সঞ্জয় রাজবংশী: করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন তিনিও। কিন্তু দুর্ঘটনায় নিজে আহত হওয়ার পরও চালিয়ে যাচ্ছিলেন উদ্ধারকাজ। সকলেই বাঁচার জন্য আর্তনাদ করছেন। একটু সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন আহত যাত্রীরা। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিজের চোট আঘাতকে ভুলে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধারও করেন তিনি। কিন্তু কয়েকজনকে উদ্ধার করে বাঁচাতে পারলেও, সেইসময় এক হাড়হিম করা বীভত্স অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। উদ্ধারকাজে তিনি যখন ব্যস্ত, সেইসময় এক ব্যক্তির পা ধরে টেনে বের করার সময় কোমর থেকে খুলে যায় তাঁর পা! কালনা মহকুমা হাসপাতালের বেডে শুয়ে এমনই ভয়াবহ নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেস ফেরত এক যাত্রী জিয়াদুল মণ্ডল। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডলের এক কামরায় ২৩ নাম্বার আসনে ছিলেন কালনার কপুরডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা জিয়াদুল মন্ডল। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরই তাঁর কামরা ৩০ ফুট দূরে ছিটকে গিয়ে পড়ে। ওই কামরাতে ২৩ জনের মৃত্যু হয়। তিনি কোনওরকমে ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি আরও অভিযোগ করেন, স্থানীয়রা বলেছিলেন সরকারি বাসে কোনও ভাড়া লাগবে না। কিন্তু আসার পথে আহতদের কাছ থেকে মাঝ রাস্তায় ৪০০ টাকার দাবি করেন বাস কর্মীরা। না দিলে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয় তাঁদের। বাধ্য হয়ে টাকা দেন আহতরা।


প্রসঙ্গত, সরকারি সাহায্য না মেলায় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করে অথবা গয়না বন্ধক রেখে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দেহ আনার ঘটনাও সামনে এসেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় চেন্নাইগামী আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ১২৮৪১ চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস হাওড়ার শালিমার থেকে দুপুর বেলা ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রথমে একটি মালগাড়িকে ধাক্কা মারে। মালগাড়ির সঙ্গে ট্রেনটির সংঘর্ষ এতটাই জোরালো ছিল যে করমণ্ডলের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর চেপে যায়। ৩টি বগি বাদে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সব কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। লাইনচ্যুত করমণ্ডলের কামরার সঙ্গে ধাক্কা লেগে আবার ডাউন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসেরও বেশ কয়েকটি কামরা বেলাইন হয়ে যায়।


ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ২৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে আজ জানিয়েছেন ওড়িশা মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা। তিনি বলেন, কিছু দেহ দুবার গোনা হয়েছিল। যারফলে প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি দাঁড়িয়েছিল। তারপর জেলাশাসক তথ্য যাচাই করেন। তাতেই সেই ভুল নজরে আসে। প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৫ জন। আহত ১১৭৫ জন। তবে সব দেহ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ওদিকে নবান্নের তরফে দেওয়া পৃথক রিপোর্টে দুর্ঘটনায় রাজ্যের ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫৪৪ জন।


আরও পড়ুন, মেলেনি সরকারি সাহায্য, ধারে-গয়না বন্ধক রেখে ১৫ থেকে ২০ হাজারে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দেহ আনল পরিবার!



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)