Cow Smuggling: মেয়ে সুকন্যার নামে ১ কোটির এফডি! শান্তিনিকেতনে অনুব্রতর বিপুল সম্পত্তির হদিস
গতকাল ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ সিবিআই আদালত। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এদিন অনুব্রতর আইনজীবী দাবি করেন, গোরু যে বাংলাদেশে পাচার করা হতো তার কোনও তথ্য সিবিআইয়ের কাছে নেই
বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়: গোরুপাচার কাণ্ডের তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলের একাধিক সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে ওইসব সম্পত্তির অধিকাংশই তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল ও ঘনিষ্ঠদের নামে। সেই তালিকায় রয়েছে তার প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুত্ গাইন-সহ একাধিক আত্মীয়ের নামে। কিন্তু মেয়ের নামে কী রেখেছেন অনুব্রত? সূত্রের খবর, মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে ১ কোটি টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট করা রয়েছে বোলপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায়। এছাড়াও বোলপুরে গোরুপাচার কাণ্ডের পান্ডা এনামুল হকের জমির পাশেই রয়েছে অনুব্রতর একটি জমি। ওই জমির দাম কমপক্ষে দেড় কোটি টাকা। ওই এফডি নিয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। তবে সিবিআই সূত্রে এটাও খবর, এর আগে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি সহযোগিতা করছেন না। একথা সিবিআই আদালতেও জানিয়েছে।
আরও পড়ুন-সুরাপ্রেমীদের জন্য খারাপ খবর, পুজোর আগেই বাড়ছে মদের দাম
উল্লেখ্য, গোরুপাচারকাণ্ডে জড়িয়ে বর্তমানে আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ওই একই জেলে রয়েছে তার প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। প্রভাবশালী এই যুক্তিতে বারবারই খারিজ হয়ে যাচ্ছে অনুব্রতর জামিনের আবেদন। গতকাল ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ সিবিআই আদালত। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এদিন অনুব্রতর আইনজীবী দাবি করেন, গোরু যে বাংলাদেশে পাচার করা হতো তার কোনও তথ্য সিবিআইয়ের কাছে নেই। এনামুলও যে গোরু পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তারও কোনও প্রমাণ নেই। পাল্টা সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, এনামুল যে গোরু পাচারের সঙ্গে জড়িত তার তথ্য আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যে এনামুলের যোগ রয়েছে তার প্রমাণও দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় অনুব্রতর লোকজন এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে তারা কাস্টমসের লোকজনকে হুমকি দিত। এদিকে, অনুব্রতর আইনজীবী ফারুক রাজ্জাক বলেন, সায়গল হোসেন যে টাকা তুলত তাতে অনুব্রত কীভাবে দোষী! সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, গোরুর হাট থেকে গোরু চলে যেত বাংলাদেশে। তার পুরো তথ্য দেওয়া হয়েছে সিডিতে। সবকিচুই হতো অনুব্রতর অঙ্গুলীহেলনে। অনুব্রতর হিসেবরক্ষকের কাছেও বহু সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে।
অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের সম্পত্তির খোঁজ নিতে গিয়ে বোলপুর পুরসভায় কর্মরত বিদ্যুত্ গায়েন নামে এক গাড়ি চালকের বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। দেখা গিয়েছে মাত্র ২ বছরে বিদ্যুত্ কিনেছেন ৫৬০ কাঠা জমি, যার আনুমানিক মূল্য ৩৩ কোটি টাকার উর্দ্ধে। কে এই বিদ্যুৎ গাইন? বিদ্যুৎ গাইন অনুব্রত মন্ডলের ছায়াসঙ্গী ও সব থেকে ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি। তিনি বোলপুর পুরসভায় গাড়ি খালাসি হিসাবে কর্মরত ছিলেন পরে অবশ্য প্রমোশন পেয়ে ড্রাইভার হয়েছেন।
বোলপুর এলাকায় বিদ্যুতের মোট জমি ৭২ টি। যা প্রায় ৫৬০ কাঠা, কাঠা প্রতি এই জমির মূল্য যদি ৬ লক্ষ টাকাও ধরা হয় তাহলে এই সম্পত্তির পরিমাণ ৩৩ কোটি টাকার উপরে। বোলপুরের কালিকাপুর মৌজাতেই ৫৭ টি জমি রয়েছে বিদ্যুতের। এই মৌজা এলাকাতেই বাড়ি বিদ্যুৎ গাইনের, পাশাপাশি অনুব্রত মন্ডলের বাড়িও এই মৌজাতেই। এছাড়াও, বোলপুর মৌজায় রয়েছে ২ টি জমি, সুরুল মৌজায় ২ টি জমি, বল্লভপুর মৌজায় ৭ টি জমি, কংকালীতোলা মৌজায় ৪ টি জমি রয়েছে বিদ্যুতের।