নিজস্ব প্রতিবেদন : পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৬-৬ জন আল-কায়দা জঙ্গি ধরা পড়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের পুলিস প্রশাসনকে কার্যত তুলোধনা করলেন ধনখড়। মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও জলঙ্গি থেকে NIA মোট ৬ জন আল-কায়দা জঙ্গি ধরতেই রাজ্যপাল কড়া ভাষায় টুইট করেন, "পশ্চিমবঙ্গ এখন বোমা তৈরির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে তা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার এই চূড়ান্ত অবনতি, পতনের দায় এড়াতে পারে না রাজ্য প্রশাসন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে।"


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মুর্শিদাবাদ থেকে ৬ জন আল-কায়দা জঙ্গি ধরা পড়ার ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, "এটা অত‍্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয় যে আল-কায়দা জঙ্গি ধরা পড়ল মুর্শিদাবাদ থেকে। এর আগেও জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের নাম এসেছে। কিন্তু আল-কায়দার মত ভয়াবহ সংগঠনের সঙ্গে বাংলার যোগসূত্র আমার কাছে অত‍্যন্ত দুশ্চিন্তার কারণ। রাজনৈতিক কারণে এর-ওর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে আমি চাইছি না। আল-কায়দা আসলে এই গরীব-নিরীহ মানুষদের টার্গেট করে। ভারতে বর্তমানে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কারণে একটা বার্তা যাচ্ছে। আর মৌলবাদী সংগঠনগুলো এটাই কাজে লাগাচ্ছে। পাশাপাশি রাজ‍্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও বুঝতে হবে। পুলিস কি আদৌ দক্ষ? খাগড়াগড়ের ঘটনা না হলে তো আমরা জানতেই পারতাম না যে রাজ‍্যের ইন্টেলিজেন্স কতটা দুর্বল। বর্ডার জেলাগুলি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। পুলিসের এখন একটাই কাজ, তৃণমূলের পক্ষে বাঁচাও। পুলিসের দক্ষতার ক্ষয় হচ্ছে। সময় এসেছে সবাই মিলে ভাবনাচিন্তা করার। মনে রাখবেন, দলের আগে দেশ। ন‌ইলে আগামী দিনে বিপদ আর‌ও বাড়বে।"


রাজ্য সরকারকে দুষে একই সুর দিলীপ ঘোষের গলাতেও। তিনি বলেন, "পুলিস বিদেশ থেকে আসা জঙ্গি, দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না। অথচ বিজেপি কর্মীদের ধরে মামলা ঠুকে দিচ্ছে। বিজেপি করার অপরাধে সাধারণ মানুষদের নির্যাতন করছে।" বিজেপি রাজ্য সভাপতি তোপ দাগেন, "জঙ্গলমহলে মাওবাদী গতিবিধি যেমন তৃণমূল বাড়িয়ে তুলছে, তেমনই সারা রাজ্যে ইসলামিক টেররিস্টদের গতিবিধিও বাড়িয়ে তুলছে। আর এই দুই দলকে কাজে লাগিয়েই বিজেপি কার্যকর্তাদের খুন করা হচ্ছে।" তাঁর কথায়, "পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি প্রশিক্ষণের কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ওদেশে জামাতের মাধ্যমে নাশকতা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। পুরুলিয়া মাদ্রাসা থেকে পিংলা বিস্ফোরণ, কালিয়াচক, ধূলাগড়, খাগড়াগড়, এমনকি অতি সম্প্রতি নৈহাটির বিস্ফোরণ, সবের সাথেই জঙ্গি যোগ রয়েছে। কিন্তু কোনওটারই তথ্য সামনে আসেনি, সব চেপে দেওয়া হয়েছে।" এই মুহূর্তে গোটা দেশে বাংলা ও কেরলেই 'অ্যান্টি-নাশন্যাল অ্যাক্টিভিটিস' সবচেয়ে বেশি চলছে বলে কড়া প্রতিক্রিয়ায় দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল থেকে এদিন মোট ৯ জন আল-কায়দা জঙ্গি NIA-এর জালে ধরা পড়েছে।


যদিও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করে তৃণমূল সাংসদ ড. শান্ত্বনু সেন দাবি করেছেন, জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের দমন করে শান্তিপ্রতিষ্ঠা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উন্নয়ন করেছে তৃণমূল সরকার। যাঁরা বিপথে চলে গিয়েছিল, তাঁদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনেছে। এখানেও সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। সরকার জানে কী করতে হবে। যথা সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও পড়ুন, ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে লোন উল্ফ নিয়োগ করে রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, থিয়েটার, বাজারে হামলার ছক আল-কায়দার!