বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট হিন্দু সংহতির নেতার, উত্তাপ ফেসবুকে
ফের আরও একবার ফেসবুক পোস্ট থেকে তৈরি হল নয়া বিতর্ক। এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হিন্দু সংহতির নেতা তপন ঘোষ। ``বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ডে ৭ জন দাঙ্গাবাজের মৃত্যু হয়েছে``, এই পোস্ট লিখেই বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন এই নেতা।
ওয়েব ডেস্ক: ফের আরও একবার ফেসবুক পোস্ট থেকে তৈরি হল নয়া বিতর্ক। এবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হিন্দু সংহতির নেতা তপন ঘোষ। ''বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ডে ৭ জন দাঙ্গাবাজের মৃত্যু হয়েছে'', এই পোস্ট লিখেই বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন এই নেতা।
বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত কোনও রকম মৃত্যুর কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়নি, এটা জেনেও আপনি '৭ জন দাঙ্গাবাজের মৃত্যুর কথা' কীভাবে জানলেন? এই 'অশান্তির পরিবেশে' কীভাবে আপনি জনসমক্ষে এমন পোস্ট করে 'মানুষকে হিংসায় উস্কানি' দিচ্ছেন? এই পোস্ট থেকে তো 'ধর্ম বিভেদ' তৈরি হতে পারে, সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে, একজন সমাজকর্মী হয়ে আপনি কীভাবে এটা করছেন? আপনার দল (বিজেপি) এটা সমর্থন করছে?
হিন্দু সংহতির নেতা তপন ঘোষ জানালেন, "...(ত ত ত করতে করতে) না এটা অফিসিয়াল নয়"।
আবার প্রশ্ন, আপনি তাহলে এমন উস্কানি মূলক পোস্ট কেন করেছেন?
উত্তরে তপন ঘোষ রেগে গিয়ে জানালেন, "আপনারা গার্ডিয়ানগিরি বন্ধ করুণ"। (এরপর অসভ্য আচরণ করে ফোন কেটে দেন)
আবার ফোন... দীর্ঘ রিং হওয়ার পর ফোন ধরলেন... ফের প্রশ্ন, 'হিংসায় উস্কানি'-মূলক যে ধরণের পোস্ট আপনি ফেসবুকে করছেন তা আপনার দল সমর্থন করে?
ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে চিৎকার করে হিন্দু সংহতির নেতা তপন ঘোষ জানান, "বেশ করেছি। কী করবেন?" (এরপর আবার ফোন কেটে দেন তিনি)
উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট-বাদুড়িয়া কাণ্ডের ঘটনায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি। দেশ তো বটেই বিদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও বাদুড়িয়া কাণ্ড আলোড়ণ তৈরি করেছে। গত শনিবার ১৭ বছরের এক কিশোরের একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়েই বিতর্কের শুরু। এরপর পরিস্থিতি আসতে আসতে অগ্নিগর্ভ আকার নেয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিস ভ্যান। ভাঙচুর চলে স্থানীয় দোকানগুলোতে। বিবাদে জড়িয়ে পড়ে দুই গোষ্ঠী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। এমনকি ১৪৪ ধারাও জারি করে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু হতেই শান্ত হতে শুরু করে গোটা এলাকা। ফেসবুকের পোস্ট থেকে যেভাবে রাজ্য জুড়ে হিংসার বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে, তাতে সতর্কীকরণ করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এও বলেন, "ভুল ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেসবুক"। রাজ্যে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৬০ হাজার বুথে শান্তিরক্ষা বাহিনী গড়ার কথাও জানান তিনি। এমন অবস্থায় শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেয় রাজ্য এবং কলকাতা পুলিস। যাতে ইন্টারনেট থেকে কোনও রকম হিংসা না ছড়িয়ে পড়ে, সেই জন্য বসিরহাটে ইন্টারনেট কানেকশনই বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কলকাতায় বসে হিন্দু সংহতি'র এই নেতার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে নতুন করে দানা বাঁধছে বিতর্ক। কোনও মৃত্যুর খবর এখনও সরকারিভাবে নেই। সেখানে '৭ জন দাঙ্গাবাজের' মৃত্যুর খবর কীভাবে ব্যক্ত করছেন এই নেতা, এটা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
এই প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ২৪ ঘণ্টা ডট কমকে জানালেন, "সব পাগলের প্রলাপ। সব সাজানো ঘটনা। বাচ্চা ছেলেটাকে (এস সরকার) দিয়ে বিজেপি এটা করালো। কেউ মারা যায়নি। একটা লোক ভেন্টিলেশনে রয়েছে। কার্ত্তিক ঘোষ। ও তৃণমূল পরিবারের ছেলে। ওর অবস্থা আশঙ্কাজনক"।