নোনা জলে ডুবেছে জমি, সুন্দরবন এলাকায় ভরসা জোগাচ্ছে ধানের গোসাবা প্রজাতি
আগে লবণাক্ত জমিতে জারাভা,লুনা সম্পদ,লুনা শ্রী,দুধেস্বর প্রজাতির ধান চাষ হত। এখনও অনেকে চাষ করেন। তবে গোসাবা(Gosaba) প্রজাতির ধানের ফলন অনেক বেশি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: গত বছর আমপানের পর এবার ইয়াস(Yaas)। ফি বছর যেন নিয়ম করে ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলোকে। সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি নষ্ট করে দিচ্ছে। অথচ সুন্দরবন এলাকার মূল জীবিকা কৃষি এবং অবশ্যই ধান চাষ। এবার ইয়াসের প্রভাবে বহু জমিতে লবন জল ঢুকে প্লাবিত হওয়ায় নষ্ট হয়েছে জমি। নোনা জল জমে থাকায় বর্ষার ধান চাষ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে চাষীরা। এই রকম পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকারের কৃষি দপ্তর।
আরও পড়ুন-সেনা আবাসনে পড়ুয়াদের থাকার বন্দোবস্ত! শিলিগুড়িতে চাকরি প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ২
গত ৩-৪ বছর ধরে এই সমস্যা দূর করার চেষ্টায় গবেষণা চলাচ্ছে চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্র। সাধারণ প্রজাতির ধান নোনা জলে চাষ হবে না। তাই নোনা জলের জন্য উন্নত প্রজাতির ধান আবিষ্কার করা হয়। যে প্রজাতির নাম দেওয়া হয় গোসাবা -৫, গোসাবা- ৬। সুন্দরবনের গোসাবা উপগবেষণা কেন্দ্রে যার পরীক্ষা মূলকভাবে চাষ হয়েছে।
চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা পার্থ রায় চৌধুরী বলেন, প্রত্যেক বছর মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হই আমরা। সুন্দরবন(Sundarban) এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় যেখানে মূল চাষ হল ধান। সেই কারনে লবণাক্ত জমিতে চাষের গবেষণায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অতি লবণাক্ত জমিতে ভালো ফলন দেয় এরকম ধান গবেষণা করে বের করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছিল চুঁচুড়া নোনা-১ চুঁচুড়া নোনা-২। পরবর্তী কালে গোসাবা উপকেন্দ্র থেকে এই ধান গোসাবা -৫ গোসাবা-৬ নামে পরিচিত হয়। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ছাড়পত্রও পায় এই ২ প্রজাতি।
আরও পড়ুন-অবসরের পর কর্মজীবন নিয়ে খুল্লমখুল্লা স্মৃতিকথা লিখবেন? নিতে হবে মোদী সরকারের অনুমতি
উল্লেখ্য, আগে লবণাক্ত জমিতে জারাভা,লুনা সম্পদ,লুনা শ্রী,দুধেস্বর প্রজাতির ধান চাষ হত। এখনও অনেকে চাষ করেন। তবে গোসাবা(Gosaba) প্রজাতির ধানের ফলন অনেক বেশি। প্রতি হেক্টরে পাঁচ টন মত উৎপাদন হয়। তবে গোসাবা প্রজাতির ধান চাষ করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হবে বলে জানালেন পার্থবাবু । প্রথম কাজ হবে লবন জল জমি থেকে বের করা,দ্বিতীয়ত জৈব সার প্রয়োগ করা,মাটি পরীক্ষা করা এবং বেশি বয়সের চারা রোপন করা। সরকারি কৃষি খামারে গোসাবা-র বীজ তৈরী হচ্ছে। তবে তার পরিমাণ যথেষ্ট নয়। কিছু প্রগ্রেসিভ ফার্মারকে দিয়েও বীজ করানো হচ্ছে। চলতি বছরে না হলেও আগামী বার বোরো মরসুমে কৃষকদের মধ্যে যা বিলি করা যাবে বলে মনে করছে কৃষি দপ্তর।