নিজস্ব প্রতিবেদন : তারস্বরে বাজছে ডিজে বক্স। আর সেই বক্স বাজিয়ে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক বৃদ্ধকে। এই ছবি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বীরভূমের সিউড়িতে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কেউ মারা যাওয়ার পর তাকে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার সময় খোল করতাল বাজানোর রীতি প্রাচীন কালের। সেই রীতি মানা হয়ে থাকে বর্তমান কালেও। কিন্তু এবার সেই রীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ডিজে বক্স বাজিয়ে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা সামনে এল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত আনন্দপুর ডাঙ্গালপাড়ায়। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শঙ্কর চরণ মাল। ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন ৯২ বছর বয়সী শঙ্কর চরণ। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে যখন দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন শববাহী গাড়ির সামনে খোল করতালের বদলে ছিল ডিজে বক্স! এমনকি ডিজে বক্সে তারস্বরে বাজতে থাকা গানের সঙ্গে রীতিমতো নাচতে নাচতে যেতে দেখা যায় ওই শববাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা শ্মশানযাত্রীদেরও। এই ছবি সামনে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।



পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ সরকারি কর্মী ছিলেন। একইসঙ্গে অন্যান্য বিভিন্ন কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বৃদ্ধের ১০ মেয়ে। তাঁরা প্রত্যেকেই বিয়ের পর ওই এলাকাযতেই বাড়ি তৈরি করে বসবাস করেন। কিছুদিন আগেই অশীতিপর বৃদ্ধকে অসুস্থ অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার তেমন কোনও পরিবর্তন না ঘটায়, চিকিৎসকরা রোগীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এরপরই বুধবার রাতে মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। কিন্তু এভাবে কেন ডিজে বক্স বাজিয়ে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হল? জবাবে বৃদ্ধের জামাই ও মেয়ে যা বললেন...



ওই বৃদ্ধের এক জামাই জানিয়েছেন, "ওনার ১০ মেয়ের সব সন্তান মিলে ২৪ জন নাতি রয়েছে। তাই ওই নাতিদের একটা আনন্দ তো আছে! গতকাল রাতে আমার শ্বশুরের মৃত্যুর পর ওরাই সিদ্ধান্ত নেয় বক্স বাজিয়ে অন্তিম ক্রিয়া সম্পূর্ণ করার। তারপরই তারা তিনটি গাড়ি ভাড়া করে ও ডিজে বক্স বাজিয়ে বক্রেশ্বর যায় শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করতে।" জামাইয়ের বক্তব্যকে সম্মতি জানিয়ে শঙ্করী চরণ মালের এক মেয়ের বক্তব্য, "বাবার অনেক বয়স হয়েছিল। আর তারপর এমন হওয়ায় সব নাতিরা আনন্দ করার জন্য বক্স বাজিয়ে অন্তিম ক্রিয়া করতে গিয়েছে।"


আরও পড়ুন, বাড়ি ফিরতেই বেঁচে উঠল হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া 'মৃত'! খেল জলও


প্রিয়জনের মৃত্যু তো শোকের, দুঃখের। সেখানে মৃত্যুতে আনন্দ? বক্স বাজিয়ে শ্মশানযাত্রীদের আনন্দ উৎসব? এই ঘটনায় ভুরু কুঁচকে গিয়েছে সবারই।