Malbazar: বিলুপ্তপ্রায় কাউন চাষ করে তাক লাগালেন মালবাজারের ধুপঝোরার কৃষকেরা...
Malbazar: গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এবং সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ফসল কাউন বিলুপ্তির পথে! অনেকেই কাউন চেনেন, আবার অনেকেই নামই শোনেননি হয়তো! এক সময় বাংলার মানুষজন ক্ষুধা মেটাতে এই কাউন চালের ভাত খেয়েই দিব্যি দিন কাটাতেন।
অরূপ বসাক: গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এবং সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ফসল কাউন বিলুপ্তির পথে! অনেকেই কাউন চেনেন, আবার অনেকেই নামই শোনেননি হয়তো! এক সময় বাংলার মানুষজন ক্ষুধা মেটাতে এই কাউন চালের ভাত খেয়েই দিব্যি দিন কাটাতেন। পুরাকালে হরেক রকমের পিঠে, ক্ষীর, পায়েস-সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি হত কাউন থেকে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই ফসলটি যেন কালের গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। তবে উত্তরের মালবাজার মহকুমায় দেখা মিলল হারিয়ে যেতে বসা এই চালের।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'পশ্চিমবঙ্গে সংগঠন শুয়ে পড়েছে, কর্মীরা বেরোননি।' দল নিয়ে ফের বিস্ফোরক দিলীপ...
অনেকেই হয়তো ভাবছেন এই কাউন চালটা আবার কেমন?
কাউন চাল দেখতে অনেকটা পোস্তর দানার মতো। পুষ্টিগুণ বেজায় ভাল। রক্তে মিশে থাকা খারাপ কোলেস্টোলের মাত্রা কমায়, কাউনে থাকা পটাশিয়াম শরীরে লবণের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-সি। তবে, একথা ঠিক, আগেকার দিনের মানুষ এর এত গুণাগুণ বুঝেই যে কাউন খেতেন, তা নয়। তবে তা সহজলভ্য ছিল। সহজলভ্য হওয়ায় শুধুমাত্র পেট ভরাতেই কাউনের চাল খেতেন তাঁরা।
৮০-র দশকের পর উন্নত কৃষিপ্রযুক্তির কল্যাণে পর্যাপ্ত ধান উৎপাদন হতে থাকলে ক্রমশ কমতে-কমতে এখন প্রায় হারিয়েই গিয়েছে এক সময় গরিব অসহায় মানুষের ক্ষুধা নিবারণকারী বহু পুষ্টিগুণে ভরা এই কাউনে চালের চাষাবাদ।
নিজে কোনও দিন এর স্বাদ না পেলেও মালবাজার মহকুমার দক্ষিণ ধুপঝোড়ার কৃষক তথা গরুমারা ফার্মার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান লিটন বাবুর দেওয়া উৎসাহে এবার প্রথম কাউন চালের চাষ করলেন এলাকার চাষিরা। জানা গিয়েছে, এই অঞ্চলে তাণর উদ্যোগেই প্রথম চাষ হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই চালের। কাউন নামের ফসলটি যাতে বিলুপ্ত হয়ে না যায় সেটাই তাঁর চেষ্টা। সেটিকে বাঁচিয়ে রাখতেই তাঁর এই উৎসাহ। প্রায় ৩০০ জন কৃষক যৌথভাবে এই চাষ করছেন। এই কাউন চাষে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেও ভালো ফলন সম্ভব। কাউনের খেতে ভোর হতেই উড়ে আসে হাজার হাজার পাখি। এছাড়াও খদ্দেরের কাছে দাম ভালো মেলায় বেশ খুশি কাউন চাষের সঙ্গে যুক্ত চাষিরাও। প্রায় ২০০ টাকা কেজি দর উঠছে বাজারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ থেকে প্রায় ৮০-র দশক এই সময়পর্বে চাহিদার তুলনায় ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় চালের আকাল-সহ দাম ছিল গরিব, অসহায়দের নাগালের বাইরে। সেই সময় এই কাউন চালের ভাত খেয়েই দিন গুজরান করেছে সমাজের একটি বড় অংশ। যদিও কাউন চালের পুষ্টিগত গুণের পাশপাশি শারীরিক রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতার এই তথ্য জানার পর আজ একদা গরিবের খিদে মেটানো সস্তা কাউনের চাল উচ্চবিত্তদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী।