়, লোকসান-ই হচ্ছে। বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় মোটের ওপর বিক্রির পরিমাণ কমেছে। তাই আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।" খুব একটা ভুল কিছু বলছেন না তাঁরা। বাজারে গিয়েই ছবিটা আরও পরিষ্কার হয়। দেখা গেল, সকালে দু-একজন খদ্দের থাকলেও, বেলা বাড়লে কার্যত মাছি তাড়াচ্ছেন খুচরো পোলট্রির মুরগির মাংস বিক্রেতারা।
এখন পোলট্রির মুরগি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, বাচ্চা, ওষুধ বিক্রতারা জানাচ্ছেন, করোনার জন্য এইসব জিনিসের দামের তেমন কিছু হেরফের হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তবে দাম বাড়ছে কীসে? মুরগি চাষিরাও বলছেন, দাম বাড়লেও তাঁদের মুনাফা বাড়েনি। পোলট্রি ফার্ম-এর ব্যবসা নিজস্ব ব্যবস্থায় করেন এমন চাষির সংখ্যা ১০ শতাংশ ৷ বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে মুরগির ছানা, খাবার, ওষুধ নিয়ে চুক্তির ভিত্তিতে চাষ করেন এমন কৃষক ৯০ শতাংশ ৷ ফলে চুক্তির ভিত্তিতে চাষিদের আখেরে তেমন কিছু লাভ হয় না। স্ট্যান্ডার্ড প্রোডাকশন কস্ট ধরে রাখতে পারলে, তবে কিলো প্রতি ৬ টাকা লাভ পায় কৃষকরা। এরপর বাজারে বাড়তি দাম হলে প্রতি টাকায় ৫ পয়সা হারে লাভ হয় চাষিদের ৷ ৯৫ পয়সা কোম্পানি পায়।
খুচরো বিক্রেতা বা চাষি, কেউ লাভ করছেন না, অথচ বাজারে পোলট্রির মুরগির মাংসর দাম বেড়েছে। কালোবাজারির অভিযোগ করেছেন অনেক খদ্দের। তাঁদের বক্তব্য, "কালোবাজারি হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া উচিত প্রশাসনের ৷ আমাদের উপায় নেই, তাই কিনতে হচ্ছে।" এই প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন, তাঁরা করোনা ও লকডাউনের পর থেকেই নজর রেখেছেন যাতে কোথাও কালোবাজারিরা সুযোগ না নেন। কিন্ত তারপরেও দাম বাড়ায় এখন প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর উপায় নেই।
আরও পড়ুন, ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাজ্যের সব সরকারি স্কুল, তবে উচ্চমাধ্যমিক নির্দিষ্ট দিনেই