নিজস্ব প্রতিবেদন : নিমতায় যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিসের গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ ব্যারাকপুরের পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। স্পষ্ট জানালেন, নিহত দেবাঞ্জনের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন এফআইআর নেওয়া হয়নি? তা তদন্ত করে দেখা হবে। এখনও কেন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসেনি? তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। দেবাঞ্জন দাসের মৃত্যুর তদন্তে সবদিক খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। এদিন নিমতা থানায় আসেন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। দেবাঞ্জনের গাড়িটি তিনি নিজে ঘুরে দেখেন।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


প্রসঙ্গত, নবমীর দিন রাতে বান্ধবীকে বাড়িতে নামিয়ে ফেরার পথে মৃত্যু হয় নিমতার দাগা কলোনির বাসিন্দা দেবাঞ্জন দাসের। পুলিসের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দেবাঞ্জনের বাবা। বিরাটি ব্রিজে গাড়ির ভিতর উদ্ধার দেবাঞ্জন দাসের রক্তাক্ত দেহ। তবে পুলিস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা বললেও ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ির চেহারা দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের। এরপর দশমীর সকালে অভিযোগ জানাতে নিমতা থানায় যান দেবাঞ্জনের বাবা। তখনই তাঁর নজরে আসে যে, গাড়ির ব্রেক প্যাডেলের কাছে পড়ে রয়েছে বুলেটের টুকরো। ড্যাসবোর্ডের নীচে পাওয়া যায় গুলির খোল। এরপরই এই ঘটনায় বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনেন নিহত দেবাঞ্জনের বাবা।


কিন্তু নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দশমীর সকালে তাঁরা যখন নিমতা থানায় অভিযোগ জানাতে যান, তখন তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাঁদের কথা শোনা হয়নি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর নেয়নি পুলিস। এদিকে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবাঞ্জনের ঘাড়ে ও হাতে ক্ষতচিহ্ন থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি পুলিসের গাড়ি দুর্ঘটনার তত্ত্ব খারিজ করে দেবাঞ্জনের বাবা আরও অভিযোগ করেন, গাড়িটি যদি দুর্ঘটনার কবলে পড়ত, তাহলে চালকের সিটের এয়ারব্যাগ খুলে যেত। কিন্তু গাড়িতে থাকা এয়ারব্যাগ খোলেনি। দুর্ঘটনা হয়ে থাকলে এয়ারব্যাগ খুলল না কেন? সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এমনকি ঘটনার পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও গাড়িটির এখনও কোনও ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়নি কেন? গাড়িটি কেন এখনও খোলা অবস্থায় এমনি থানায় পড়ে রয়েছে? ওঠে সেই প্রশ্নও।


আরও পড়ুন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিস্ফোরক ঢোকাত 'মোস্ট ওয়ান্টেড' জঙ্গি তালিকায় শীর্ষে থাকা আজহার!


বুধবার রাতে জি ২৪ ঘণ্টায় এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিস। সূত্রের খবর, গতরাতেই মৃতের বাবার সঙ্গে কথা বলেন নিমতা থানার আইসি। এরপর আজ নিমতা থানায় ছুটে আসেন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মাও। নিমতা থানার অফিসারদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সারেন তিনি। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কথা হয় সেই বৈঠকে। একইসাথে মনোজ ভার্মা নিজে গাড়িটি ঘুরে দেখেন। শেষমেশ ৮ দিন পর আজ প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা হয় গাড়িটি। তবে পুলিশের তরফে অবহেলার নমুনা গাড়ির চারদিকে সুস্পষ্ট।



আরও পড়ুন, আড়াই মাসের সম্পর্কেই কি বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে 'খুন' নিমতার যুবক? মৃত্যু ঘিরে একাধিক প্রশ্ন


গাড়ির সামনে রাস্তায় ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে। সেই সিমেন্ট গোলা জল এসে লেগেছে গাড়ির গায়ে। গাড়ির চারদিকে সিমেন্টের সাদা ছাপ পড়ে রয়েছে। এমনকি, গাড়ির সামনের বাম দিকের চাকার নীচেও সিমেন্ট জমাট বেঁধে রয়েছে। উল্লেখ্য বামদিকের চাকার টায়ারটি-ই ফুটো। ফলে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পেরিয়ে যাওয়ায় গাড়িতে থাকা হাতের ছাপ সহ অন্যান্য প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।